জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়: বিয়ের অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য ভাড়া দেওয়া হয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) মনোবিজ্ঞান বিভাগের গবেষণাগার ও হলরুম।
শুক্রবার (১২ আগস্ট) ওই গবেষণাগার ও হলরুমে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের কর্মচারী (এমএলএসএস) আবুল কাশেমের মেয়ের বিয়ের আয়োজন দেখা যায়।
এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। বিষয়টি উপাচার্যের ‘জানা না’ থাকলেও বিভাগের চেয়ারম্যান বলেছেন, ‘ঘরোয়া আয়োজনের সুযোগ’ দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলাপে জানা যায়, শুক্র ও শনিবার ক্যাম্পাস সাপ্তাহিক বন্ধ থাকায় কোনো শিক্ষার্থী থাকে না বললেই চলে। এরই সুযোগে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের কর্মচারী কাশেমের মেয়ের বিয়েকে কেন্দ্র করে কমিউনিটি সেন্টার রূপ নেয় জবির মনোবিজ্ঞান বিভাগের হলরুম ও দু’টি গবেষণাগার।
গবেষণাগারের ভেতরে প্রবেশ করে দেখা যায়, এ যেন পুরো কমিউনিটি সেন্টার! মনোবিজ্ঞান বিভাগের নিচতলায় অবস্থিত দু’টি গবেষণাগার থেকে যাবতীয় চেয়ার, টেবিল, বেঞ্চ, যন্ত্রপাতি বের করে ঢোকানো হয়েছে ডেকোরেশনের চেয়ার ও টেবিল। যেখানে চলছে ৪০০ লোকের খাবারের আয়োজন।
তবে, কতো টাকায় ভাড়া নেওয়া হয়েছে বা কীভাবে এখানে বিয়ের অনুষ্ঠান আয়োজনের অনুমতি পেলেন তা জানাতে পারেননি কাশেম। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী বাংলানিউজকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান সংকুলানের জন্য প্রয়োজনীয় ক্লাসরুম ও গবেষণাগার নেই। যাও গবেষণাগার রয়েছে তার অবস্থাও জরাজীর্ণ। গবেষণাগারে নেই তেমন যন্ত্রপাতি ও আসবাবও। এরমধ্যেই বিয়ের আয়োজনের ফলে গবেষণাগার নোংরা হওয়ার পাশাপাশি আসবাব ও যন্ত্রপাতি একেবারে নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি এবং মনোবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ড. কাজী সাইফুদ্দিন বলেন, ৬ বছর চেয়ারম্যান ছিলাম, আমি এই বিভাগের মোস্ট সিনিয়র টিচার, ইদানীং আমি ছুটিতে থাকলে বিভাগের মিটিং হয়, আমি কিছু জানি না এ বিষয়ে। এটা গুরুতর অন্যায়। গবেষণাগার কোনো কমিউনিটি সেন্টার নয় যে এখানে বিয়ের অনুষ্ঠান হবে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মীজানুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ক্যাম্পাসের কোনো গবেষণাগারে এ রকম কোনো অনুষ্ঠান হচ্ছে বলে আমার জানা নেই। আমার কাছ থেকে এ ধরনের কোনো অনুমতিও নেওয়া হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল মিলনায়তনে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজন করে। কিন্তু গবেষণাগারে এই কাজ কীভাবে হল তা আমার জানা নেই।
এ বিষয়ে মনোবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ড. আশোক কুমার সাহা বাংলানিউজকে বলেন, তাদের একটা ঘরোয়া আয়োজনের জন্য আমাদের কাছে হল চেয়েছিল, তাই আমরা তাকে এই সুযোগ দিয়েছি।
গবেষণাগারে এ আয়োজন সম্পর্কে তিনি বলেন, শুধু আমরা নয়, আরও কয়েকটা বিভাগেও এমন সুযোগ দেওয়া হয়। এর আগেও দু’একবার এভাবে অনুষ্ঠান করতে দেওয়া হয়েছিল।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০১৬
এইচএ/