ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

ধর্ষণকাণ্ডে স্থগিত থাকা ঢাবির কমিটি বিলুপ্ত করল ছাত্র ইউনিয়ন

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৬ ঘণ্টা, জুন ৪, ২০২২
ধর্ষণকাণ্ডে স্থগিত থাকা ঢাবির কমিটি বিলুপ্ত করল ছাত্র ইউনিয়ন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: ধর্ষণকাণ্ডে স্থগিত থাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখার কমিটি এবার বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন।  

শনিবার (৪ জুন) সংগঠনের দপ্তর সম্পাদক রেজোয়ান হক মুক্তর পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

 

শুক্রবার (০৩ জুন) ঢাবির ডাকসু ক্যাফেটেরিয়ায় বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের ৪০তম সম্মেলন পরবর্তী ৪র্থ জাতীয় পরিষদ সভায় এসব সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সংগঠনের সভাপতি মো. ফয়েজ উল্লাহর সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন সাধারণ সম্পাদক দীপক শীলের সঞ্চালনায় সারাদেশের জাতীয় পরিষদ সদস্যরা।

এতে বলা হয়, ঢাবি সংসদের তৎকালীন প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক আকিফ আহমেদ ধর্ষণের বিষয়ে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ও লিঙ্গ সংবেদনশীল সেলের যৌথ তদন্ত প্রতিবেদন উপস্থাপিত হয়, এই গোটা বিষয়ে তদন্ত কমিটি কিছু সুস্পষ্ট অপরাধ লক্ষ্য করে, প্রথমত একটা ধর্ষণের ঘটনা জানার সঙ্গে সঙ্গে ছাত্র ইউনিয়নের মতো সংগঠনে লিখিত অভিযোগ পাওয়ার জন্যে অপেক্ষা করার কোন প্রয়োজন থাকতে পারে না, বরং যত দ্রুত সময়ের মধ্যে সম্ভব সেই ঘটনার তদন্ত করে তার শাস্তি নিশ্চিত করা বা সংগঠনের বক্তব্য পরিস্কার করার দরকার ছিল যা ওই ঘটনায় মারাত্মকভাবে অনুপস্থিত। অভিযোগের সঠিক তারিখ বার বার লুকানোর চেষ্টা করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ। ১৪ তারিখে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলেও সেটাকে শেষ পর্যন্ত ২০ তারিখ দেখানো হয়েছে। ভিকটিমের অভিযোগের তারিখও বদলানো হয়েছে। ১৯ তারিখের লিখিত অভিযোগ ২০ তারিখ দেখানো হয়েছে। যা স্পষ্টতই একটি অপরাধ। ঢাবি সংসদ তদন্তের নামে যেই প্রক্রিয়া অবলম্বন করেছে তাকে গ্রাম্য সালিশি প্রক্রিয়ার সঙ্গে তুলনা করা যায়। ভিকটিম ও অভিযুক্তকে একই সঙ্গে বসিয়ে এই রকমভাবে তদন্ত করার কোনো সুযোগ থাকতে পারে না। এমনকি তদন্ত কমিটি আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হয়েছে যে এটি একটি ফৌজদারি অপরাধ, বাংলাদেশের আইনেরও পরিপন্থি কাজ এ ঘটনা। ভিকটিমকে নানা হেনস্তার মাধ্যমে অসুস্থ করে তোলা হয়েছে তদন্তের নামে, যা আরো একটি অপরাধ বলে বিবেচিত। এসব ঘটনার তদন্তের নামে বা পরবর্তীতে যেসব কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে তাতে প্রমাণ হয় যে ধর্ষণের মতো একটি ঘটনা ঘটার পর উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়ার যোগ্যতা ঢাবি সংসদের নেতৃত্বের নেই। নারী সম্পর্কে এবং ধর্ষণ-নিপীড়ন সম্পর্কে তাদের বোঝাপড়া যথেষ্ট নয়। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের কাউন্সিলিংয়ের ব্যবস্থা করা উচিত বলে তদন্ত কমিটি মনে করে।  

এতে আরও বলা হয়, অভিযুক্ত ব্যক্তি নিজে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার পরেও দ্রুত সময়ের মধ্যে সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত না নিয়ে বিষয়টিকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা পরিলক্ষিত হয় যা বড় ধরনের অপরাধ বলে চিহ্নিত করে তদন্ত কমিটি। সম্পূর্ণ ঘটনায় যেই বিবৃতি সংগঠনের পেজ থেকে দেওয়া হয়েছে তার প্রক্রিয়া ও বিবৃতির ভাষায় নানা মাত্রিক অসংগতির মাধ্যমে অভিযুক্তর অপরাধকে লঘু প্রমাণের চেষ্টা করা হয় এবং ভিকটিম ব্লেইমিংয়ের সুযোগ তৈরি করে দেওয়া হয়। এসব বিষয় বিশ্লেষণ করে তদন্ত কমিটি তার প্রতিবেদনে ঢাবি সংসদকে বিলুপ্তের সুপারিশ করে। উপস্থিত জাতীয় পরিষদ সদস্যদের সম্মতিতে সিদ্ধান্তটি গৃহীত হয়।

এছাড়াও দীর্ঘদিন কেন্দ্রীয় কমিটির কাজে অনুপস্থিত থাকায়, কেন্দ্রীয় কমিটির শিক্ষা ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক মীম আরাফাত মানব, সমাজকল্যাণ সম্পাদক মুনিরা দিলশাদ ইলা, সাংস্কৃতিক সম্পাদক আসমানী আশাকে অব্যাহতি দেওয়া হয় ওই পদসমূহ পরবর্তীতে কো-অপ্ট করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৬ ঘণ্টা, জুন ০৪, ২০২২
এসকেবি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।