ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

রাবি ছাত্রলীগের দু'পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৭

রাবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৯
রাবি ছাত্রলীগের দু'পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৭

রাবি: আবাসিক হলের গেস্ট রুমে বসাকে কেন্দ্র করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের প্রতিপক্ষ গ্রুপের এক কর্মীকে বর্তমান কমিটির দুই কর্মী মারধর করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর প্রতিবাদ করতে এসে মারধরের শিকার হয়েছেন প্রতিপক্ষ গ্রুপের আরও ছয় কর্মী। শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদার বখশ্ হলে এ ঘটনা ঘটে। 

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, দুই দফা মারধরে একজনের কপালে গুরুতর জখম হয়েছে। পরে তাকে উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যাল সেন্টারে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

বাকীদের প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।  

আহতরা হলেন- শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়াবিজ্ঞান বিভাগের অমিত হাসান লিমন, দর্শন বিভাগের একরাম হোসেন রিওন, মারুফ পারভেজ, রনি, জসিম, লোক প্রশাসন বিভাগের সোহেল, ইতিহাস বিভাগের রাজিব। তারা সবাই কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদ্য বিদায়ী কমিটির সদস্য সাকিবুল হাসান বাকির অনুসারী।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার দুপুর দেড়টার দিকে হলের গেস্টরুমে ছাত্রলীগকর্মী কামরুলসহ দু’জন বসেছিলেন। এ সময় অমিত হাসান লিমন তার তিন বান্ধবীকে নিয়ে গেস্টরুমে যায়। সে কামরুল ও তার বন্ধুকে গেস্টরুম থেকে চলে যেতে বলায় কামরুল ক্ষিপ্ত হয়ে যায়। তাদের কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে কামরুল ও তার বন্ধু মিলে লিমনকে উপুর্যপুরী মারধর করে। এতে লিমনের কপাল কেটে যায়। পরে লিমনকে তার বন্ধুরা উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যায়।  

এর পরপরই বাকির অনুসারী প্রায় অর্ধশত কর্মী মাদার বখশ্ হলে গিয়ে কামরুলের রুমের দরজা ধাক্কাধাক্কি শুরু করে এবং রুমের জানালা ভাঙচুর করে। খবর পেয়ে বর্তমান কমিটির দুই শতাধিক নেতাকর্মী হলের সামনে এসে অবস্থান নেন।  

বাকির অনুসারীদের মারধরের একটি ভিডিও বাংলানিউজের হাতে এসে পৌঁছেছে। ৪৭ সেকেন্ডের এই ভিডিওটিতে দেখা যায়, বৃত্ত, আরিফ বিন জহির, মিজানুর রহমান সিনহা, চঞ্চল কুমার অর্ক, সুব্রত মিলে দু’জনকে মারধর করছে।

প্রতিপক্ষকে মারধরের ঘটনায় পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়। খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি, পুলিশ ও ছাত্রলীগের সভাপতি, সম্পাদক এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ সময় হলের আশেপাশে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়ন ছিল।

ছাত্রলীগ নেতা সাকিবুল হাসান বাকি বাংলানিউজকে বলেন, ‘২০১৬ সালে আমি সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী ছিলাম। তবে আমি শাখা ছাত্রলীগে কোনো পদ পাইনি। গত তিন বছর হলো মেয়াদউত্তীর্ণ কমিটির এই নেতাকর্মীরা আমাদের নেতাকর্মীদের উপর নির্যাতন করছে। ’

তবে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া আহতরা ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নন বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘গেস্টরুমে বসা নিয়ে কামরুল ও লিমনের মধ্যে সামান্য ঝামেলা হয়েছিল। একপর্যায়ে সম্ভবত তাদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। ’ 

তিনি বলেন, ‘লিমন ছাত্রলীগকর্মী নন। সাংগঠনিক কার্যক্রমে কখনোই আমরা তাকে দেখিনি। তবে হলের বাইরে অপর ছয়জনকে মারধরের বিষয়টি তিনি অবগত নন বলে সাংবাদিকদের জানান।  

মাদার বখশ্ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক আব্দুল আলিম বাংলানিউজকে বলেন, কামরুল ও লিমন দু'জনই হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। আমি এখন ঢাকার পথে আছি। ঘটনাটি জানার পর হলে পুলিশ পাঠানোর জন্য বলেছি।

জানতে চাইলে প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, ‘হলে গেস্টরুমে বসা নিয়ে ঝামেলা হয়েছে শুনে আমি ঘটনাস্থলে আসি। আমি হল কর্তৃপক্ষ, পুলিশ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেছি। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। ’ 


বাংলাদেশ সময়: ১৫০১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৯
এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।