ধুনট (বগুড়া): ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ বড়-এমন কথা অনেক দিন আগে থেকে প্রচলিত আছে রাজনৈতিক অঙ্গনে। কিন্তু বগুড়ার ধুনট পৌর নির্বাচনে ভোটাররা রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রচলিত পুরানো এই বচন একেবারেই পাল্টে দিয়েছে।
এবারের নির্বাচনে এখন পর্যন্ত ব্যক্তির চেয়ে নৌকা ও ধানের শীষ প্রতীকের গুরুত্ব কম বলে মন্তব্য করেন ভোটাররা!
ধুনট পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শরীফুল ইসলাম খান (নৌকা)। বিএনপির মনোনীত মেয়র প্রার্থী পৌর বিএনপির সভাপতি সাবেক মেয়র আলিমুদ্দিন হারুন মন্ডল (ধানের শীষ)।
এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ধুনট উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বর্তমান মেয়র এজিএম বাদশাহ (জগ)।
আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন এজিএম বাদশাহ। কিন্তু তার চাওয়া-পাওয়া আমলে না নিয়ে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে শরীফুল ইসলাম খানকে। মনোনয়ন না পেয়ে এজিএম বাদশাহ স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে ভোট যুদ্ধে নেমেছেন। অনেকে এজিএম বাদশাহকে দলের বিদ্রোহী প্রার্থী মনে করেন। এদিকে, বিএনপির একক প্রার্থী আলিমুদ্দিন হারুন মন্ডল।
পৌর এলাকার একাধিক ভোটার জানায়, স্বাধীনতার পর থেকে ধুনট সদরে (বর্তমান পৌর এলাকা) আওয়ামী লীগের আধিপত্য বেশি। বর্তমানে আওয়ামী লীগের ঘাটি বলে পৌরবাসী দাবি করেন। সেই হিসেবে নৌকা মার্কার জয় পাওয়ার কথা। কিন্ত নৌকার ভোটে ভাগ বসিয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থীর জগ মার্কা। এখানে বিএনপির দলীয় ইমেজ খুব একটা প্রভাব ফেলতে পারছে না।
পৌরসভার ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এজিএম বাদশাহর ব্যক্তি ইমেজ ভাল। সামাজিক নানা কর্মকাণ্ডে অন্য দুই প্রার্থীর চেয়ে তার কদর বেশি। একজন ভাল মানুষ হিসেবে সর্বস্তরের মানুষের কাছে তার পরিচিতি রয়েছে।
গত পাঁচ বছর মেয়র হিসেবে সফলতার সঙ্গে পৌরসভা চালিয়েছেন। জনগণের কল্যাণে অনেক কাজই করেছেন। তার বিরুদ্ধে বড় ধরনের কোনো অনিয়ম কিংবা দুর্নীতি নেই। তাই এবারের নির্বাচন ভোটাররা দলীয় প্রতীক নৌকা কিংবা ধানের শীষের খুব একটা গুরুত্ব দিচ্ছেন না।
আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী শরীফুল ইসলাম খান। গত পৌরসভা নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন। কিন্তু ভোটারদের মনে খুব একটা জায়গা করে নিতে পারেননি। এবার তিনি দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন।
পৌর এলাকায় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক অবস্থাও ভাল। মানুষের মধ্যে ধারণা রয়েছে, ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী বিজয়ী হলে উন্নয়ন কাজ বেশি হবে। তারপরও দলের ইমেজ কাজে লাগাতে পারছেন না।
বিএনপির প্রার্থী আলিমুদ্দি মন্ডলের ব্যক্তি ইমেজ ভাল। বিএনপির ভোটই তার ভোট। এছাড়া ব্যক্তি ইমজে ভোট টানার মতো যোগ্যতাও তার রয়েছে। কিন্তু ধানের শীষ প্রতীকের কারণে ভোটারদের কাছে তার এ ইমেজ খুব কাজে আসছে না।
এবার ধুনট পৌরসভায় মোট ভোটার সংখ্যা ৯ হাজার ৯১৬ জন। এর মধ্যে নারী ৫ হাজার ১০ জন এবং পুরুষ ৪ হাজার ৯০৬ জন। এবার তিনটি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ১২জন নারী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০১৫
এসএইচ