ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

বিনোদন

বিজয় দিবস উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক নয় টিভি নাটক

বিনোদন ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১০
বিজয় দিবস উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক নয় টিভি নাটক

বিজয় দিবসে দেশের টিভি চ্যানেলগুলোতে থাকছে বিশেষ নাটক। মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে নির্মিত এবারের বিজয় দিবসের বিভিন্ন নাটকের প্রচারসূচি ও হাইলাইটস।



ঋণ শোধ

চ্যানেল আইয়ের বিজয় দিবসের বিশেষ নাটক ‘ঋণ শোধ’। এটি প্রচারিত হবে ১৬ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টা ৫০ মিনিটে। ফরিদুর রেজা সাগর ও খালিদ মাহমুদ মিঠুর রচনা এবং খালিদ মাহমুদ মিঠুর পরিচালনায় নাটকটিতে অভিনয় করেছেন তৌকীর আহমেদ, ফারহানা চুমকি, সামস সুমন, মৃণাল দত্ত, শামিম ভিস্তি, আহসানুল হক মিনু, আরিফ আকাশ দীপ্ত প্রমুখ।

নাটকে দেখা যাবে, ১৯৭১ সালে ১২ বছরের একটি ছেলে খুব কষ্ট করে ভাত জোগাড় করত তার মায়ের জন্য। ছেলেটির বাবা যুদ্ধ করেছেন দেশের স্বাধীনতার জন্য। রাজাকার সেলিমের জন্য তার মা, তার আশ্রয়দাতা দোকানদারসহ গ্রামের অসংখ্য মানুষ প্রাণ হারান। শিশুটি বড় হয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে শহীদমিনার নির্মাণের পদক্ষেপ নেয়। তখন বাধা হয়ে দাঁড়ায় সেই রাজাকার অধ্যাপক সেলিম।

একাত্তরের মানবতাবিরোধী কাজের জন্য পাকবাহিনীর এই দোসরকে একসময় সেই ছেলেটিই দাঁড় করায় বিচারের কাঠগড়ায়।

আলোর মিছিলে ওরা

এনটিভিতে বিজয় দিবস উপলে ১৬ ডিসেম্বর রাত ৯টায় প্রচারিত হবে বিশেষ নাটক ‘আলোর মিছিলে ওরা’। ওয়াহিদ ইবনে রেজার রচনা ও আলভী আহমেদের পরিচালনায় নাটকটিতে অভিনয় করেছেন সজল, সুমাইয়া শিমু ও জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়। এতে দেখা যাবে আর্কিটেক্ট ইফতেখার একজন শখের ফটোগ্রাফার। শখটা তার বাবা জাবীর সাহেবের কাছ থেকে পাওয়া। বাপ-বেটার সম্পর্ক বন্ধুর মত। মা ছাড়া বড় হওয়া ইফতেখারের কাছে তার মুক্তিযোদ্ধা বাবা একজন লিজেন্ড। তার খুব শখ বাবার যুদ্ধের গল্প নিয়ে সে একটা সিনেমা বানাবে। এই সিনেমার কথা মাথায় নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের এক ছবি প্রদর্শনীতে ইফতেখারের পরিচয় শর্মীর সাথে। শর্মী, সদ্য লন্ডন ফিল্ম স্কুল থেকে ফিল্ম ডিরেকশনের ওপর পড়াশোনা করে আসা, যার জীবনের ল্য মুক্তিযুদ্ধের গল্প নিয়ে সিনেমা বানিয়ে সারা বিশ্বের কাছে তা পৌঁছে দেওয়া। এখান থেকেই দুজনের বন্ধুত্বের শুরু। ইফতেখার তার বাবাকে সিনেমার মূল চরিত্র করে স্ক্রিপ্ট সাজিয়ে ফেলে। কিন্তু শর্মীর চোখে কিছু অসামঞ্জস্য ধরা পড়ে। ইফতেখার সেগুলো পাত্তাই দেয় না। দুজনে মিলে ইফতেখারের বাবা যেখানে যুদ্ধ করেছে, সেখানে রিসার্চে গেলে একজন প্রবীণ মুক্তিযোদ্ধার সাথে তাদের পরিচয় হয়। কথায় কথায় তিনি জাবীর সাহেবের আসল পরিচয় বলে ফেলেন। জানা যায়, জাবীর সাহেব আসলে রাজাকার ছিলেন। ইফতেখার বৃদ্ধের কথা বিশ্বাস করতে পারে না। ঘটনা নাটকীয়ভাবে এগিয়ে যায়।

একটি লাল শাড়ির গল্প

বাংলাভিশনে বিজয় দিবস উপলে ১৬ ডিসেম্বর রাত ৯টায় প্রচার হবে বিশেষ নাটক ‘একটি লাল শাড়ির গল্প’। মোরশেদ চৌধুরীর রচনা ও কমল চাকমার পরিচালনায় বাংলাভিশনের নিজস্ব প্রযোজনায় নির্মিত এ নাটকটিতে অভিনয় করেছেন আনিসুর রহমান মিলন, মীম, আজাদ আবুল কালাম, গোলাম ফরিদা ছন্দা, জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ। কাহিনীর পটভূমি একাত্তরের মার্চ থেকে ডিসেম্বর। এতে দেখা যাবে, জাহেদ সাহেব একটি অফিসের কর্মকর্তা। স্ত্রী আজরা এবং দুই সন্তান তানিয়া ও চিন্টু, মা মনোয়ারা, ছোট বোন কেয়াকে নিয়ে তার পরিবার। জাহেদের সহকর্মী আকরাম, মিজান, আজাদ, রহমত। অফিসের বড় অফিসার তাহের সাহেব বেশ চিন্তিত তৎকালীন দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে এবং এ ব্যাপারে প্রায় সময় জাহেদ সাহেবের সঙ্গে নীরবে নানা বুদ্ধি-পরামর্শ করেন। তাহের সাহেব একদিন উর্দু শেখার বই নিয়ে অফিসে চলে আসেন, যাতে পাকিস্তানিরা তাকে নিজেদের লোক মনে করে। জাহেদ সাহেবকেও ওই বই দেখিয়ে পরামর্শ দেন উর্দু ভাষাটা জেনে রাখতে। জাহেদের বাড়িতে একদিন হঠাৎ চলে আসে তার দূরসম্পর্কীয় আত্মীয় হাসান। হাসান মূলত গল্পের মূল নায়ক এবং মুক্তিযোদ্ধা। জাহেদের মা মনোয়ারা পাকিস্তানি বাহিনীর ভয়ে ভীষণ চিন্তিত।   হাসান এ বাড়িতে আসার পর দু-একজন মুক্তিযোদ্ধা ভিুকের বেশে দেখা করতে আসে। জাহেদের ছোট মেয়ে তানিয়া একদিন নাচের জন্য হাসানের কাছে একটি লাল শাড়ি দাবি করে এবং হাসান তা কিনে দেয় তানিয়াকে। যুদ্ধকালীন নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য জাহেদের পরিবার যখন বাড়ি ছেড়ে চলে যায়, তখন বাড়িতে থাকে শুধু জাহেদ সাহেব আর হাসান। একদিন হাসানকে পাকিস্তানি বাহিনীর লোকজন জাহেদ সাহেবের সামনে থেকে ধরে নিয়ে যায়। অবশেষে যুদ্ধ শেষ, দেশ স্বাধীন হয়। নিরাপদ আশ্রয়ে থাকা মানুষ যার যার ভিটেবাড়িতে ফিরে আসে কিন্তু ফিরে আসে না হাসান, তবে হাসানের স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে রায়ের বাজারের ডোবাজলে শুধু পাওয়া যায় হাসানের চোখ বাঁধা অবস্থায় সেই লাল শাড়িটা।

বীরমাতা

আরটিভির বিজয় দিবসের বিশেষ নাটক ‘বীরমাতা’। এটি প্রচারিত হবে ১৬ ডিসেম্বর রাত ৯টা ২০ মিনিটে। মাসুম শাহরিয়ারের নাট্যরূপে নাটকটি পরিচালনা করেছেন হাবিব মাসুদ। নাটকটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন ফেরদৌসী মজুমদার, আনিসুর রহমান মিলন, নওশীন, ঝুনা চৌধুরী, মানস বন্দ্যোপাধ্যায়, রিয়া, সাইফ আহমেদ সাঈদ, তারিক স্বপন, আশীষ চৌধুরী প্রমুখ।

নাটকে দেখা যাবে, হাসান মাহমুদ সদ্য পাস করা যুবক। পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছে সাংবাদিকতা। পত্রিকার সম্পাদক তাকে শেষ সুযোগ দিয়েছে ১৬ ডিসেম্বর পত্রিকার বিশেষ সংখ্যার জন্য দেশের প্রত্যন্ত এলাকার একজন বীরাঙ্গনার সাাৎকারসহ মূল ফিচার করতে হবে তাকে। অন্যথায় তার চাকরি থাকবে না। মাহমুদ চলল কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর থানার গুনাইগাছ ইউনিয়নে বীরাঙ্গনা রাবেয়া খাতুনের গ্রামে। উলিপুর পৌঁছে রাবেয়া খাতুনের বাড়ি যাবার পথেই সে পেয়ে যায় অনেক তথ্য। জানতে পারে, গ্রামবাসীর বিভিন্ন কথা সহ্য করতে না পেরে অনেক আগেই বাড়ি ছাড়া হয়েছে বৃদ্ধার একমাত্র সন্তান। হানাদারের হাতে নিহত স্বামীর বাড়িভিটা আর দুই কানি জমি আকড়ে ধরে অসুস্থ বৃদ্ধা রাবেয়া খাতুন সন্তানের ফিরে আসার আশায় মৃত্যুর দিন গুনছে। তার দৃঢ় বিশ্বাস দেশ একদিন তাকে বীরাঙ্গনার যথাযোগ্য সম্মান দেবে, ফিরিয়ে দেবে তার সন্তানকে। মাহমুদের পরিচয় পেয়ে বীরাঙ্গনা রাবেয়া অগ্নিমূর্তি ধারণ করে। তার কথা ‘পেত্তেক বছর তোমরা আইসেন বাহে। ক্যান আইসেন- ওগলা কতা শুনবার জন্যে? তাতে তোমার না হয় ম্যালা লাভ হয়, মোর তাতে কী হয়? মোর ছাওয়া ফিরি আইসবে? মোর স্বামী ফিরি আইসবে? মোর দুঃখকষ্ট কমি গেইছে? মোক তোমরা মুক্তিযোদ্ধার সম্মান দিছেন?’ একজন সাংবাদিকের অভিজ্ঞতায় ‘বীরমাতা’ ছবিটিতে এ রকম কিছু মানুষের জীবনচিত্র ও তাদের আশা স্বপ্ন ভরা এক বাংলাদেশকে তুলে আনে বিভিন্ন ঘটনা প্রবাহের মাধ্যমে ।


... এবং অতঃপর

একুশে টিভির বিজয় দিবসের বিশেষ নাটক ‘...এবং অতঃপর’। এটি প্রচারিত হবে ১৬ ডিসেম্বর রাত ১০টা ১০ মিনিটে। ইফতেখার আহমেদ ফাহমির রচনা ও পরিচালনায় এ নাটকে যারা অভিনয় করছেন সবাই নারী। অভিনয়ে রয়েছেন তানিয়া আহমেদ, সুমাইয়া শিমু, অর্ষা, লাবণ্য, আনিকাসহ অনেকে।
১৯৭১ সালের প্রবল যুদ্ধের সময় মা, মেয়ে, বোন ও  কাজের মেয়ে নিয়ে মহাসংকটে থাকা একটি পরিবারকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে নাটকের গল্প। চারদিকে চলছে অবিরাম হত্যা ও লুটপাট। মা-বোনদের বাইরে বের হওয়া তো দূরের কথা, ঘরে রাখাও হুমকি। সেই অত্যাচারের হাত থেকে নিজেদের রা করার জন্য পালিয়ে বেড়াতে হয় ঘরের মা-বোনদের। ২০১০ সাল দেশ স্বাধীন। নেই কোন পাক হানাদার, নেই রাজাকার। তবু সেই সময়ের মা-বোনদের মতো এই সময়েও তারা পরাধীন। ঘর থেকে বের হতে পারে না কিছু বখাটের জন্য। তাদের তিক্ত অশালীন কথার চাপে প্রতিনিয়ত কাটাতে হয় দিন। জীবন চালানোর তাগিদে ঘর থেকে বের হয়ে শুনতে হয় নানা কথা। কখনো বা ইজ্জত বাঁচাতে হারাতে হয় প্রাণ। এভাবেই দুই সময়ের গল্প নিয়ে এগিয়ে যায় নাটকের কাহিনী।

কাঁটা

দেশ টিভিতে বিজয় দিবস উপলক্ষে ১৬ ডিসেম্বর রাত ১১টা ৫৫ মিনিটে প্রচারিত হবে নাটক ‘কাঁটা’। রচনা শহীদুল জহির, পরিচালনা অনিমেষ আইচ। অভিনয় করেছেন মামুনুর রশীদ, শহিদুজ্জামান সেলিম, মোশারফ করিম, দীপান্বিতা, অপূর্ব মজুমদার প্রমুখ। নাটকে দেখা যাবে, স্বপন এবং তার স্ত্রী সবিতা ভূতের গলির আজিজ মোল্লার বাড়িতে ঘর ভাড়া নেয়। ঘর ভাড়া নেয়ার সময় মহল্লাবাসীরা স্বপন এবং সবিতাকে এই বাড়িতে থাকতে মানা করে। কারণ এই বাড়িতে একটা কুয়া আছে। কুয়ার মধ্যে অশুভ কিছু। এর আগে আজিজ মোল্লার বাড়িতে স্বপন-সবিতা নামে আরেক দম্পতি থাকতে এসেছিলো এবং তারা কুয়ায় পড়ে মারা যায়। মহল্লার প্রবীণরা জানায়, ১৯৭১ সালে এই আজিজ মোল্লার বাড়িতে স্বপন-সবিতা নামে আরেকটি দম্পতি ছিলো, তারাও এই কুয়ায় পড়ে যায় কিংবা রাজাকারদের হাত থেকে বাঁচার জন্য মহল্লাবাসী সেই স্বপন-সবিতাকে কুয়ায় ফেলে দেয়। বার বার স্বপন-সবিতারা কেন আজিজ মোল্লার বাড়িতে ঘর ভাড়া নিতে আসে, আর কেনই বা তারা কুয়ায় পড়ে যায়; ব্যাপারটা নিয়ে ভূতের গলির লোকেদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়। তারা কুয়ার মুখ আটকে দিতে চায় কিন্তু পারে না।

মুক্তিযুদ্ধ ’৭১

দেশ টিভিতে এবারের বিজয়ের মাসের প্রথম দিন থেকে শুরু হয়েছিল ১৬ পর্বের ধারাবাহিক নাটক ‘মুক্তিযুদ্ধ-৭১’। প্রতিদিনের এই ধারাবাহিকের শেষ পর্ব প্রচারিত হবে ১৬ ডিসেম্বর রাত ৭টা ৪৫ মিনিটে। যুদ্ধজীবনের বাস্তব চিত্র নিয়ে কথা সাহিত্যিক মাহবুব আলমের উপন্যাস ‘গেরিলা থেকে সম্মুখযুদ্ধে’। নাটকটির চিত্রনাট্য লিখেছেন মহিউদ্দীন আহমেদ, পরিচালনা করেছেন পারভেজ আমীন। নাটকে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করছেন আহমেদ রুবেল, রওনক হাসান, মাসুদ আলী খান, শারমিন শীলা, নওশবা এবং বাংলাদেশের গ্র“প থিয়েটারের নাট্যকর্মীরা। দিনাজপুরের নাটকে প্রত্যন্ত  এলাকায় এক গেরিলা কমান্ডারের প্রতিদিনের যুদ্ধকথার ভেতর দিয়ে সহস্র কণ্ঠে কথা বলে উঠেছে মুক্তিসংগ্রামী বাংলাদেশ। যেন একাত্তরে নয়, এখন, এই মুহূর্তে সেই মহান যুদ্ধ সংঘটিত হচ্ছে চোখের সামনে । আর সেই যুদ্ধে অনিবার্য অংশীদার সাধারণ মানুষের বীরত্ব সাহস ও তাদের নিঃশঙ্ক আত্মদান, ছোট আর বড়ো।

এ কোন ভোর

মোহনা টেলিভিশনে বিজয় দিবসের বিশেষ নাটক ‘এ কোন ভোর’। এটি প্রচারিত হবে ১৭ ডিসেম্বর শুক্রবার রাত ৯টায়। নাটকটি রচনা করেছেন ওয়াহিদ লাবু, পরিচালনায় রয়েছেন এফ কিউ পিটার। অভিনয় করেছেন মাসুম আজিজ, বন্যা মির্জা, সাঈদ বাবু, শিশির, আরজু, ইটি, শুভ্রা, শামীম খন্দকার, জহির করিম, মামুন, রাজা, অপু, দীপ প্রমুখ।

এতে দেখা যাবে স্বাধীনতার সংগ্রামে এক পা হারিয়ে মেয়ে বৃষ্টি আর ছেলে সংগ্রামকে নিয়ে কোনো রকম দিন পার করছিল একজন মুক্তিযোদ্ধা বাবা। অভাব-অনটনে চাকরির জন্য যখন মেয়ে বৃষ্টি বাবার আদর্শকে বুকে লালন চেষ্টা করতে থাকে, তখনই পরিচয় হয় পুলিশ অফিসার রাসেলের সাথে। চাকরির সোনার হরিণের পেছন ছুটতে ছুটতে সংগ্রাম বুঝতে পারে এই স্বাধীন দেশে চাকরি পেতে হলে বাবার আদর্শকে বলি দিতে হবে। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা বাবাকে সে কোনোমতেই বোঝাতে পারে না, তারা যে সোনালি স্বপ্ন নিয়ে দেশ স্বাধীন করেছে আজও সে স্বপ্ন অন্ধকারে রয়ে গেছে।

অলিভ গাছ, ক্রিস্টাল নদী

দেশ টিভিতে বিজয় দিবস উপলক্ষে ১৭ ডিসেম্বর রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে প্রচারিত হবে নাটক ‘অলিভ গাছ, ক্রিস্টাল নদী’। নাটকটি রচনা ও পরিচালনা করেছেন মাসুদ হাসান উজ্জ্বল। অভিনয় রয়েছেন মোরশেদ নোমান, আনুভা, সুবর্ণা মুস্তাফা, শাহাদৎ, গাজী রাকায়েত। এতে দেখা যাবে, একটি ফুলের দোকানের ম্যানেজার জোসেফ। একদিন ক্যাশ কাউন্টারে বসে জোসেফ তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। হঠাৎ তার সামনে এসে দাঁড়ায় ফুটফুটে এক শিশুকন্যা আনুভা। আনুভার কথায় ঘুম ভাঙ্গে জোসেফের। চমকে যায় জোসেফ, আরো চমকায় যখন সে বুঝতে পারে মেয়েটি অন্ধ। জোসেফের মনে পড়ে যায় তার ১১ বছরের শিশুকন্যা কোয়েলের কথা। মুক্তিযুদ্ধের সময় কোয়েলের বয়স ছিল ১১। সে ছিল অন্ধ। গুলির শব্দ শুনলে নিরাপত্তাহীনতায় কেমন দিগি¦দিক হয়ে যেত! সেই কোয়েল বাবার সামনে ধর্ষিত হয়ে প্রাণ হারালো অন্ধচোখে রাজ্যের বিস্ময় নিয়ে। সেই থেকে সর্বক্ষণ দুঃস্বপ্ন তাড়া করে ফেরে জোসেফকে। আনুভা এক অদ্ভুত জগতে বসবাস করে। অন্ধ হলেও সে অনেকের চেয়ে বেশিই দেখতে পায় বলেই তার ধারণা। তার নিজস্ব জগতে আছে একটি স্ফটিক নদী, তার পাশে একটা জলপাই গাছ। নিস্তরঙ্গ চকচকে এই নদীতে কিছুই বদল্য়া না, এমনকি নিজের ছায়াটাও। আনুভা তার প্রিয় মানুষদেরকে উপহার হিসেবে
তার কল্পনার অলিভ গাছের পাতা দিয়ে থাকে। ক্রমেই জোসেফের সাথে এই ক্ষুদে দার্শনিকের বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। আনুভার এমন একজন বন্ধু হওয়ার কারণে তার বাবা-মাও স্বস্তি বোধ করেন। আনুভা কাকে কাকে অলিভ গাছের পাতা দিয়েছে জানতে চায় জোসেফ। অনেকেরই কথা বলে আনুভা, কিন্তু একটাই অনুযোগ তার দাদুকে পাতা দিতে গেলেই সেই পাতা শুকিয়ে গুড়ো গুড়ো হয়ে ঝরে পড়ে। দাদু তাকে এত আদর করে, বেড়াতে নিয়ে যায়, তবুও দাদুকে পাতা দিতে না পারায় অনেক দুঃখ আনুভার মনে। দাদুর ব্যাপারে আগ্রহী হয় জোসেফ। তার খোঁজখবর করতে গিয়ে জানতে পারে আনুভার দাদু সৈয়দ আরফান উল্লাহ কৃষি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রিত্ব পাওয়ার অপেক্ষায় আছেন। জোসেফের চোখে ভেসে ওঠে ’৭১। এই আরফান উল্লাহই ’৭১-এ তার চোখের সামনে ধর্ষণ করেছিল তার শিশুকন্যা আনুভাকে। তিন দিন বিনা চিকিৎসায় ধুঁকে ধুঁকে মারা যায় কোয়েল। জোসেফ ঠা-া মাথায় আনুভাকে বলে, তোমার দাদুকে নিয়ে একবার বেড়াতে আসতে পারো যে কোনো খোলা জায়গায়? আনুভা বলে, হ্যাঁ পারি। প্রতিশ্রুতিমতো আনুভা তার দাদুকে নিয়ে আসে একটা খোলা প্রান্তরে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad