প্রদর্শনী শুরু হতে এখনও ঘণ্টাখানেক বাকি। দুপুর আড়াইটা থেকেই দর্শক জড়ো হতে থাকেন ফরিদপুর শিল্পকলা একাডেমীতে।
‘সুলতান’ নির্মাণ করেছেন দিলশাদুল হক শিমুল। গতকাল শুক্রবার (৯ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে সেখানে এর একটি প্রদর্শনী হওয়ার কথা থাকলেও দর্শক চাহিদা থাকায় চারটি প্রদর্শনী হয়েছে। প্রদর্শনীতে ছিলেন তারেক মাসুদের মা, ভাই সাঈদ মাসুদ, নাট্যকার জিনাত হাকিম প্রমুখ।
প্রামাণ্যচিত্রটির নতুন পোস্টার উদ্বোধন করেন তারেক মাসুদের মা। এটি এঁকেছেন পাপ্পু। অনুষ্ঠানে তারেক মাসুদের মা বলেন, ‘তারেকের চলচ্চিত্র দর্শন, চিন্তা-ভাবনা যেভাবে তুলে ধরা হলো এই প্রামাণ্যচিত্রের মাধ্যমে, মনে হচ্ছে তারেক আবার তার পথচলা শুরু করলো। ’ পরিচালককে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘তুমিই আমার আরেক তারেক। ’
৫৬ মিনিটের প্রামাণ্যচিত্রটি নির্মাণ করতে লেগেছে দীর্ঘ ছয় বছর। ২০০৯ সাল থেকেই তারেক মাসুদের চলচ্চিত্রযাত্রা ও দর্শন নিয়ে কাজ শুরু হয় এর। এতে মূলত তার চলচ্চিত্র দর্শন, চলচ্চিত্র নির্মাণে কল্পপদ্ধতি ও চলচ্চিত্র ভাবনা তুলে ধরা হয়েছে।
আগামী ডিসেম্বরে তারেক মাসুদের জন্মদিনে ফরিদপুরের ভাঙায় তার নিজ গ্রামে দেখানো হবে ‘সুলতান’। এরপর খুলনা ও চট্টগ্রামে প্রদর্শনী হবে। নির্মাতা শিমুল বললেন, ‘একে একে দেশের সব জেলায় প্রদর্শনীর পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের মানুষকে এটা দেখাতে চাই। বিশ্ববিদ্যায়গুলোতেও প্রদর্শনী করে তারেক মাসুদের চিন্তাভাবনা তরুদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে চাই। তথ্যচিত্রটি উৎসর্গ করছি চলচ্চিত্র নির্মাণের স্বপ্ন নিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে পড়া তরুণ-তরুণীদের। ’
নির্মাতা হিসেবে তারেক মাসুদের প্রথম কাজ ছিলো তথ্যচিত্র ‘আদম সুরত’ (১৯৮৯)। ১৯৯৬ সালে ‘মুক্তির গান’ আর ১৯৯৯ সালে ‘মুক্তির কথা’ তথ্যচিত্র দুটির সুবাদে আলোচিত হয়ে ওঠেন তিনি। এরপর বর্হিবিশ্বে বাংলাদেশের ছবিকে তিনি পরিচয় করিয়ে দেন নিজের প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য কাহিনীচিত্র ‘মাটির ময়না’র মাধ্যমে। ২০০২ সালে কান চলচ্চিত্র উৎসবে ফিপরেস্কি জেতে ছবিটি। এরপর তিনি নির্মাণ করেন ‘অন্তর্যাত্রা’ (২০০৬) ও ‘রানওয়ে’ (২০১০)। তিনি ‘নরসুন্দর’সহ বেশকিছু স্বল্পদৈর্ঘ্য ছবিও তৈরি করেন।
২০১১ সালে চতুর্থ ছবি ‘কাগজের ফুল’-এর দৃশ্যধারণের স্থান খুঁজতে গিয়ে মানিকগঞ্জ-আরিচা মহাসড়কে জোকা নামক জায়গায় মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন তারেক মাসুদ।
বাংলাদেশ সময়: ০৫১০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০১৫
জেএইচ