ঢাকা: দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ২০২৩ সাল থেকে সাপ্তাহিত ছুটি দুই দিন হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে মতিঝিলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) নতুন কারিকুলাম উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ তথ্য জানান।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে এখনই সাপ্তাহিক দুই দিন ছুটি আছে। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে কোথাও কোথাও এখন দুই দিন ছুটি আছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা যখন কারিকুলামের রূপরেখা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে গিয়েছিলাম, তখনই মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষায় দুই দিন ছুটি করতে চাই। পাঁচ দিন খুব মনোযোগ করে পড়বে তারপর দুই দিন ছুটি থাকা দরকার। প্রাথমিক একদিন প্রস্তাব করেছিল। প্রধানমন্ত্রী তখন প্রাথমিকের পক্ষ নিয়ে বললেন, আমাদেরও দুই দিন লাগে। আমরা ঠিক করেছি। সব শিক্ষাপ্রাতষ্ঠানেই দুই দিন হবে। এখন যারা পাইলটিংয়ে যাবে, তাদের দুই দিন ছুটি থাকবে। আশা করি, ২০২৩ সাল থেকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাপ্তাহিক ছুটি ২ দিন থাকবে।
নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়ন নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, একসঙ্গে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে কারিকুলাম বাস্তবায়ন করতে বিশাল আকারের বিনিয়োগ করতে হবে। কারিগরিতে কারিকুলাম বাস্তবায়ন করতে আমাদের ওয়ার্কশপ লাগবে, ল্যাবরেটরি লাগবে। প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অবকাঠামোগত বড় পরিবর্তন আনতে হবে। সমস্ত সরঞ্জাম দিতে হবে, শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে ল্যাবরেটরি অ্যাসিটেন্ট নিয়োগ করতে হবে। এটা একটি বড় বিনিয়োগ। শিক্ষায় আমাদের বড় বিনিয়োগ করতেই হবে।
শিক্ষায় মেগা প্রকল্প হবে জানিয়ে দীপু মনি বলেন, এটি বাস্তবায়ন হলে আমাদের সমস্যা থাকবে না। এখন যে নতুন কারিকুলাম সেখানে জীবন-জীবিকা অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এসব কাজ একবারে হবে না, ধাপে ধাপে হবে। অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বেসরকারি, তাদের অনেকেই নিজেরাই ল্যাবরেটরিসহ অনা কাজ করতে পারবে।
শিক্ষার্থীদের নির্দিষ্ট সময়ে সঠিক গন্তব্যে পৌঁছাতে নতুন কারিকুলাম করা হচ্ছে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমাদের প্রত্যাশা নতুন শিক্ষাক্রমের শিক্ষার্থীদের শুরু জ্ঞান অর্জন নয়, জ্ঞান অর্জনের সঙ্গে সঙ্গে দক্ষতা, সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি, মূল্যবোধ শিখতে পারবে। সব কিছুর সমন্বয় ঘটিয়ে শিক্ষার্থীরা দক্ষ মানুষ হবে, নিজেরা চিন্তা করতে শিখবে, চিন্তার জগত প্রসারিত হবে, শিক্ষার্থীরা যা শিখবে তা প্রয়োগ করা শিখবে, সমস্যা চিহ্নিত করতে পারবে, তার সমাধান খুঁজে বের করতে পারবে। আমরা শিক্ষার্থীদের সেভাবে গড়ে তুলতে চাই।
মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথে যে গন্তব্য আমরা ঠিক করেছি, সেই গন্তব্যে পৌঁছাতে হলে গতানুগতিক যে পড়াশোনা সেটি যথেষ্ট ছিল না। কাজেই আমরা নতুন শিক্ষাক্রমে যাচ্ছি, তাতে যেন সঠিক সময়ে সঠিক গন্তব্যে পৌঁছাতে পারি। সেই প্রত্যাশায় নতুন কারিকুলামের জন্য সবাই আমরা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যামিক ও উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান শুরুর দিন আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে মাধ্যমিক স্তরের ৬২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নতুন কারিকুলাম পাইলটিং শুরু হবে।
অনুষ্ঠানে ৬২ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ষষ্ঠ শ্রেণির বই বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী। এ সময় এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফরহাদুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২২
এমআইএইচ/জেএইচটি