ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ আশ্বিন ১৪৩১, ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৪ রবিউস সানি ১৪৪৬

শিক্ষা

সরকারি চিঠিতে শিক্ষার্থীদের শাস্তি বন্ধের স্লোগান

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১৯ ঘণ্টা, আগস্ট ৪, ২০১৬
সরকারি চিঠিতে শিক্ষার্থীদের শাস্তি বন্ধের স্লোগান

ঢাকা: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক শাস্তি বন্ধে সরকারি চিঠিতে চারটি স্লোগান যুক্ত করতে হবে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন সব দপ্তর থেকে মাঠপর্যায়ে পাঠানো চিঠিতে পর্যায়ক্রমে এসব স্লোগান সন্নিবেশিত করতে সম্প্রতি নির্দেশ দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।

স্লোগানগুলো হলো- শাস্তিমুক্ত বিদ্যালয়, শিক্ষালাভে সহায় হয়; শিশুর জন্য বেত ছাড়ি, সৃজনশীল বাংলা গড়ি; আদর আর ভালোবাসা, দিতে পারে সুশিক্ষা; শিখবে শিশু হেসে খেলে, শাস্তিমুক্ত পরিবেশ পেলে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় গত ১৯ মার্চ শিশুদের ওপর শারীরিক ও মানসিক শাস্তি বন্ধ সম্পর্কিত সচেতনতামূলক স্লোগান ঠিক করে তা মাঠপর্যায়ে জারিকৃত সব চিঠিতে সন্নিবেশিত করতে সিদ্ধান্ত দেয়।

এরপর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সংশ্লিষ্টদের নিয়ে সাত সদস্যের একটি কমিটি করে ৩৩টি স্লোগান রচনা ও সংগ্রহ করে তার মধ্য থেকে চারটি স্লোগান প্রচারের সিদ্ধান্ত নেয়।

এর অাগে ২০১১ সালের ১৩ জানুয়ারি হাইকোর্ট প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক শাস্তি দেওয়ার নামে নির্যাতনকে সংবিধান পরিপন্থী ঘোষণা করে।

পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন বন্ধে প্রণীত গাইডলাইন চূড়ান্ত করে এর আলোকে ব্যবস্থা নিতেও সরকারকে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট।

২০১১ সালের ২৬ এপ্রিল সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের ১১ ধরনের শারীরিক ও মানসিক শাস্তি নিষিদ্ধ করে সরকার। শিক্ষার্থীদের হাত-পা বা কোনো কিছু দিয়ে আঘাত বা বেত্রাঘাত, চক বা ডাস্টার জাতীয় বস্তু ছুড়ে মারা, আছাড় দেওয়া ও চিমটি কাটা, শরীরের কোনো স্থানে কামড় দেওয়া, চুল টানা বা কেটে দেওয়া, হাতের আঙুলের ফাঁকে পেনসিল চাপা ও মোচড় দেওয়া, ঘাড় ধাক্কা দেওয়া, কান টানা বা ওঠ-বস করানো, চেয়ার, টেবিল বা কোনো কিছুর নিচে মাথা দিয়ে দাঁড় করানো বা হাঁটু গেড়ে দাঁড় করে রাখা, রোদে দাঁড় করে বা শুইয়ে রাখা কিংবা সূর্যের দিকে মুখ করে দাঁড় করানো এবং শ্রম আইনে নিষিদ্ধ কোনো কাজ শিক্ষার্থীদের দিয়ে করানো নিষিদ্ধ করে।

এছাড়া শ্রেণীকক্ষে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে মা-বাবা, বংশ পরিচয়, গোত্র-বর্ণ ও ধর্ম সম্পর্কে অশালীন মন্তব্য, অশোভন অঙ্গভঙ্গি করা বা শিক্ষার্থীদের মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে এমন বিষয়গুলো মানসিক শাস্তি হিসেবে চিহ্নিত হবে।

কোনো শিক্ষকের বিরুদ্ধে এ ধরনের শাস্তি দেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হলে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ১৯৮৫ এর আওতায় ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।
 
প্রয়োজনে ফৌজদারি আইনেও অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের সময় তাদের নিয়োগপত্রে কোনো শিক্ষার্থীকে শারীরিক ও মানসিক শাস্তি দেওয়া যাবে না- মর্মে শর্ত অন্তর্ভুক্ত করে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের কাছ থেকে অঙ্গীকারনামা নেওয়ারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩১৬ ঘণ্টা, আগস্ট ০৪, ২০১৬
এমঅাইএইচ/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।