ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ আশ্বিন ১৪৩১, ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৪ রবিউস সানি ১৪৪৬

শিক্ষা

দ্বিগুণ দামে পচা-বাসি খাবার খাচ্ছেন জাবি শিক্ষার্থীরা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪৩ ঘণ্টা, আগস্ট ৬, ২০১৬
দ্বিগুণ দামে পচা-বাসি খাবার খাচ্ছেন জাবি শিক্ষার্থীরা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি): প্রশাসনের অবহেলা আর নজরদারির অভাবে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) বটতলা সংলগ্ন দোকানগুলোতে বিক্রি হচ্ছে পচা-বাসি খাবার। নোংরা পরিবেশে প্রস্তুত এসব খাবার বিক্রি হচ্ছে চড়া মূল্যে।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা বলছেন, বারবার বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানালেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি। তাদের অবহেলা ও নজরদারির অভাবে হোটেল মালিকদের স্বেচ্ছাচারিতা যেনো বেড়েই চলেছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, হোটেলগুলোতে খোলা ও নোংরা পরিবেশে বিভিন্ন ধরনের খাবার রান্না করা হচ্ছে। কোনোটায় মাছি-মশাও বইতে দেখা গেছে। রয়েছে পচা-বাসি খাবারও। এসব খাবার খেয়ে নিত্যদিনই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন শিক্ষার্থীরা।

প্লাবন নামে এক শিক্ষার্থী বাংলানিউজকে বলেন, ‘যে মুরগির মাংস রাতে খেলাম, সেটি সকালেও দেওয়া হচ্ছে। আবার সকালের তরকারি অন্যভাবে রান্না করে নতুন হিসেবে দুপুরে খাওয়ানো হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। এভাবে দৈনিক বাসি-পচা খাবার খেয়ে পেটে ব্যথাসহ নানা অসুখে ভ‍ুগতে হচ্ছে আমাদের।

‘কিন্তু এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়  কর্তৃপক্ষের কোনো পদক্ষেপ চোখে পড়েনি। ’

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দেওয়া খাবারের নিদিষ্ট দামের তালিকাও মানছে খাবার হোটেল ব্যবসায়ীরা। ইচ্ছে মতো শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে খাবারের দাম আদায় করছেন তারা।  

জাবি পরিসংখ্যান বিভাগের ছাত্র মো. ফরহাদ অভিযোগ করেন, কেউ-ই মূল্য তালিকা মানে না। এমনকি কোথাও টানানোও নেই সেই তালিকা।

‘দেখতে চাইলে কোনো কেউ-ই তা দেখাতে পারেননি। কেউ বলেন হারিয়ে গেছে, আবার অনেকে বলেন ব্যাগের ভেতরে আছে। ’

তবে খাবারের বাড়তি দাম প্রসঙ্গে আবদুল লতিফ নামে এক হোটেল ব্যবসায়ী ভাষ্য, ‌দ্রব্য মূল্য বাড়ার কারণেই বেশি দাম রাখা হয়। এতে আমাদের কী করার আছে।

এক প্রশ্নের উত্তরে তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা আরেক হোটেল ব্যবসায়ী বলেন, ‘শাক-সবজি নিত্যপণ্যের দাম কমলে অবশ্যই খাবারের দামও কমে। ’

‘তবে কি কমু মামা-নেতারা  যে হারে ফাও খায়, আমরা তো ব্যবসায়ী, লস দিলে পুষবে কেমনে? তাই মাঝে মাঝে ফাও পুষিয়ে নিতে ছাত্রদের কাছ থাইক্যা একটু বেশি দাম নেই আর কি,’ বলেন তিনি।

ক্যামারা দেখে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এ ব্যবসায়ী বলেন, ‘মামা এমন কিছু লিখিয়েন না, যাতে আমাগো ক্ষতি হয়। আমরা তো কষ্ট করে আপনা গোর জন্যই রান্না করি। ’

যোগাযোগ করা হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মওলানা ভাসানী হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক সৈয়দ হাফিজুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, যেসব শিক্ষক দোকান কমিটির দায়িত্বে রয়েছেন, তাদের এ বিষয়ে খোঁজ নিতে বলা হবে।

একই মন্তব্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহম‍ান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক মোহাম্মদ আলমগীর কবীরেরও।

হল প্রভোস্ট কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মো. আনোয়ার খসরু পারভেজ বলেন, ‘আমি ছুটিতে আছি। তবে বটতলার দোকানগুলো যেসব হলের অধীনে আছে তারাই এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে। ’

তবে জাবি উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. আবুল হোসেন ও রেজিস্ট্রার আবু বকর সিদ্দিককে একাধিবার কল দিলে তারা ফোন রিসিভ করেননি।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪২ ঘণ্টা, আগস্ট ০৬, ২০১৬
জিসিপি/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।