ঢাকা, বুধবার, ২৪ আশ্বিন ১৪৩১, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৫ রবিউস সানি ১৪৪৬

শিক্ষা

ঢাবির ‘গ’ ইউনিটে ভুলেভরা প্রশ্নপত্রে রেকর্ড সংখ্যক ফেল

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০২ ঘণ্টা, অক্টোবর ৭, ২০১৬
ঢাবির ‘গ’ ইউনিটে ভুলেভরা প্রশ্নপত্রে রেকর্ড সংখ্যক ফেল

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: রেকর্ড বিলম্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যলয়ের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ১ম বর্ষ সম্মান শ্রেণিতে ‘গ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) রাতে। পাশাপাশি রেকর্ড হয়েছে ফেলের হারেও।

পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী ৪০ হাজার ২৩৪ জন শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাস করেছে মাত্র ২ হাজার ২২১ জন। সে হিসাবে ফেলের হার ৯৪ দশমিক ৪৮ শতাংশ। গত কয়েক বছরের ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ‘গ’ ইউনিটের ফেলের হার এবারেই সর্বোচ্চ।

২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে ‘গ’ ইউনিটের পরীক্ষায় ৪০ হাজার ৯৫৬ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে ৭ হাজার ১৯৪ জন উত্তীর্ণ হন। পাসের হার ছিলো ১৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ।

২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষে ৪৮ হাজার ৫৭ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়ে ৯ হাজার ৯০৬ জন উত্তীর্ণ হন। পাসের হার ছিলো ২০ দশমিক ৬১ শতাংশ।
২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের পরীক্ষায় পাসের হার ছিলো ১১ দশমিক ৪০ শতাংশ। আর ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের পরীক্ষা পাসের হার ছিলো ১৭ দশমিক ৪২ শতাংশ। ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষে ১৩ দশমিক ১৯ শতাংশ পাস করে।
 
এদিকে পরীক্ষার দিন ‘গ’ ইউনিটের প্রশ্নে ব্যাপক ভুলের অভিযোগ করেন ভর্তিচ্ছুরা। প্রশ্নপত্রে মাত্রাতিরিক্ত ভুল থাকাকেই ফলাফল বিপর্যয়ের জন্য দায়ী করছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
**ভুলে ভরা ঢাবির ‘গ’ ইউনিটের প্রশ্ন, উত্তর না দিয়েই নম্বর!

চট্টগ্রাম কমার্স কলেজের এক শিক্ষার্থী বলেন,  ‘প্রশ্নপত্রে ভুল থাকার কারণে আমাদের অনেক সময় নষ্ট হয়েছে। ফিন্যান্স অংশে প্রশ্ন কম থাকা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ছিলাম। একাউন্টিং অংশে বাংলা ও ইংরেজি দুই রকম অপশন থাকায় উত্তর করিনি। ইংরেজি অংশে প্রশ্নের নির্দেশনায় ভুল থাকার কারণে জানা সত্ত্বেও সব প্রশ্নের উত্তর করতে পারিনি। এজন্য ইংরেজি অংশে ফেল করি।
 
অন্যদিকে গত চারবছরে রেকর্ড সময় পার করে ফল প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে পরীক্ষার ১ দিন পর, ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষে ৩ দিন, ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষে ২ দিন, ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষে ৩ দিন পরে ফলাফল প্রকাশিত হয়। আর ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে ৬ দিন পর ফলাফল প্রকাশিত হলো।

তবে ভুল প্রশ্নপত্রের পাশাপাশি ফল বিপর্যয়ের জন্য শিক্ষার মানকে দায়ী করছেন শিক্ষাবিদরা। । এ বিষয়ে  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমিরিটাস অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, উচ্চ মাধ্যমিকে এতো সংখ্যক জিপিএ ৫ পাচ্ছে কিন্তু তাদের মেধা, শিক্ষার মান বাড়ছে না। এর কারণ আমাদের মানসম্মত শিক্ষক নেই এবং যারা আছে তারা মনোযোগ দিয়ে পড়ায় না। ৫ শতাংশ পাস কোনোভাবে মানা যায় না।
 
ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে রেকর্ড সংখ্যক শিক্ষার্থীর ফেলের কারণ জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক সাংবাদিকদের বলেন, প্রশ্ন ভুলের কারণে কোনো শিক্ষার্থীর ফলাফল বিভ্রাট হয়নি । শিক্ষার্থীরা প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারেনি বলেই ফেল করেছে। বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই ইংরেজি বিষয়ে ফেল করেছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
 
গ-ইউনিট ভর্তি পরীক্ষার প্রধান সমন্বয়ক ও বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ডিন অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম বলেন, এবছর শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ-ইউনিটেই নয়, অন্য ইউনিটেও পাসের হার কম। এছাড়া অন্য বিশ্ববিদ্যালয়েও পাসের হার বেশি নয়। এটি উচ্চ মাধ্যমিকে মানসম্মত শিক্ষার অভাবেই হচ্ছে।

প্রশ্ন ভুলের কারণে কোনো শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি বলেও জানান তিনি।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ৭, ২০১৬
এসকেবি/এএ

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।