আর এসব কিছুর পর ভিসির অপসারণের দাবিতে আন্দোলন শেষ হওয়ার সাড়ে ৫ মাসের মাথায় দ্রুত সময়ের মধ্যে ভিসি নিয়োগের দাবিতে ববি শিক্ষার্থীরা নতুন করে আন্দোলনে নেমেছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের সামনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আলীম সালেহী, মহিউদ্দিন আহমেদ শিফাত, লোকমান হোসেন, ইকবাল মাহমুদ ও রাজু গাজীসহ অন্যরা।
বক্তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে সৎ ও যোগ্য ভিসি নিয়োগের জন্য রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানান।
ভিসি তাড়িয়ে আবার কেন ভিসি নিয়োগের আন্দোলন জানতে চাইলে শিক্ষার্থীরা জানান, তৎকালীণ ভিসি ছিলেন স্বৈরাচার। তার অনিয়ম-দুর্নীতি শিক্ষার্থীরা মুখ বুজে সহ্য করতে না পেরে অপসারণের দাবিতে আন্দোলন করা হয়েছিল। কিন্তু দীর্ঘ সাড়ে ৫ মাসেও নতুন ভিসি নিয়োগ না হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একামেডিক, প্রশাসনিক এবং উন্নয়ন কার্যক্রম একেবারে স্থবির হয়ে পড়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে একজন সৎ ও যোগ্য ব্যক্তিকে ভিসি নিয়োগের দাবি জানান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার বাহাউদ্দিন গোলাপ জানান, দীর্ঘদিন ধরে ভিসি না থাকায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আটকে আছে। সিন্ডিকেট কমিটি এবং একাডেমিক কাউন্সিলের সভা হয় না দীর্ঘদিন ধরে। এমনকি ১৭ ও ১৮ অক্টোবরের স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষাও স্থগিত করা হয়েছে। বিভিন্ন বিভাগের ফল প্রকাশ করা যাচ্ছে না। প্রশাসনিক কার্যক্রমও স্থবির হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় দ্রুত ভিসি নিয়োগ না হলে বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘ মেয়াদে অচলাবস্থার সৃষ্টি হবে বলে আশঙ্কা তার।
বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব শাখার সহকারী পরিচালক মো. আতিকুর রহমান জানান, ভিসি না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চলতি মাসের বেতন দেওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এছাড়া সব আর্থিক কার্যক্রম থমকে গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মুরশিদ আবেদীন বলেন, ভিসি না থাকার কারণে সব উন্নয়ন কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ঠিকাদারদের কোটি কোটি টাকার বিল আটকে গেছে। নতুন ভিসি নিয়োগ ছাড়া এ সংকট উত্তরণের কোনো পথ নেই।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর মিয়া বলেন, ভিসি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবক। তিনি না থানায় সব কর্মকাণ্ডে স্থবিরতা নেমে এসেছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে একজন ভিসি নিয়োগ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম সচল রাখার জন্য রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানান তিনি।
এর আগে গত ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের একটি অনুষ্ঠানে করা মন্তব্যকে কেন্দ্র করে ১ মাসেরও বেশি সময় ধরে শিক্ষার্থী আন্দোলনের মুখে মেয়াদ শেষের আগেই দেড় মাসের ছুটিতে যেতে বাধ্য হন তৎকালীণ উপাচার্য (ভিসি) প্রফেসর ড. এস এম ইমামুল হক। ছুটি কাটিয়ে গত ২৭ মে শেষ কার্যদিবস অতিবাহিত করেন তিনি। এরপর ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মাহবুব হাসান ভিসির রুটিন দায়িত্বে থাকলেও গত ৭ অক্টোবর তার ৪ বছরের মেয়াদ শেষ হয়। এর আগে থেকেই রেজিস্ট্রার এবং পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের পদ শূন্য রয়েছে। ২০১২ সালে শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর পর আজ পর্যন্ত উপ-উপাচার্য নিয়োগ হয়নি বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০১৯
এমএস/আরবি/