ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

জবি ছাত্রলীগের চাপে নিয়োগ স্থগিত করল কর্তৃপক্ষ

জবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩, ২০১৫
জবি ছাত্রলীগের চাপে নিয়োগ স্থগিত করল কর্তৃপক্ষ

জবি (জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়): জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) সেকশন অফিসার (গ্রেড-২) পদে নিজেদের পছন্দের পদের অধিক নিয়োগদানের চাপাচাপিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।   এদিকে একই সিন্ডিকেটে এক শিক্ষকের পদাবনমন করা হয়।



বৃহস্পতিবার (০৩ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০তম সিন্ডিকেটে সেই নিয়োগ চূড়ান্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।

গত অক্টেবরে সেকশন অফিসারসহ বিভিন্ন পদে প্রায় ৩৩টি পদের বিপরীতে নিয়োগদানের বিজ্ঞপ্তি দেয়। তারই আলোকে গত ১ ও ২ ডিসেম্বর কোন ধরনের পরীক্ষা ছাড়াই সাক্ষাৎকার গ্রহণের জন্য প্রায় ২৭৯ জন প্রার্থীকে ডাকা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেছে, সেকশন অফিসারের (গ্রেড-২) চারটি পদের বিপরীতে প্রায় ২৭৯ জন প্রার্থী আবেদন করেছেন।

এতে নিজেদের পছন্দের পাঁচটি করে অন্তত ১০ জনকে নিয়োগ দেওয়ার জন্য তালিকা দিয়ে প্রশাসনকে চাপ দিয়ে আসছিলেন জবি ছাত্রলীগের সভাপতি শরীফুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম। কিন্তু প্রশাসন থেকে জানানো হয় পদের অতিরিক্ত নেওয়ার কোন সুযোগ নেই।

এদিকে বৃহস্পতিবার দুপুরে জবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি এফএম শরীফুল ইসলামের বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেকশন অফিসার গ্রেড-২ পদে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন নেতাকর্মীরা।

নিয়োগ বাণিজ্য বন্ধের দাবিতে জবি শাখা ছাত্রলীগের বিভিন্ন গ্রুপ-উপগ্রুপ একত্রিত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার থেকে বিক্ষোভ শুরু করে ক্যাম্পাসের কলা ভবন,কাঁঠাল তলা, নতুন একাডেমিক ভবন শান্ত চত্বর, ভাষা শহীদ রফিক ভবনের সামনে দিয়ে প্রদক্ষিণ করে বিক্ষোভ মিছিলটি বিজ্ঞান অনুষদ হয়ে প্রশাসনিক ভবনে অবস্থান করে। এসময় ক্যাম্পাসে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছিল।

এদিকে একই সময়ে শরীফুল ইসলাম সাবেক সভাপতি সাধারণ সম্পাদক ও আহ্বায়কের শরণাপন্ন হন।

বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে সাবেক শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি কামরুল হাসান রিপন, সাধারণ সম্পাদক গাজী আবু সাঈদ এবং আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম আকন, যুগ্ম-আহ্বায়ক নিজাম উদ্দিনকে সাথে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ভাষা শহীদ রফিক ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে থাকেন তিনি। সেখান থেকে তাদেরকে প্রক্টর অফিসে ঢুকতে দেখা যায়।
 
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য জবি প্রক্টর ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়নের ব্যবস্থাসহ সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে তার কার্যালয়ে বৈঠক করেন।  
 
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জবি প্রক্টর নুর মোহাম্মদ বলেন, ছাত্রলীগ সিনিয়র নেতারা আমার কার্যালয়ে ঢুকে কথা বলতে চাইলে, আমি কার্যালয় ত্যাগ করি।

এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান বাংলানিউজকে বলেন,ক্যাম্পাসে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছিল কি না আমরা জানি না। তবে আমরা ক্যাম্পাসে নিয়োগ প্রক্রিয়া যেন বাধাগ্রস্ত না হয় সেজন্য অবস্থান করছিলাম।

এ ব্যাপারে জবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি শরীফুর ইসলাম বাংলা নিউজকে বলেন, আমার বিরুদ্ধে এ রকম কোন অভিযোগ নেই। ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিলের কথা অস্বীকার করেন তিনি ।

এ পরিস্থিতিতে বাধ্য হয়ে সেকশন অফিসার নিয়োগের প্রক্রিয়া স্থগিত করে দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্যরা। তবে সিন্ডিকেটে নৈতিক স্খলনের দায়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষক মেজবাহ উল আজম সওদাগরকে সহকারী অধ্যাপক থেকে পদাবনতি দিয়ে প্রভাষক করা হয়। গত ১১ অক্টোবরে তাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছিল।

এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, নিয়োগে চাপ ছিল, থাকবেই। দুইশ’র বেশি প্রার্থী থাকায় ভালভাবে যাচাই বাছাইয়ের জন্য আমরা তা স্থগিত করেছি এবং তা সিন্ডিকেটের এজেন্ডাতেই তোলা হয়নি।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৩, ২০১৫
আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।