শীত জেঁকে বসতে শুরু করেছে। কিন্তু সুরপিয়াসীদের ঠেকায় কে! তাই রোববার (২৯ নভেম্বর) বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসবের তৃতীয় দিনের আয়োজনেও দেখা গেছে দর্শক-শ্রোতাদের উপচেপড়া ভিড়।
শুরুতেই ছিলো ওয়ার্দা রিহাব ও তার দলের মনিপুরী নৃত্য পরিবেশনা। তার দলে ছিলেন বদরুল আলম চৌধুরী, দিল আফরুজ জাহান, ফুলেশ্বরী পারমিতা, রাকা পাল, রুবাইয়াত সাইয়াদা, রুবাইয়াত তাইয়াদা, পুষ্পিতা হোসেন, তাসনিম শারমিন, বসনীন হাসীন, এম এ হোসেন, অনিন্দিতা রায়, অন্তর দেওয়ান, মাহারিমা শারমিন, তৃণা মজুমদার, শচীন মগ মারমা, তানূজা আইয়ূব তন্নি, মুবাশ্বিরা মাহবুব, নাফিসা ইসলাম, জ্যোতি দত্ত, সুমাইয়া আহমেদ, তাসমিয়া তাবাসুম, হুমাইরা হায়দার, সুরভী মোদক, হান্নান শাহ্, তমা দাস, এস এম রায়হানুল আলম, শাপলা খাতুন, জয়ীতা দাস, বাশারাত শায়রা। শিল্পীদের যন্ত্রসংগীতে সহযোগিতা করছেন নিলমণি সিংহ, সুরজিত সিংহ, রনি সিংহ, ধীরেন্দ্রকুমার সিংহ এবং সুনীল সিংহ। ওয়ার্দা রিহাব ও তার দল লেচান, কথক চাবা, বসন্ত, গোষ্ঠ ক্রীবা, জয় জয় দেবা পরিবেশন করেন। পরিবেশনা শেষে ওয়ার্দার হাতে উৎসব স্মারক তুলে দেন চিত্রশিল্পী রণজিৎ দাস।
এরপর সরোদ পরিবেশন করেন ইউসুফ খান। তিনি রাগ কিরওয়ানী বাজিয়ে শোনান। তাকে তবলায় সহযোগিতা করেন ইফতেখার আলম প্রধান ও তানপুরায় তাহিয়া খান। শিল্পীর হাতে উৎসব স্মারক তুলে দেন বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের।
পরবর্তী পরিবেশনা ছিলো ওস্তাদ ওয়াসিফউদ্দিন ডাগরের। তিনি রাগ বিহাগ, শংকরা রাগে ধ্রুপদ ও রাগ সোহিনী পরিবেশন করেন। শিল্পীকে পাখওয়াজে সহযোগিতা করেন মোহন শ্যাম শর্মা, তানপুরাতে গোপেশ গওড় ও সন্তোষ কুমার। পরিবেশনা শেষে ওস্তাদ ওয়াসিফ ডাগরের হাতে উৎসব স্মারক তুলে দেন ড. দীপু মনি।
এরপর মঞ্চে আসেন ড. এন রাজম। শিল্পীকে বেহালায় সহযোগিতা করেন তার কন্যা ড. সঙ্গীতা শঙ্কর এবং নাতনী রাগিনী শঙ্কর ও নন্দিনী শঙ্কর। তবলায় ছিলেন পণ্ডিত মুকুন্দ রাজ দেও। ড. এন রাজম রাগ বাগেশ্রী, রাগ খাম্বাজে ঠুমরী এবং মালকোশ রাগের স্বর দিয়ে বেহালার গায়কি অঙ্গ্এবং তন্ত্রকারী অঙ্গ্এর পার্থক্য দেখান। তিনি বেহালায় নজরুলের ‘ব্রজগোপী খেলে হরি’ বাজিয়ে শোনান। পরিবেশনা শেষে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত শিল্পীদের হাতে উৎসব স্মারক তুলে দেন।
এরপর বিদুষী শ্রুতি সাদোলিকার খেয়াল পরিবেশন করেন। তিনি রাগ নন্দ/আনন্দি কল্যাণ, কৌশিকানাড়া এবং মাঝ খাম্বাজ রাগে ঠুমরি পরিবেশন করেন। তার সঙ্গে তবলায় ছিলেন অনীশ প্রধান, হারমোনিয়ামে ছিলেন সুধীর নায়েক এবং তানপুরায় ছিলেন লতিফুন জুলি ও সুপ্রিয়া দাস। বিদুষী শ্রুতি সাদোলিকারকে উৎসব স্মারক তুলে দেন কণ্ঠশিল্পী শাহীন সামাদ।
পরবর্তী পরিবেশনা নিয়ে মঞ্চে আসেন গুরু কড়াইকুডি মানি। তিনি লয় বিদ্যাসন পরিবেশন করেন। শিল্পীকে সঙ্গত করেন খঞ্জিরাতে অমৃত এন, ঘটমে সুরেশ বৈদ্যনাথান, মরসিং-এ ভারাদওয়াজ সাথ্থাভালি এবং থালামে নাগাই নারায়াণন। শিল্পীকে উৎসব স্মারক তুলে দেন ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান লতিফুর রহমান।
তৃতীয় দিনের উৎসবের শেষ পরিবেশনা ছিলো বিদুষী শুভা মুডগালের। তিনি রাগ ভাটিয়ার, রামকেলি, রাগ মালা রাগ ভৈরবিতে ঠুমরী পরিবেশন করেন। শিল্পীকে তবলায় সহযোগিতা করেন অনীশ প্রধান, হারমোনিয়ামে সুধীর নায়েক, তানপুরায় আনা নাসরিন এবং সুস্মিতা দেবনাথ। শব্দ নিয়ন্ত্রণে ছিলেন নিতিন জোশী। শিল্পীর হাতে উৎসব স্মারক তুলে দেন সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর।
সোমবার (৩০ নভেম্বর) চতুর্থ দিনের উৎসব শুরু হবে সন্ধ্যা ৭টায়। চলবে পরদিন ভোর ৫টা ১০ মিনিট পর্যন্ত। এদিন অংশ নেবেন গুরু রাজা ও রাধা রেড্ডি (কুচিপুডি নৃত্য), গণেশ ও কুমারেশ রাজাগোপালন (কর্ণাটক বেহালা), পণ্ডিত শিবকুমার শর্মা (সন্তুর), পণ্ডিত তেজেন্দ্রনারায়ণ মজুমদার (সরোদ), পণ্ডিত উল্লাস কশলকর (খেয়াল) এবং ওস্তাদ জাকির হোসেন (একক তবলা)।
বেঙ্গল ফাউন্ডেশন আয়োজিত বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসব এবার উৎসর্গ করা হয়েছে বরেণ্য শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরীকে। গতবারের আসরে মঞ্চেই চিরবিদায় নেন তিনি।
বাংলাদেশ সময় : ০৮৫৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০১৫
জেএইচ