রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর মো. আবদুল হামিদ আগামী ১৭ জানুয়ারি ঢাকায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসসি) সমাবর্তনে সভাপতিত্ব ও গ্রাজুয়েটদের ডিগ্রি দেবেন।
সমাবর্তন উপলক্ষে বুধবার (০৪ জানুয়ারি) ধানমণ্ডিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত তুলে ধরেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপাচার্য বলেন, সমাবর্তনের বাজেট দুই কোটি টাকার মতো হবে।
লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, ১৯৯২ সালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর এবারই প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর আগে ২০০৮ সালে সমাবর্তনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা আর বাস্তবায়ন হয়নি। পরে আর উদ্যোগও নেওয়া হয়নি।
‘মানি ইজ দ্য প্রবেলম' বলা হলেও অর্থের কারণে করা যাচ্ছে না, দিজ নট ট্রু। মেইন যেটা বলি, উদ্যোগের অভাব ছিল। অনেক বড় বিশ্ববিদ্যালয়, লাখ লাখ শিক্ষার্থী বের হয়েছে, চ্যালেঞ্জ নেওয়ার বিষয়। অনেক ভিসি চার বছর পূরণ করতে পারেনি, নানা ধরনের প্রতিকূলতা ছিল। ’
১৯৯৮ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন বিষয়ে উত্তীর্ণ স্নাতকদের মধ্যে চার হাজার ৯৩২ জন নিবন্ধনকৃত স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী সমাবর্তনে অংশগ্রহণ করবেন। এদের মধ্যে তিন হাজার ১৩৭ জন ছাত্রী এবং এক হাজার ৭৯৫ জন ছাত্র।
অল্প সংখ্যক গ্রাজুয়েট অংশ নেওয়া প্রসঙ্গে উপাচার্য বলেন, প্রতিবছর প্রায় লাখ গ্রাজুয়েট বের হন। এত বছর পর গ্রাজুয়েটরা দেশ-বিদেশে চলে গেছেন।
‘আর একটা কারণ হলো- আস্থাহীনতার সংকট, ২৪ বছরে হয়নি, যখন আমরা ক্লজ করে দিয়েছি, বহুজন বলেছে বাগড়ানোর জন্য। আমরা নিবন্ধিত প্রত্যেকের ছবি দিয়ে স্মরণিকা প্রকাশ করবো, তাই আর সময় বাড়ানো হয়নি। ’
তিনি বলেন, ১৫ বছরে ২০ লাখের অধিক গ্রাজুয়েট বের হয়েছে। এরপর থেকে সমাবর্তন প্রতিবছরই হবে।
ওই দিন বিকেল তিনটায় বিআইসিসিতে সমাবর্তনে সম্মানিত অতিথি থাকবেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। উপস্থিতি থাকবেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান।
গাজীপুরে মূল ক্যাম্পাস হলেও ঢাকায় সমাবর্তনের কারণ প্রসঙ্গে উপাচার্য বলেন, আমাদের ক্যাম্পাস দেশজুড়ে। এখানে করছি, এটা ওই অর্থে বাইরে কিছু না। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় একটা ক্যাম্পাস- সেই মাইন্ডসেট গড়ে ওঠেনি, এখন আস্তে আস্তে গড়ে উঠেছে। রাষ্ট্রপতির যাওয়া আসায় ট্রাফিক, অংশগ্রহণকারীদের যাতায়াতে হ্যাসেল আছে। সার্বিক দিক বিবেচনা করে এখানে করছি।
আগামীতে শুধু ঢাকায় হবে না, বিভাগীয় কেন্দ্রেও ডিজিটালি করব; বলেন উপাচার্য।
সমাবর্তন অনুষ্ঠানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফলের জন্য আটজন শিক্ষার্থীকে স্বর্ণপদক দেওয়া হবে।
সমাবর্তন উপলক্ষে পত্রিকায় ক্রোড়পত্র প্রকাশ, ডকুমেন্টারি তৈরি, গাজীপুর ক্যাম্পাস ও বিভাগীয় শহরের ছয়টি আঞ্চলিক অফিসে আলোকসজ্জা করা হবে বলে জানান উপাচার্য।
এছাড়া ১২ জানুয়ারি সকাল ১০টায় ঢাকা শহর ও ছয়টি বিভাগীয় শহরে ছাত্র-শিক্ষকদের অংশগ্রহণে অভিন্ন ব্যানারে আনন্দ শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়েছে।
ঢাকায় জাতীয় যাদুঘরের সামনে থেকে শুরু করে বাংলা একাডেমি ও দোয়েল চত্বর হয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে শোভাযাত্রা শেষ হবে। এতে শিক্ষামন্ত্রী ও ইউজিসি চেয়ারম্যান নেতৃত্ব দেবেন।
সমাবর্তনে অংশগ্রহণকারীদের জন্য ১৩-১৫ জানুয়ারি ধানমণ্ডিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর কার্যালয়ে (বাড়ি # ৫৮, রোড # ৮/এ, ধানমণ্ডি, ঢাকা) সকাল সাড়ে ৯টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত সমাবর্তন গাউন বিতরণ করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয় উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আসলাম ভূঁইয়া, অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবু, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক নোমান উর রশীদ, ডিন অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন, ড. মোবাশ্বেরা খানম, রেজিস্ট্রার মোল্লা মাহফুজ আল-হোসাইন ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বদরুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।
** জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন ১৭ জানুয়ারি
বাংলাদেশ সময়: ১৫০৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৪, ২০১৬
এমআইএইচ/পিসি