সরেজমিনে দেখা গেছে, মণ্ডপ তৈরি ও সাজসজ্জায় গত কয়েকদিন ধরেই ব্যস্ত সময় পার করছেন সনাতন ধর্মের অনুসারী শিক্ষার্থীরা। গত কয়েকদিন ধরেই সকাল থেকে মধ্যরাত অবধি কাজ করছেন তারা।
শাস্ত্রমতে, সরস্বতী হলেন জ্ঞান, বিদ্যা, সংস্কৃতি ও শুদ্ধতার দেবী। শুভ্র বসন, হংস-সম্বলিত, পুস্তক ও বীণাধারিণী এই দেবী বাঙালির মানসলোকে এমন এক প্রতিমূর্তিতে বিরাজিত, যেখানে কোনো অন্ধকার নেই, নেই অজ্ঞনতা বা সংস্কারের কালো ছায়া।
পূজা মণ্ডপের কাজে ব্যস্ত চারুকলা বিভাগের ১০ম ব্যাচের শিক্ষার্থী রিতু বাংলানিউজকে বলেন, সারারাত ধরে কাজ করে এখনও শেষ করতে পারিনি। আমরা এবার ব্যতিক্রমভাবে পূজা উদযাপন করতে যাচ্ছি। ট্যাপা পুতুলকে আমরা সরস্বতী রূপে প্রতিষ্ঠা করবো।
এ বিষয়ে লোক প্রশাসন বিভাগের দীপ্তি সরকার বাংলানিউজকে বলেন, পুরোদমে পূজার মণ্ডপ তৈরিতে কাজ করছি। আমরা চেষ্টা করছি যাতে আমাদের বিভাগের মণ্ডপটি অন্য সবার চেয়ে ব্যতিক্রম ও আকর্ষণীয় হয়।
ক্যাম্পাসে পূজা আয়োজনের অন্যতম সংগঠক জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী এবং ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নিউটন হাওলাদার বাংলানিউজকে বলেন, গত কয়েক বছরের মতো এবারও আমরা ক্যাম্পাসে অত্যন্ত সুশৃঙ্খল ও শান্তিপূর্ণভাবে সরস্বতী পূজার আয়োজন করেছি। আমরা মনে করি, এই পূজা আয়োজনের মাধ্যমে আমরা বিদ্যা দেবীকে সন্তুষ্ট করে শিক্ষা অর্জনের পথ সুগম করতে পারবো। এই পূজা এখন শুধু সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। এটা এখন একটি অসাম্প্রদায়িক উৎসবে পরিণত হয়েছে। যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয় একটি সার্বজনীন স্থান তাই এখানে ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় থাকবে এটাই স্বাভাবিক। কেউ কারো ধর্মে হস্তক্ষেপ না করার শিক্ষাই এ পূজা বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।
পূজায় আইন-শৃঙ্খলার বিষয়টি জানতে চাইলে সহকারী প্রক্টর ড. মোস্তফা কামাল বাংলানিউজকে বলেন, বরাবরের মতো এবারও সর্বোচ্চ নিরাপত্তা থাকবে। আমরা পুলিশ ও প্রক্টরিয়াল বডি নিয়ে সর্বক্ষণিক তদারকির মধ্যে থাকবো। বিশৃঙ্খলাকারী কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জবি উপাচার্য ড. মীজানুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, এবারও আমরা পূজায় প্রতিটি বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছি যাতে সর্বোচ্চ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য নিয়ে পূজা করা হয়।
আমাদের এখানে জায়গার তুলনায় বিভাগ অনেক বেশি থাকায় একটু বেশি সতর্ক থাকতে হবে। আর এই পূজা যেহেতু পুরান ঢাকার সব প্রতিষ্ঠানকে সঙ্গে নিয়ে করা হবে তাই সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। তবে যদি কেউ রং নিয়ে মাতামাতি করে তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০১৮
কেডি/আরআর