ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

শিক্ষা

নিরাপত্তা চেয়ে আবেদন করা ৪ শিক্ষার্থীর একজনের ওপর হামলা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০২ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০২২
নিরাপত্তা চেয়ে আবেদন করা ৪ শিক্ষার্থীর একজনের ওপর হামলা

বরিশাল: বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে নিরাপত্তা চেয়ে আবেদন জানানো চারজন শিক্ষার্থীর একজনের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে।

রোববার (১৪ আগস্ট) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের বিপরীত পাশে ক্যাম্পাসের বাইরে এ ঘটনা ঘটে।

আহত রাব্বি খানকে (রাজ) বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সে বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের কর্মী।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের কোনো কমিটি নেই। কিন্তু বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়রের অনুসারী মহিউদ্দীন আহমেদ সিফাত এবং স্থানীয় সাংসদ ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর অনুসারী অমিত হাসান রক্তিম নিজেদের ছাত্রলীগ নেতা দাবি করে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে। আহত রাব্বি রক্তিম গ্রুপের।

আহত রাব্বি জানান, রোববার ১২টায় তার ক্লাস টেস্ট পরীক্ষা ছিল। প্রক্টরের আশ্বাসে তিনি ক্যাম্পাসে পরীক্ষা দিতে যান। পরীক্ষা দিয়ে বের হয়ে বেলা ১টার দিকে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের সামনে গাড়ির অপেক্ষা করছিলেন। এ সময় চারজন সন্ত্রাসী এসে তাকে ধরে ফেলে। পেছনে আরও ১০-১২ জন ছিল। পরে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপরীতে নাজেমস নামের একটি হোটেলের সামনে নিয়ে যায়। সেখানে মহিউদ্দীন আহমেদ  সিফাসহ বেশ কয়েকজন অপেক্ষা করছিল। সেখানে নেওয়ার পর সিফাত তার এক কর্মীকে হল থেকে থেকে দা নিয়ে আসতে নির্দেশ দেয়। দা আনার পর সিফাত নিজেই দায়ের কাঠের হাতল দিয়ে তার বাম পায়ের হাঁটুতে এবং ডান পায়ের হাঁটুর নিচে পেটায়। এছাড়া তার সহযোগীরা তাঁর মাথায় ও পিঠে কিল, ঘুষি মেরে গুরুতর আহত করে। এভাবে পৌনে ২ ঘণ্টা আটকে নির্যাতন চালানো হয়। এ সময় প্রক্টর খবর পেয়ে সিফাতকে কল দিয়ে তাকে ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করেন। কিন্তু সিফাত অনুরোধ উপেক্ষা করে নির্যাতন অব্যাহত রাখেন। পরে   ২টা ৫১ মিনিটের দিকে প্রক্টর খোরশেদ আলম ঘটনাস্থলে এসে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছেন।

বিষয়টি তাৎক্ষণিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে জানিয়ে ছাত্রলীগের একাংশের নেতা অমিত হাসান রক্তিম বলেন, আমরা ১৫ আগস্টের কর্মসূচি পালন নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেছি। আলোচনা শেষে ক্যাম্পাস থেকে বাসায় ফেরার পথে রাব্বির ওপর এ হামলার ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ক্যাম্পাসের সামনে গেলেও তার আগেই রাব্বিকে উদ্ধার করা হয়।

এ বিষয়ে ছাত্রলীগের অপরাংশের নেতা ও সিটি মেয়রের অনুসারী মহিউদ্দিন আহমেদ সিফাত বলেন, রাব্বির সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক রাজনীতি নিয়ে কথা হয়েছে, নিজেদের মধ্যে উচ্চশব্দে কথাও হয়েছে। তবে তার ওপর হামলা বা নির্যাতনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। সে সম্পূর্ণ স্বাভাবিকভাবে সুস্থ অবস্থায় ক্যাম্পাস ত্যাগ করেছে। তবে রাব্বি অন্য কারো প্ররোচনায় এমন কথা বলতে পারে।

প্রক্টর মো. খোরশেদ আলম বলেন, চার শিক্ষার্থীর আবেদন করার পর তাদের নিয়মিত খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে। আবেদনের পর রাব্বিসহ সবাই নিয়মিত ভার্সিটি আসে। কোনো সমস্যা হয়নি। কিন্তু রোববার ভার্সিটি থেকে যাওয়ার সময় রাব্বিকে মারধর করেছে।

খবর পেয়ে রাব্বিকে উদ্ধার করেছেন জানিয়ে প্রক্টর বলেন, রাব্বি চিকিৎসা নেওয়ার প্রয়োজনের কথা জানালে তাকে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে কারা মারধর করেছে সেই বিষয়ে রাব্বির সঙ্গে কোনো কথা হয়নি।

এদিকে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন বন্দর থানা পুলিশ।

উল্লেখ্য গত ৪ ও ৭ আগস্ট নিজেদের নিরাপত্তা চেয়ে ববির ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী ইরাজ রব্বানী, রসায়ন বিভাগের সাইমুন ইসলাম, বাংলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন ও লোক প্রশাসন বিভাগের রাব্বি খান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোক্টর ও বিভাগীয় চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত আবেদন দিয়েছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ২১০২ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০২২
এমএস/কেএআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।