ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদসহ তিনজনকে আইনি নোটিশ দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক রহমত উল্লাহ।
মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) জজ কোর্টের অ্যাডভোকেট মো. আমিনুল গণী টিটোর মাধ্যমে এই নোটিশ পাঠান তিনি।
নোটিশপ্রাপ্ত অন্যরা হলেন—বি-বার্তার সম্পাদক বাণী ইয়াসমিন হাসি ও প্রতিবেদক মহিউদ্দিন রাসেল। নোটিশ প্রাপ্তির তিন দিনের মধ্যে বক্তব্য দিতে বলা হয়েছে। অন্যথায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়।
নোটিশে বলা হয়, ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত আলোচনা সভায় আমার মোয়াক্কেল শিক্ষক সমিতির সভাপতির বক্তব্যে মুজিবনগর সরকার গঠনের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট হিসেবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ, ২৬ মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক স্বাধীনতার ঘোষণা, ১০ এপ্রিল, ১৯৭১ মুজিবনগর সরকার গঠন ও স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র এবং ১৭ এপ্রিল, ১৯৭১ মুজিবনগর সরকারের শপথ গ্রহণসহ মুক্তিযুদ্ধকালীন এই সরকারের কর্মপরিচালনা এবং মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী স্বাধীন বাংলাদেশ বিনির্মাণ বিষয়ে আলোচনা করেন। আলোচনায় মুজিবনগর সরকারে কে কোন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী হয়েছিলেন তা উল্লেখ করেন এবং মুজিবনগর সরকারের অন্যতম জাতীয় চার নেতাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং মুজিবনগর সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত কুলাঙ্গার এবং মুক্তিযুদ্ধকালীন ও পরবর্তীকালে জাতির সাথে বিশ্বাসঘাতকতাকারী বঙ্গবন্ধুর খুনি খন্দকার মোশতাক আহমেদের প্রতি তার ব্যক্তিগত ঘৃণা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। যেহেতু আমার মোয়াক্কেল ইতিহাসের তথ্য-উপাত্ত সম্বলিত বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, রাষ্ট্রপতিসহ জাতীয় চার নেতা যথাক্রমে সৈয়দ নজরুল ইসলাম (ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি), তাজউদ্দীন আহমদ (প্রধানমন্ত্রী), মন্ত্রিপরিষদের সদস্য এ এইচ এম কামারুজ্জামান, ক্যাপ্টেন এম. মনসুর আলী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে খন্দকার মোশতাক আহমেদের নাম উল্লেখ করেন, যাহা দালিলিকভাবে ইতিহাসের স্বীকৃত সত্য। তাই তাঁর বক্তব্যে কোনো ভুল ছিল না। আমার মোয়াক্কেল মূলত ১৭ এপ্রিল ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস শীর্ষক আলোচনায় ওই জাতীয় চার নেতার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং এই সঙ্গে খন্দকার মোশতাক আহমেদকে কুলাঙ্গার হিসেবে চিহ্নিত করিয়া ব্যক্তিগত ক্ষোভ ও ঘৃণা প্রকাশ করেন।
প্রফেসর সামাদকে উদ্দেশ্য করে নোটিশে বলা হয়, ওই বক্তব্যের প্রকৃত সত্য জানিয়াও উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে আমার মোয়াক্কেলের সম্মান কলঙ্কিত করার হীন উদ্দেশ্যে প্রকৃত সত্য গোপন করিয়া মনগড়াভাবে বক্তব্য সাজাইয়া আপনার বক্তব্য ‘আমার মোয়াক্কেল খন্দকার মোশতাক আহমেদকেও শ্রদ্ধা জানিয়েছেন’ মর্মে মিথ্যাচারের আশ্রয় নিয়া প্রতিবাদের নামে ঘোলাটে পরিস্থিতির সৃষ্টি করেন এবং আপনার বক্তব্যের মাধ্যমে ওই আলোচনা সভার সভাপতিকে প্রভাবিত করেন। যেহেতু আপনি আপনার রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ চরিতার্থ করার হীন উদ্দেশ্যে আমার মোয়াক্কেলের বক্তব্যের প্রকৃত সত্য গোপন করিয়া ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আপনার মনগড়া বিকৃত ও বিভ্রান্তিকর মিথ্যা কুৎসা বক্তব্য বিবার্তা২৪ পত্রিকার সম্পাদক ও প্রতিবেদকের সহায়তায় তাহাদের উল্লিখিত অনলাইন পত্রিকায় তথ্যসূত্র উল্লেখ না করিয়া প্রচার ও প্রকাশ করিয়া আমার মোয়াক্কেলের ব্যক্তিগত, পেশাগত, সামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থানকে কালিমা লেপন করিয়া সম্মান ক্ষুন্নসহ অপূরণীয় ক্ষতি সাধন করিয়াছেন। একটি বস্তুনিষ্ঠ বক্তব্যকে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে কলুষিত করিয়াছেন এবং আমার মোয়াক্কেলের সম্পূর্ণ বক্তব্যের উদ্ধৃতি কোনো পত্রিকায় সরবরাহ না করিয়া কেবল মাত্র আপনার কথিত প্রতিবাদের বিষয়টি উল্লেখ করিয়াছেন এবং আপনার সরবরাহকৃত ভ্রান্ত খণ্ডিত কথিত বক্তব্যের নামে অসত্য বক্তব্য ‘খুনি মোশতাকের প্রতি ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতির শ্রদ্ধা!’ শিরোনামে বিবার্তায় সংবাদ প্রকাশ করিয়াছেন। যেটার মাধ্যমে আমার মোয়াক্কেলের ব্যক্তিগত, পেশাগত, সামাজিক ও রাজনৈতিক সম্মান এবং ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করিয়া অপূরণীয় ক্ষতি সাধন করিয়াছেন এবং যাহার প্রেক্ষিতে ১৮ এপ্রিল বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন এবং ছাত্র সংগঠন আমার মোয়াক্কেলের বিরুদ্ধে হুমকিসহ কুশপুত্তলিকা দাহ করায় বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটে। এমতাবস্থায় আমার মোয়াক্কেল জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগিতেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০২২
এসকেবি/এমজেএফ