ঢাকা, রবিবার, ১৩ শ্রাবণ ১৪৩১, ২৮ জুলাই ২০২৪, ২১ মহররম ১৪৪৬

শিক্ষা

বিজয় একাত্তর হল

‘অযৌক্তিক’ ফি প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০১৫
‘অযৌক্তিক’ ফি প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের(ঢাবি) বিজয় একাত্তর হলে ‘অযৌক্তিক’ ফি আরোপের প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন শিক্ষার্থীরা। তারা এ ফি প্রত্যাহারের দাবিতে হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এ জে এম শফিউল আলম ভূঁইয়ার কক্ষের সামনে জড়ো হচ্ছেন।



সোমবার (১৬ নভেম্বর) রাত আটটার দিকে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, হলের বার্ষিক ফি ৩ হাজার ৬০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা অযৌক্তিক। এছাড়া হলে অতিথি রাখার জন্য একশ’ টাকা ফি আরোপ করা হয়েছে, যে ফি ঢাবির অন্য হলসহ অন্য কোথাও নেই।  

গত ০৯ নভেম্বর ৩ হাজার ৬০০ টাকা ফি নির্ধারণ করে হলে নোটিশ টাঙানোর পর থেকেই এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ফেসবুকে লেখালেখিসহ নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে আসছিলেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা। এর প্রেক্ষিতে সোমবার সন্ধ্যা থেকেই হলের প্রাধ্যক্ষের কক্ষের সামনে জড়ো হতে শুরু করেন শত শত শিক্ষার্থী। রাত আটটায় তারা বিক্ষোভ মিছিল-সমাবেশ করবেন বলে জানিয়েছেন।

তবে ফি নির্ধারণের ব্যাপারে হল প্রভোস্ট বাংলানিউজকে বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর কোনো ফি আরোপ করা হয়নি। তারা হলে ওঠার সময় এ হারে ফি দিয়েই উঠেছেন। তাছাড়া প্রতিটি শিক্ষার্থীকেই সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে। তখন তারা হলের নিয়মীত ফি পরিশোধের অঙ্গীকার করেই হলে সিট বরাদ্দ পেয়েছেন।

ফি প্রত্যাহারের দাবির ব্যাপারে তিনি বলেন, হলের কোনো শিক্ষার্থী এ পর্যন্ত আমার সঙ্গে এ ব্যাপারে যোগাযোগ করেননি। তাই এ ব্যাপারে কিছু বলতে পারছি না।

এর আগে দুপুরে মধুর ক্যান্টিনে বিজয় একাত্তর হলের ‘অযৌক্তিক’ ফি প্রত্যাহারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে প্রগতিশীল ছাত্রজোট। সংবাদ সম্মেলনে বিজয় একাত্তর হলের বার্ষিক ফি ৩ হাজার ৬০০ টাকা ফি আগামী সাতদিনের মধ্যে প্রত্যাহারের দাবি জানায় সাতটি ছাত্র সংগঠনের জোটটি।

এ দাবিতে মঙ্গলবার (১৭ নভেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হয়।
 
সংবাদ সম্মেলনে হলটির শিক্ষকদের সঙ্গে ছাত্রদের সম্পর্ক প্রভু-দাসের মতো বলে মন্তব্য করেন ছাত্র ইউনিয়নের ঢাবি সংসদের সভাপতি লিটন নন্দী।

তিনি বলেন, মধ্যরাতে শিক্ষার্থীদের ঘুম ভাঙিয়ে তার আইডি কার্ড দেখতে চান শিক্ষকরা। তাকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘তুমি কোন হলের শিক্ষার্থী’। কথায় কথায় শিক্ষার্থীদের ওপর ফি আরোপ করা হচ্ছে।

লিটন নন্দী বলেন, বিজয় একাত্তর হলের আবাসিক শিক্ষকদের বেশির ভাগই নবীন। তারা কোনোদিন কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। তাই তারা জানেন না যে, ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক কেমন হওয়া উচিত।

ওই হলে অতিথি রাখার জন্য একশ’ টাকা ফি আরোপ বিশ্ববিদ্যালয়কে হেয় প্রতিপন্ন করার শামিল বলে মন্তব্য করে লিটন বলেন, ভর্তি পরীক্ষার আগে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়েরই হলেই পরীক্ষার্থীদের রাখার সংস্কৃতি চালু আছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ও তার ব্যতিক্রম নয়। কিন্তু বিজয় একাত্তর হলে অতিথি রাখার জন্য ফি আরোপ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুন্ন করা হচ্ছে।

তবে তার এ অভিযোগকে সম্পুর্ণ ভিত্তিহীন উল্লেখ করে তা উড়িয়ে দিয়েছেন বিজয় একাত্তর হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এ জে এম শফিউল আলম ভূঁইয়া।

বাংলানিউজকে তিনি বলেন, আমার হলে শিক্ষকদের সঙ্গে ছাত্রদের সম্পর্ক অত্যন্ত ভালো। যারা এ ধরনের অভিযোগ করেন, তারা না জেনেই করেন।

অধ্যাপক ভূঁইয়া বলেন, আমার হল ভালো চলছে। এটি কোনো কোনো মহলের সহ্য হচ্ছে না। তাই তারা বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করতে চাচ্ছেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক তাহসিন মাহমুদ বলেন, বিজয় একাত্তর হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য হলগুলোর তুলনায় ১০ গুণ ফি বৃদ্ধি করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আর্থিক সামর্থ্যের ভিত্তিতে হলের সিট সুবিধা বন্টনের নীতি ও শিক্ষার গণতান্ত্রিকতাকে রোধ করছে।

তিনি অভিযোগ করেন, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কোনো আলোচনা না করেই প্রশাসন এখন যাবতীয় সিদ্ধান্ত নিচ্ছে এবং হলকে বাণিজ্যিক হোটেলের মতো ভাড়া আদায়ের জায়গায় পরিণত করার সাহস পাচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) এবং হল সংসদগুলো অচল করে রাখার ফলেই এমনটি হচ্ছে বলে দাবি তার।

সংবাদ সম্মেলনে উত্থাপিত অন্যান্য দাবিগুলো হচ্ছে, হল অভ্যন্তরে খেলার মাঠটি ছাত্রদের জন্য উন্মুক্ত করা, হল লাইব্রেরি চালু করা এবং বিশেষায়িত হল স্থাপনের যাবতীয় প্রশাসনিক তৎপরতা বন্ধ করা।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০১৫
এসএ/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।