ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: করোনা সংক্রমণের কারণে দীর্ঘ এক বছরের বেশি সময় বন্ধ রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ধাপে ধাপে লকডাউন থাকা অবস্থায় সীমিত পরিসরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবকিছু খোলা হলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
দীর্ঘদিন সরাসরি একাডেমিক কার্যক্রম না থাকায় বিভিন্ন সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা শিক্ষাজীবন শেষ করার অনিশ্চয়তায় ভুগছেন। একইসঙ্গে চাকরিতে প্রবেশের সুযোগ-আবেদন কোনোটাই মিলছে না। এবার বিশ্ববিদ্যালয় খোলার দাবিতে আন্দোলনে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল-ক্যাম্পাস খুলে পরীক্ষা নেওয়ার দাবিতে আন্দোলনকারীদের সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ বাংলানিউজকে বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া এখন সব শিক্ষার্থী অভিভাবকের দাবি। কারণ আমরা দীর্ঘ এক বছরের বেশি পরীক্ষা থেকে দূরে। আমরা আগামী বৃহস্পতিবার (২৭ মে) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে স্মারকলিপি দেব। এরপর থেকে লাগাতার আন্দোলনে যাব। আর শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানাতে বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করব। গতকালও আমরা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছি।
ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী শরীফ বলেন, জানুয়ারিতে হল বন্ধ রেখে পরীক্ষার কথা ছিল, পরে অনলাইনে পরীক্ষার কথা বলে এখন আবার অন্য কথা বলছে। ২-৩ মাস পর ক্যাম্পাস খুলে দিতে পারে বা এক্সাম হবে শুনলেই আমরা তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলি। এখন করনার দ্বিতীয় ঢেউ চলে, তৃতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম ঢেউ কবে চলে আসে তা কেউ জানে না। দেশে ভ্যাকসিন নেই, কবে আসবে তাও নিশ্চিত না। এর মধ্যে সময় কিন্তু থেমে নেই, যত সময় যাচ্ছে চাকরির বয়স কমছে। আমরা দ্রুত শেষ করতে চাই।
তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রাইহান উদ্দীন বাংলানিউজকে বলেন, গণপরিবহন যদি এক সিট খালি রেখে চলতে পারে তাহলে দেড় বছর বন্ধ থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কেন এক বেঞ্চ খালি রেখে চালু করা যাবে না?
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দাবিতে অনলাইনেও সরব শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটউটের শিক্ষক সহযোগী অধ্যাপক মুজিবুর রহমান লিখেছেন, যথেষ্ট হয়েছে। এবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া দরকার।
ক্যাম্পাস খোলার বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, টিকা নিশ্চিত করেই বিশ্ববিদ্যালয় খোলার নির্দেশনা এসেছে।
এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, করোনা টিকা দেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) থেকে পাওয়া বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের তথ্য ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করোনা টিকা দেওয়া হবে। এরপর সব শিক্ষার্থীদের টিকার আওতায় আনা হবে। টিকা নিশ্চিত করার পরই বিশ্ববিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল খুলে দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২৩ ঘণ্টা, মে ২৬, ২০২১
এসকেবি/এমজেএফ