ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিনোদন

নাচতে নাচতে নিউইয়র্ক থেকে উড়ে এলেন যারা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৭ ঘণ্টা, জুলাই ২৬, ২০১৫
নাচতে নাচতে নিউইয়র্ক থেকে উড়ে এলেন যারা

নৈবেদ্য মানে উপহার। বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব পারফর্মিং আর্টস (বিপা, নিউইয়র্ক) হাজির করলো একডজন নৃত্যের নৈবেদ্য।

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর সঙ্গে তাদের যৌথ আয়োজনে আজ রোববার (২৬ জুলাই) সন্ধ্যা ৭টায় জাতীয় সঙ্গীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনে হয়ে গেলো এই নৃত্যানুষ্ঠান। এর পরিকল্পনা ও পরিচালনা করেছেন এ্যানি ফেরদৌস।
 
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। বিশেষ অতিথি ছিলেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্সি বার্নিকেট ও  বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য ও শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন বরেণ্য নৃত্যশিল্পী রাহিজা খানম ঝুনু, লায়লা হাসান, মিনু হক, শর্মিলা বন্দ্যোপাধ্যায়, বেলায়েত হোসেন খান, লুবনা মরিয়ম, কবিরুল ইসলাম রতন, ডলি ইকবাল, আনিসুল ইসলাম হিরু, সোহেল রহমান ও ইভান শাহরিয়ার সোহাগ।

নিউইয়র্কের নৃত্যশিল্পী এ্যানি ফেরদৌস, তাসিন ফেরদৌস ও জারিন মাইশার পাশাপাশি এই আয়োজনে অংশ নেন বাংলাদেশের নৃত্যশিল্পী স্নাতা, বৈশাখী, শশি, সাহেদ, তুষার, আলিফ, সজল ও রুবেল। ১২টি নৃত্যের মধ্যে ছিলো ২টি ধ্রæপদ ভরতনাট্যম নৃত্য এবং ১০টি সৃজনশীল নৃত্য। ভরতনাট্যম নাচের বর্ণম ও জাভেরী পরিবেশন করেন তাসিন ফেরদৌস। এগুলোতে নৃত্যের সব প্রধান দিক হাজির! অভিনয় ছন্দের কঠিন ব্যবহারে ৩৫ মিনিট দীর্ঘ ‘বর্ণম’  আর শুধু নায়িকার অভিমান প্রকাশের মাধ্যমে ‘জাভেরী’ উপস্থাপন করা হয়।

বিষয়ভিত্তিক সৃজনশীল নাচের মধ্যে ছিলো সূর্যোদয়ের দেশে, বন্ধনম তারুণ্য, দোলনচাঁপা, রিমিক্স প্রেম, কান্ডারী, খোঁজ ইত্যাদি। ‘বন্ধন’-এ সেলিমা আশরাফের গাওয়া ‘আমি তোমার সঙ্গে বেঁধেছি আমার প্রাণ সুরের সাধনে’ রবীন্দ্রসঙ্গীতের সঙ্গে যুগল নৃত্য পরিবেশন করেন এ্যানি ফেরদৌস ও তার মেয়ে তাসিন ফেরদৌস। দলীয় নৃত্য ‘তারুণ্য’ পরিবেশিত হয় অনুপম রায়ের গাওয়া ‘যে সমাজে আমার কোনো জায়গা নেই’ গানের তালে। ফ্রাঙ্ক সিনাত্রার গাওয়া ‘ওল্ডম্যান রিভার’ এবং নচিকেতার গান ‘বুড়ো সলোমান ভাসছে জাহাজে’ গানের তালে পরিবেশন করা হয় দলীয় নৃত্য ‘কান্ডারী’। পুরো অনুষ্ঠানে ভরতনাট্যম কোরিওগ্রাফি করেছেন গুরু তেজস্বিনী রাজ, সৃজনশীল কোরিওগ্রাফি করেছেন এ্যানি ফেরদৌস ও তাসিন ফেরদৌস।

১৯৯৩ সালে নিউইয়র্কে কয়েকজন প্রবাসী শিল্পীর একান্ত প্রচেষ্টায় বাংলা সংস্কৃতির অনুশীলন, প্রসার ও সংরক্ষণের প্রয়োজনে বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব পারফর্মিং আর্টসের (বিপা) জন্ম হয়। বিপা উত্তর আমেরিকায় ব্যাপক পরিচিত একটি অলাভজনক সাংস্কৃতিক সংগঠন। যার মূল লক্ষ্য-প্রবাসে বাংলা ভাষা, সঙ্গীত, নৃত্য ও বাদ্যযন্ত্রের নিয়মিত শিক্ষা দান, উদীয়মান ও বাংলাদেশী প্রতিষ্ঠিত শিল্পীদের উপযোগী মঞ্চ ও অনুষ্ঠান পরিবেশনার ব্যবস্থা করা, সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশি এবং একই সমাজে বসবাসরত ভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি করা। নতুন প্রজন্মের মাঝে বাংলা সংস্কৃতির বীজ বপনের উদ্দেশ্যে বিপা দীর্ঘ ২২ বছর ধরে নিয়মিত স্কুল পরিচালনা করছে। বিপার শিক্ষকরা নতুন প্রজন্মকে নিয়ে উত্তর আমেরিকায় বাংলাদেশিদের আয়োজিত বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে থাকে। আমেরিকার মূল ধারার আমন্ত্রণে বিপা নিয়মিতভাবে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করে।

১৯৭৭ সালে বিটিভির তালিকাভুক্ত নৃত্যশিল্পী এ্যানি ফেরদৌস ১৯৮৬ সাল থেকে দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। যুক্তরাজ্য হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে জাফর ফেরদৌসের সঙ্গে গড়ে তোলেন স্থায়ী নিবাস। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক দলের অন্যতম পরিচালক এ্যানি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর পড়াশোনা করেছেন। দেশে থাকাকালে বুলবুল ললিতকলা একাডেমীর রাহিজা খানম ঝুনু এবং ছায়ানটের শান্তিবালা সিনহার কাছে নৃত্যের তালিম নিয়েছেন। এ ছাড়া লায়লা হাসান, লুবনা মরিয়ম, শর্মিলা দাসের মতো প্রখ্যাত নৃত্যশিল্পীদের কাছে থেকে কোরিওগ্রাফি করার অনুপ্রেরণা পেয়েছেন বলে জানান তিনি।



বাংলাদেশ সময় : ২০০৮ ঘণ্টা, জুলাই ২৬, ২০১৫
জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।