ঢাকা, বুধবার, ২৩ আশ্বিন ১৪৩১, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৫ রবিউস সানি ১৪৪৬

শিক্ষা

বিশ্বময় আলো ছড়াচ্ছে কুয়েট অটোমেটেড লাইব্রেরি

মাহবুবুর রহমান মুন্না, ব্যুরো এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৬
বিশ্বময় আলো ছড়াচ্ছে কুয়েট অটোমেটেড লাইব্রেরি ছবি: মানজুরুল ইসলাম

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফিরে: খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) সেন্ট্রাল লাইব্রেরি দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিগুলোর মধ্যে প্রথম Automated Library ।

এ লাইব্রেরিতে বর্তমানে ৫১ হাজার ৩টি বই, ৩ হাজার ৯১টি জার্নাল, ৪ লাখ ৫১ হাজার ৫১১টি ই-জার্নাল, ৯ হাজার ৪৭৫টি ই-বুক, ১ হাজার ৫০৬টি অডিও ভিজ্যুয়াল সামগ্রী ও ২১৪টি অন্যান্য সংগ্রহ রয়েছে।

যা কুয়েট শিক্ষার্থী ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থী ও গবেষকরা অন-লাইনে পড়তে পারছেন। লাইব্রেরিটি কুয়েটের নতুন একাডেমিক ভবনের এ-ব্লকের ৩য় ও ৪র্থ তলায় অবস্থিত।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর বাংলানিউজকে জানান, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন কর্তৃক পরিচালিত Higher Education Quality Enhancement Project (HEQEP) -এর অধীনে Library System Automation of KUET (CP-435) প্রকল্পটি ২০১২ সালের ডিসেম্বর মাসে সফলভাবে সম্পন্ন হয়। সেই থেকে এর কার্যক্রম সফলভাবে পরিচালিত হচ্ছে। Library System Automation করার জন্য Open Source Software (Koha) ব্যবহার করা হয়েছে। সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য ৩০ KVA ক্ষমতা সম্পন্ন জেনারেটরের ব্যবস্থা রয়েছে।

তিনি আরও জানান, দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিগুলোর মধ্যে প্রথম Automated Library কুয়েট সেন্ট্রাল লাইব্রেরি। অন-লাইন ভিত্তিক লাইব্রেরি বই, জার্নাল, ই-জার্নাল, ই-বুক, অডিও ভিজ্যুয়াল সামগ্রী থেকে কুয়েট শিক্ষার্থীরা যেমন সমৃদ্ধ হচ্ছে, তেমনি বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এ লাইব্রেরি ভিজিট করে জ্ঞানের আলোয় আলোকিত হচ্ছেন।

বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ কর্নার
লাইব্রেরির Reading Section -এ ‘বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ কর্নার’  নামে একটি বিশেষায়িত কর্নার স্থাপন করা হয়েছে। যা বর্তমান সরকারের শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ ২০১৩ সালের ০১ সেপ্টেম্বর উদ্বোধন করেন। ওই কর্নারে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ সম্পর্কে মূল্যবান বইসমূহ রয়েছে।

এছাড়া শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী ও অন্যান্য ব্যবহারকারীরা যাতে ই-বুকস, ই-জার্নাল পড়তে ও ডাউনলোড করতে পারে তার জন্য একটি অত্যাধুনিক Digital Library Access Center রয়েছে।  ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশুনা ও মনোরম পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে সেন্ট্রাল লাইব্রেরির Reading Section, Circulation Section, Processing Section ও Digital Library Access Center  সু-সজ্জিত এবং শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত করা হয়েছে।

লাইব্রেরি ভবনের ৩য় তলায় রয়েছে লাইব্রেরিয়ানের দফতর, Digital Library Access Center,  জার্নাল সেকশন, রিডিং সেকশন (বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ কর্নার নামে একটি বিশেষায়িত কর্নার এ সেকশনে রয়েছে) এবং ফটোকপি সেকশন।

৪র্থ তলায় রয়েছে প্রসেসিং সেকশন, সার্কুলেশন সেকশন, রেফারেন্স সেকশন, News Paper Section, Binding Section।

প্রত্যেক কর্মদিবসে সকাল ৯টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত এবং শনিবার ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত এ লাইব্রেরি খোলা থাকে। সকাল সোয়া ৯টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বই ইস্যু করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক পর্যায়ের সব শিক্ষার্থীকে ৩টি করে বই এক মাসের জন্য ইস্যু করা হয়।

শিক্ষার্থীরা লাইব্রেরির বই, জার্নাল, ম্যাগাজিনসহ তাদের সব পাঠ্যসামগ্রী সুলভ মূল্যে ফটোকপি করতে পারবে। ফটোকপির কুপন অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্টাল স্টোর থেকে সংগ্রহ করা যায় এবং নগদ টাকার বিনিময়ে কোনো ফটোকপি সার্ভিস দেওয়া হয় না।

লাইব্রেরিয়ান আক্কাছ উদ্দিন পাঠান বাংলানিউজকে বলেন, প্রত্যেক ছাত্র/ছাত্রীকে এক মাসের জন্য ০৩টি বই Online এর মাধ্যমে ইস্যু করা হয় এবং ইস্যুকৃত বইগুলো শিক্ষার্থীরা সর্বোচ্চ ০৫ বার পর্যন্ত Online এর মাধ্যমে রিনিউ করতে পারবে। ৬ষ্ঠ বার লাইব্রেরিতে উপস্থিত হয়ে রিনিউ/Check in  করতে হবে। ওই সময়ের মধ্যে বই রিনিউ/Check in  না করলে প্রতি কর্মদিবসের জন্য প্রতি বই বাবদ ০২ (দুই) টাকা হারে জরিমানা দিতে হবে।

তিনি আরও জানান, দুর্লভ অনেক বই ও গবেষণাপত্র আমাদের লাইব্রেরিতে থাকায় বিশ্বের নামি-দামি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী-শিক্ষকরা এখানে ভিজিট করেতে আসেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ ও তথ্য শাখার সেকশন অফিসার (গ্রেড-১) মনোজ কুমার মজুমদার বাংলানিউজকে বলেন, শিক্ষার্থীরা ক্লাসের ফাঁকে ফাঁকে লাইব্রেরিতে এসে পড়াশুনা ও গবেষণা করেন। বিশেষ করে দুর্লভ অনেক বই বাইরে পাওয়া যায় না, তা এখান থেকে সংগ্রহ করেন তারা।

ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৪র্থ বর্ষের ছাত্র মাহমুদ হাসান বাংলানিউজকে বলেন, কুয়েটের আধুনিকায়নকৃত লাইব্রেরির সমৃদ্ধ ও দুর্লভ বইয়ের সমাহার আমাদের পড়াশোনাকে করেছে গতিময়। নতুন নতুন বই ও জার্নাল সংগ্রহের মাধ্যমে বর্তমানে আলোকিত আমাদের প্রিয় লাইব্রেরি।

বাংলাদেশ সময়: ১২০০ ঘণ্টা,  সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৬
এমআরএম/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।