ঢাকা, রবিবার, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১, ২৮ জুলাই ২০২৪, ২১ মহররম ১৪৪৬

শিক্ষা

রাষ্ট্রপতিকে বরণের অপেক্ষায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়

মাহবুবুর রহমান মুন্না, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০১৫
রাষ্ট্রপতিকে বরণের অপেক্ষায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

খুলনা: রাতের নিস্তব্ধতাকে ম্লান করে আর দিনের আলোকে ছাপিয়ে আলোর ঝলকানিতে উদ্ভাসিত খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়। বুধবার (২৫ নভেম্বর) অনুষ্ঠিতব্য এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ম সমাবর্তন অনুষ্ঠানকে ঘিরে গোটা ক্যাম্পাসে সাজ সাজ রব।

চারিদিকে বইছে উৎসবের আমেজ।

এখন কেবল অপেক্ষা খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর ও রাষ্ট্রপতিকে বরণের জন্য।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বিভিন্ন একাডেমিক ভবন, প্রশাসনিক ভবন, হলগুলো, উপাচার্যের বাসভবনসহ গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও অবকাঠামো আলোকসজ্জায় সজ্জিত। দর্শনীয় স্থানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদের পোর্টেট ছবি শোভা পাচ্ছে। চার হাজারেরও বেশি অতিথি ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন বিশাল প্যান্ডেল ও মঞ্চ তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে। ক্যাম্পাসের রাস্তায় চলছে আল্পনার কাজ ও অন্যান্য সাজসজ্জা। বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল সমাবর্তন অনুষ্ঠানস্থলসহ গোটা ক্যাম্পাসকে ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে।

সোমবারও (২৩ নভেম্বর) খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (এসএসএফ) অগ্রবর্তী দলের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে ক্যাম্পাসে সমাবর্তনের বিভিন্ন প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম ঘুরে দেখেছেন।  

মূল অনুষ্ঠানসূচি অনুযায়ী খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন। এর আগে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনির্মিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের উদ্বোধন ফলক উন্মোচন করবেন। সমাবর্তন অনুষ্ঠান সমাপ্তিলগ্নে রাষ্ট্রপতি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমের ২৫ বছর পূর্তিতে রজত জয়ন্তীর বছরব্যাপী উৎসবের উদ্বোধন করবেন বলেও আশা করা হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ইমেরিটাস ড. আনিসুজ্জামান। বিশেষ অতিথি থাকবেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর আবদুল মান্নান। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্জনসহ গুরুত্বপূর্ণ দিক উল্লেখ করে বক্তব্য দেবেন। ধন্যবাদ দেবেন ট্রেজারার খান আতিয়ার রহমান।

সমাবর্তন অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, সংসদ সদস্য, ক‚টনীতিক, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, বেসামরিক ও সামরিক প্রশাসনের ঊর্ধতন কর্মকর্তা, স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধি, ইলেকট্রনিক, প্রিন্ট ও অনলাইন মিডিয়ার প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন।

২০১১ থেকে ২০১৫ সালের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত যে সমস্ত শিক্ষার্থীর চ‚ড়ান্ত ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে তারা এই ৫ম সমাবর্তনে অভিজ্ঞানপত্র (সনদপত্র) পাবেন। এর সংখ্যা প্রায় সাড়ে চার হাজার। তবে তাদের মধ্যে আড়াই হাজার গ্রাজুয়েট উপস্থিত থেকে রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে সনদপত্র নেওয়ার জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছেন। এর মধ্যে ১৫ জনকে পোস্ট গ্রাজুয়েট ডিপ্লোমা ইন আইটি (পিজিডিআইটি) ও ০১ জনকে পিএইচডি ডিগ্রি প্রদান করা হবে। পিএইচডি ডিগ্রি পাচ্ছেন মোঃ হাসানুজ্জামান।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্কুলের (অনুষদ) পরীক্ষার ফলাফলে অসাধারণ কৃতিত্বের জন্য এবার ১৪ জন শিক্ষার্থীকে গোল্ড মেডেল প্রদান করা হবে।

গোল্ড মেডেল প্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা হলেন: বিজ্ঞান প্রকৌশল ও প্রযু্ক্তিবিদ্যা স্কুলের ইলেক্ট্রনিক্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং ডিসিপ্লিনের ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষের উজ্জ্বল বিশ্বাস, গণিত ডিসিপ্লিনের ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষের রীনা পারভীন, গণিত ডিসিপ্লিনের ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের আফরোজা পারভীন, পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের মোঃ ইমরান হোসেন।

জীব বিজ্ঞান স্কুলের ফিসারিজ অ্যান্ড মেরিন রিসোর্স টেকনোলজি ডিসিপ্লিনের ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষের জয়ন্ত বীর, এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষের শেখ মোজাম্মেল হোসেন, ফিসারিজ অ্যান্ড মেরিন রিসোর্স টেকনোলজি ডিসিপ্লিনের ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের শারমীন আক্তার, এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের জয়দেব গোমস্তা।

ব্যবস্থাপনা ও ব্যবসায় প্রশাসন স্কুলের ব্যবসায় প্রশাসন ডিসিপ্লিনের ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষের মোঃ রুবেল হাসান বাপ্পী, ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের জান্নাতুল ফেরদৌস বৃষ্টি, ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের মোহাইমিনুল ইসলাম।

সামাজিক বিজ্ঞান স্কুলের অর্থনীতি ডিসিপ্লিনের ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের অপূর্ব রায়, ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের নুসরাত জাহান।

চারুকলা ইনস্টিটিউটের প্রিন্ট মেকিং ডিসিপ্লিনের ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের লুৎফন্নাহার লিজা।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, ৫ম সমাবর্তনের সকল প্রস্তুতি চূড়ান্ত হয়েছে।

তিনি জানান, ১৯৯০-৯১ শিক্ষাবর্ষ থেকে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে এর আগে ৪টি সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম সমাবর্তন ১৯৯৭ সালের ১০ এপ্রিল, দ্বিতীয় সমাবর্তন ২০০১ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি, তৃতীয় সমাবর্তন ২০০৭ সালের ১৯ মার্চ এবং ৪র্থ সমাবর্তন ২০১০ সালের ২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয়।
 
আগের ৪টি সমাবর্তনের চেয়ে এবারের সমাবর্তন হবে ব্যতিক্রম। যা ইতিহাসের পাতায় জায়গা করে নিতে পারবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১১৪৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০১৫
এমআরএম/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।