সোমবার (০৯ সেপ্টেম্বর) দিনগত রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ হবিবুর রহমান হলে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী সাংবাদিকের নাম সাকিব আল হাসান।
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতার নাম মিনহাজুল ইসলাম। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুষদ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি গোলাম কিবরিয়ার অনুসারী।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জানান, হবিবুর রহমান হলে ২২৪ নম্বর কক্ষে সিট বরাদ্দ পায় সে। সোমবার রাতে বরাদ্দকৃত সিটে উঠতে গেলে মিনহাজসহ হল ছাত্রলীগের ১৫-২০ জন নেতাকর্মী বাধা দেয়। জোরপূর্বক সিট থেকে তার জিনিসপত্র ফেলে দিয়ে সিট দখলে নেয় মিনহাজ। এ সময় সাকিবকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে হল থেকে বের করে দেয় মিনহাজ। একপর্যায়ে বিষয়টি হল প্রাধ্যক্ষকে জানালে মিনহাজ ভুক্তভোগী সাংবাদিককে মারধর করতে উদ্যত হন। পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে ছাত্রলীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদক হলে এসে হল প্রাধ্যক্ষের কক্ষে বৈঠকে বসেন। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক শেষে তারা ওই সিট দখলে রেখে চলে যান।
এর আগে রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের ৩৪৭ নম্বর কক্ষে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থীকে হল প্রশাসন সিটে তুলে দেয়। পরে শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মাহমুদুল হাসান সাকিল জোরপূর্বক তাকে সিট থেকে নামিয়ে দেয়। এ নিয়ে হল প্রাধ্যক্ষ সাকিলের কাছে জানতে চাইলে সাকিল হল প্রাধ্যক্ষের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলে মীমাংসা করে দেয়।
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা মিনহাজুল ইসলাম বলেন, ২২৪ নম্বর কক্ষে একটি সিট খালি হওয়ায় আমি আমার এক ছোট ভাইকে নিয়ে ওই কক্ষে যাই। পরে জানতে পারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে এক শিক্ষার্থীকে ওই কক্ষে বরাদ্দ দিয়েছে। তবে ওই কক্ষে আমার যাওয়া না উচিত হয়নি। তবে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করার বিষয়টি অস্বীকার করলেও ঘটনাস্থলে উপস্থিত অনেকেই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।
জানতে চাইলে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, হলের প্রাধ্যক্ষ বিষয়টি মীমাংসা করে দিয়েছে। আপনারা প্রাধ্যক্ষ স্যারের সঙ্গে কথা বলেন।
হল প্রাধ্যক্ষ জাহিদুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি জানার পর ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে সমাধান করেছি।
তিনি আরও বলেন, সাংবাদিকের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করা হয়েছে কিনা তা আমার জানা নেই। তবে, যদি কেউ এমনটা করে থাকেন তাহলে হল প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিলে আমরা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর দাবি, বিষয়টি মীমাংসা করা হয়নি। ছাত্রলীগ তার সিট এখনো দখলে রেখেছে।
এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি রেজোয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক আহসান হাবীব বলেন, আপনার কাছ থেকে আমি বিষয়টি শুনলাম। তাদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি মীমাংসা করার চেষ্টা করছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। হল প্রাধ্যক্ষ্যের সঙ্গে কথা বলে কি করা যায় দেখছি।
বাংলাদেশ সময়: ১৩১৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১০, ২০১৯
এএটি