ঢাকা, শনিবার, ১২ আশ্বিন ১৪৩১, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিনোদন

বর্ণাঢ্য ‘ইত্যাদি’ বর্ণিল খাগড়াছড়ি

অপু দত্ত, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০১৫
বর্ণাঢ্য ‘ইত্যাদি’ বর্ণিল খাগড়াছড়ি

খাগড়াছড়ি: কথা ছিল বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে প্রবেশ পথ খুলে দেওয়া হবে। কিন্তু এর আগ থেকেই মানুষের ভিড় দেখে গেট খুলে দেওয়া হয় বিকেল ৪টায়।

দীর্ঘ লাইনে নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আমন্ত্রিত অতিথিরা একে একে প্রবেশ করলেন খাগড়াছড়ি ক্যান্টনমেন্টের গিরি শোভা মাঠে।  
 
উত্তরমুখী মঞ্চের চারপাশে চোখ জুড়ানো আলোকচ্ছটা।   পাহাড় আদলে সাজানো মঞ্চ। একাধিক ক্যামেরা পরিবেষ্টিত মাঠের চারপাশ।  
 
কখন শুরু হবে বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত দেশের জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি 'র শুটিং। কখন দেখা মিলবে অনুষ্ঠানটির প্রাণ হানিফ সংকেতের। নির্ধারিত সময়ের ঠিক এক ঘণ্টা পর মঞ্চে এলেন হানিফ সংকেত,যার গ্রন্থনা, পরিকল্পনা, পরিচালনা ও উপস্থাপনায় আজকেই এই ইত্যাদি।
 
অনুষ্ঠানে বাঙালি, চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরার তিনশ শিল্পী চারটি ভাষায় তৈরি করা একটি দেশের গানে তালে নৃত্য পরিবেশন করেন। নাচটিতে বর্ণাঢ্য পোশাকে ফুটে উঠে পাহাড়ে বসবাসরত বিভিন্ন জাতিগোষ্টীর সংস্কৃতি।
 
অনুষ্ঠানে ছিল দর্শক পর্ব। এতে খাগড়াছড়ির গোড়াপত্তন, পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয়ের জন্ম, রিছাং ঝরনার অর্থ খাগড়াছড়িতে নিয়ে আরো নানা প্রশ্ন উঠে আসে। পরে সঠিক উত্তরদাতা তিনজনকে নিয়ে দ্বিতীয় পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।  
 
এই প্রতিযোগিতার ফাঁকে ক্ষুদ্র জনগোষ্টীর জুম নৃত্য, বোতল নৃত্য, বাঁশ নৃত্য পরিবেশন করা হয়। প্রদর্শন করা হয় স্থানীয় শিল্পীদের তৈরি করা বাদ্যযন্ত্র। এ সময় বিজয়ীদের নৃত্য শিল্পীদের মত গানের তালে নাচতে বলা হয়। তিনটি ধাপ পার করে দর্শক পর্বে প্রথম হন মানিকছড়ি মরাডুলু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা সানাই মারমা। তাকে কম্পিউটার, বই, গাছের চারা উপহার দেওয়া হয়। বাকি দু'জনকে বই ও গাছের চারা উপহার দেওয়া হয়।
 

অনুষ্ঠানের নিয়মিত পর্ব নানী-নাতনীতে উঠে আসে খাগড়াছড়ির সৌন্দর্যের গল্প। হাসি ঠাট্টার ফাঁকে ফাঁকে দর্শনীয় স্থানগুলোকে পরিচিত করা হয়।  
 
দেশের জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী এন্ড্রু কিশোর মঞ্চে আসতেই করতালিতে মুখর হয় চারপাশ। ‘ভালোবাসার বাঁধন দিয়ে মানুষগুলো বাঁধা, নানা জাতি সত্তা যেন এক মালাতে গাঁথা। ইদে পূজা বড়দিনে বৌদ্ধ পূর্ণিমাতে. আনন্দ আর ভক্তিরসে মিলি সবাই  সাথে। শান্তি সুখের দাবিতে বৈশাখী-বৈসাবীতে প্রাণের পরিবেশ আহা, এইতো আমার দেশ। ’ গানের সুরে সুরে তিনি জানালেন পাহাড়ে বসবাসরত বিভিন্ন জাতি-গোষ্টীর কৃষ্টি, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের গল্প।
 
এদিকে  হানিফ সংকেত মঞ্চে এসেই স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে জানালেন খাগড়াছড়ি নিয়ে নিজের মনের কথা। তিনি বলেন, ‘এই অঞ্চলকে বাইরে থেকে পানিশম্যান্ট এরিয়া হিসেবে ভাবা হলেও আসলে তা নয়। এখানে না আসলেই বোঝা যাবেনা অপার সৌন্দর্যের লীলাভূমি এই পার্বত্য জেলা।  
 
তিনি দর্শকদের প্রশংসা করে বলেন, অন্য যেই জেলাগুলোতে ইত্যাদির শুটিং হতো সেখানে দর্শকদের সামাল দিতে অনেক কষ্ট হতো কিন্তু এখানকার দর্শক অনেক ধৈর্য্যশীল। জানালেন কিভাবে অনুষ্ঠানটির দৃশ্য ধারণ করা হবে।
 
ইত্যাদি অনুষ্ঠানের সত্তর ভাগ শুটিং এর কাজ বাইরে শেষ করা হয়। বাকি  ত্রিশ ভাগ আজ মঞ্চে করা হয়। এছাড়াও মঞ্চের আরো পর্বের শুটিং আগেভাগে করা হয়েছে। অনুষ্ঠানটিকে ঘিরে খাগড়াছড়িতে ছিল উৎসবের আমেজ।   তিন হাজার আসনের ব্যবস্থা থাকলেও এতে প্রায় ৫ হাজার দর্শক ছাড়িয়ে যায়। আগামী ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠানটি প্রচার করা হবে বলে জানা গেছে।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৮১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।