হাফ সেঞ্চুরি করলেন আমির খান। ১৪ মার্চ উদযাপন করা হলো তার ৫০তম জন্মদিন।
* প্রেমিক পুরুষ আমির
প্রেমের জন্য রূপালি পর্দায় অনেকবার পরিবারের বিরুদ্ধে গিয়ে কাজ করেছেন আমির খান। ‘কেয়ামত সে কেয়ামত তাক’ (১৯৮৮) ছবিতে তিনি আর জুহি চাওলা নিজেদের পরিবারের মধ্যে দ্বন্দ্ব ভুলে পালিয়ে যান। যদিও শেষে দু’জনকেই মরতে হয়েছে। এরপর ‘দিল’ (১৯৯০, মাধুরী দীক্ষিত), ‘আফসানা পেয়ার কা’ (১৯৯১, নীলম), ‘দৌলত কি জাং’ (১৯৯২, জুহি চাওলা), ‘ইশক’ (১৯৯৭, জুহি চাওলা), ‘রাজা হিন্দুস্তানি’ (১৯৯৬, কারিশমা কাপুর), ‘দিল চাহতা হ্যায়’ (২০০১, প্রীতি জিনতা) ছবিতে অভিভাবকদের সঙ্গে ভালোবাসার জন্য লড়েছেন তিনি।
* আলসে আমির
‘সত্যমেভ জয়তে’ অনুষ্ঠানের অনেক আগের কথা। তখন অকর্মা চরিত্রে তার অভিনয় দর্শকদের মন মাতিয়েছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় ‘জো জিতা ওহি সিকান্দার’ (১৯৯২) ছবির সঞ্জয়লাল শর্ম, ‘আন্দাজ আপনা আপনা’র (১৯৯৪) হাসিখুশি অমর, ‘রঙ দে বাসন্তী’র (২০০৬) মোটরবাইকপ্রেমী ডিজে এবং ‘ইশক’ (১৯৯৭) ছবির রাজা চারপাশের মানুষের তুলনায় অনেক কুঁড়ে।
* আমির যখন খেলার মাঠের নায়ক
আমির যে কতোটা ক্রীড়াপ্রেমী তা বোঝা গেছে ‘আওয়াল নাম্বার’ (১৯৯০) এবং ‘লগান’ (২০০১) ছবিতে তাকে ক্রিকেট খেলতে দেখে। এর আগে ‘জো জিতা ওহি সিকান্দার’ (১৯৯২) ছবিতে স্কুলের হয়ে সাইকেল দৌড়ে শিরোপা জেতেন তিনি। এখন তিনি ‘দঙ্গল’ নামের ছবিতে কুস্তিগীর মহাবীর ফোগাত চরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
* প্রতিশোধপরাণ আমির
‘রাখ’ (১৯৮৯) এবং ‘গজিনি’ (২০০৮) দুটি ছবিতেই আমিরের চরিত্র শত্রুদের মৃত্যু উপহার দিয়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য হয়ে ওঠে নজরদার। ‘রাখ’ ছবিতে প্রেমিকাকে ধর্ষণের বদলা নেন তিনি। আর ‘গজিনি’তে প্রেমিকার হত্যাকারীদের খুন করার নেশায় মত্ত হয়ে ওঠেন। এ ছাড়া ‘রং দে বাসন্তী’ (২০০৬) ছবিতে এয়ার ফোর্স কর্মকর্তা বন্ধুর মৃত্যুর জন্য বৈমানিককে সরকার দায়ী ঘোষণার পর আমিরের বন্ধুরা আইন নিজের হাতে তুলে নেন। ‘ধুম থ্রি’ (২০১৩) ছবিতেও প্রতিশোধের চাওয়া থেকেই অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে যান তিনি।
* ভবঘুরে আমির
আমির খান অভিনীত জনপ্রিয় চরিত্রগুলোর মধ্যে অন্যতম ‘রঙ্গীলা’র (১৯৯৫) মুন্না। রঙ-বেরঙের উদ্ভট পোশাক, পথচলতি চতুর কথাবার্তা আর এক লাইনের হাসি এনে দেওয়া সংলাপের সম্মিলনে চরিত্রটিকে চিরসবুজ করে রেখেছেন তিনি। ‘গুলাম’ (১৯৯৮) ছবির সিদ্ধু চরিত্রটিও মুন্নার মতোই বোহেমিয়ান আর উচ্ছৃঙ্খল। তবে মুন্নার মতো নয়!
* আমির যখন ছাত্র
কলেজ কিংবা হাইস্কুলের ছাত্র হিসেবে বেশ কয়েকটি ছবিতে কাজ করেছেন আমির খান। এ ক্ষেত্রে বলা যায় ‘কেয়ামত সে কেয়ামত তাক’ (১৯৮৮), ‘লাভ লাভ লাভ’ (১৯৮৯), ‘দিল’ (১৯৯০), ‘জো জিতা ওহি সিকান্দার’ (১৯৯২), ‘দৌলত কি জাং’ (১৯৯২), ‘পরমপরা’ (১৯৯৩) ছবিগুলোর কথা। ‘রং দে বাসন্তী’ (২০০৬) ছবিতে তিনি অভিনয় করেন কলেজে ব্যর্থ হওয়া ডিজে চরিত্রে। চমকপ্রদ ব্যাপার হলো, ‘থ্রি ইডিয়টস’ (২০০৯) ছবিতে আমির যখন ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার্থীর চরিত্রে অভিনয় করলেন, তখন তার বয়স ৪৪ বছর!
* প্রেমে পাগল আমির!
‘দিল হ্যায় কি মানতা নাহি’ (১৯৯১) ছবিতে ধনীর মেয়েকে (পূজা ভাট) তার বাবার কাছ থেকে নিয়ে আসা কিংবা ‘হাম হ্যায় রাহি পেয়ার কে’ (১৯৯৩) ছবিতে আরেক ধনীর মেয়ের (জুহি চাওলা) মন জয় করে ফেলা তরুণের ভূমিকায় দারুণ অভিনয় দেখিয়েছেন আমির খান। তবে পর্দায় সবসময় শ্বশুরের বিরুদ্ধেই তিনি কাজ করেছেন বললে ভুল হবে। কারণ ‘আন্দাজ আপনা আপনা’ (১৯৯৪) ছবিতে তিনি ও সালমান খান মন্দ যমজ ভাই তেজার কবল থেকে তাদের নিজ নিজ শ্বশুরকে উদ্ধার করেন। এর চার বছর পর ‘গুলাম’-এ এক মোটরসাইকেল চক্রের নেতাকে রেললাইনে কাটা পড়ার হাত থেকে বাঁচান তিনি।
* খাকি পোশাকে আমির
‘তালাশ’ ছবির আগেও ‘বাজি’ (১৯৯৫) ছবিতে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার ইন্সপেক্টর অমর দামজি চরিত্রে অভিনয় করেছেন আমির খান। এর চার বছর পর ‘সারফারোশ’ ছবিতে এসিপি অজয় রাঠোরের ভূমিকায় দেখা গেছে তাকে। সীমান্তে সন্ত্রাসবাদের তথ্য উন্মোচনের পাশাপাশি মানবপাচার তদন্তে জীবনবাজি রাখে সে। আর ২০১২ সালে ‘তালাশ’-এ এক যৌনকর্মীর খুন হওয়ার রহস্য খুঁজে বেড়ান তিনি।
বাংলাদেশ সময় : ১৯১৮ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০১৫