ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ আশ্বিন ১৪৩১, ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৪ রবিউস সানি ১৪৪৬

শিক্ষা

জবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে স্থবির পুরান ঢাকা

জবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২২ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০১৬
জবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে স্থবির পুরান ঢাকা ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

নয়াবাজার মোড় থেকে: হল নির্মাণের দাবিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের নয়াবাজার মোড় অবরোধে কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে পুরান ঢাকা। এ এলাকা ঘিরে থাকা সড়কগুলোতে যানবাহন বন্ধ রয়েছে।

স্থবিরতা দেখা যাচ্ছে ব্যবসায়িক ও অন্যান্য কার্যক্রমেও।

দাবি আদায়ে স্মারকলিপি দিতে সোমবার (২২ আগস্ট) সকাল ১০টার দিকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে পদযাত্রা কর্মসূচি শুরু করলে বংশাল এলাকায় শিক্ষার্থীদের বাধা দেয় পুলিশ। তারপরই নয়াবাজার মোড়ে অবস্থান নিয়ে অবরোধ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। দুপুর ১২টার দিকে ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক এস এম সিরাজুল ইসলামের নেতৃত্বে কর্মসূচিতে যোগ দেয় সংগঠনটির দুই শতাধিক নেতাকর্মী। তাদের স্লোগানে স্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, পদযাত্রা কর্মসূচি শুরু করলে ৩ দফা বাধা দেয় পুলিশ। সর্বশেষ বংশাল মোড়ে মিছিল পৌঁছালে পুলিশ টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ এবং লাঠিচার্জ করে। এতে অর্থনীতি বিভাগের একজন ও হিসাববিজ্ঞান বিভাগের একজন শিক্ষার্থী আহত হন। তাদের নিকটস্থ বাংলাদেশ ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে পুলিশের লালবাগ জোনের উপ-কমিশনার (ডিসি) ইব্রাহিম বলেন, আমরা তাদের সামনে ৩টি ব্যারিকেড দিয়েছি। তারা তা ভেঙে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দিকে যেতে চাইলে আমরা টিয়ারশেল নিক্ষেপে বাধ্য হই। প্রধানমন্ত্রী এই মুহূর্তে ক্যাবিনেট মিটিংয়ে আছেন। সেখানে এই ২-৩ হাজার শিক্ষার্থীর দেখা করা সম্ভব নয়। আমরা বলেছি, প্রতিনিধিদল আমাদের কাছে আসতে। তাহলে আমরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাদের দেখা করার ব্যাবস্থা করে দেবো, কিন্তু তারা তা শুনছেন না।

এ বিষয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। আমরা ২২ হাজার শিক্ষার্থীর দাবি নিয়ে আন্দোলন করছি। একক কোনো প্রতিনিধি নেই আমাদের। তবে একটি প্যানেল পাঠাতে পারি, যদি তারা আমাদের সরাসরি জানায়।

আন্দোলন চলাকালে পুরান ঢাকার বংশাল, তাঁতীবাজার, ইংলিশ রোড, রায়সাহেব বাজার মোড়, জনসন রোড ও কোর্ট-কাচারি এলাকায় যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। এ কারণে সদরঘাট, ইসলামপুর, জজকোর্ট, কেরানীগঞ্জগামী এবং সেসব এলাকা থেকে মূল ঢাকাগামী লোকজনকে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। অনেকে হেঁটেই গন্তব্যে রওয়ানা দিতে বাধ্য হন। এছাড়া স্থবিরতা নেমে আসে ব্যবসা এবং অন্যান্য কার্যক্রমেও।

এসময় নাশকতার আশঙ্কায় এই এলাকার সব দোকানপাট বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয় পুলিশ। দোকানপাট বন্ধের পাশাপাশি বন্ধ করে দেওয়া হয় এই এলাকার বেশ কিছু আর্থিক প্রতিষ্ঠানও। যেগুলো খোলা আছে সেগুলোতেও বাড়ানো হয় নিরাপত্তা।  

নয়াবাজার মোড়ে ব্যাংক এশিয়ার একজন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, আমরা সাধারণত ১০টার পর আমাদের লেনদেন শুরু করি এবং আমাদের এই ব্রাঞ্চের বেশিরভাগ গ্রাহক এখানকার ব্যাবসায়ী। কিন্তু সকাল থেকেই এই এলাকায় আন্দোলন চলায় আমাদের কাস্টমার আসেনি বললেই চলে। এছাড়া আন্দোলনের কারণে হেড অফিস থেকে টাকার গাড়িও আসতে পারেনি।

নয়াবাজার সংলগ্ন আলফা হার্ডওয়্যারের মালিক বলেন, গত দু’দিনে ১ টাকাও বিক্রি হয়নি। সরকারের উচিত এই সমস্যার সুষ্ঠু সমাধান করা।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০১৬
এইচএ/

** জবি শিক্ষার্থীদের অবরোধে অচল পুরান ঢাকা, আন্দোলনে ছাত্রলীগও
** জবি শিক্ষার্থীদের পদযাত্রা কর্মসূচিতে পুলিশের লাঠিচার্জ​
** জবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে শিক্ষক সমিতি ও নীল দলের সমর্থন
** প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় অভিমুখে জবি শিক্ষার্থীদের পদযাত্রা সোমবার
** হলের দাবিতে ধর্মঘটে অচল জবি‍
** রোববার পর্যন্ত আলটিমেটাম জবি শিক্ষার্থীদের

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।