রুবাইয়াত হোসেন পরিচালিত ‘আন্ডার কনস্ট্রাকশন’ মুক্তির পর থেকে দর্শকদের প্রশংসা কুড়াচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে দেশের চলচ্চিত্র পরিচালকরা ছবিটি নিয়ে ইতিবাচক মন্তব্য লিখেছেন।
প্রিমিয়ারের আগেই ছবিটি দেখেছেন নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। সেই অভিজ্ঞতা থেকে তিনি লিখেছেন, ‘ছবিটিতে নারীর চোখে তার চারপাশ দেখার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু ভয় পাবেন না, গতানুগতিক এনজিও ঘরানার ছবি বানায়নি রুবাইয়াত, কেন্দ্রীয় নারী চরিত্রকে অযাচিতভাবে মহান বানানোর কোনো চেষ্টাও সে করেনি। ও একটা গল্প বলার চেষ্টা করেছে। ’
আবু শাহেদ ইমনও মুক্তির আগেই ছবিটি দেখেছেন, ভারতের কেরালা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে। ঢাকায় আবার এটি দেখে তিনি লিখেছেন, ‘এবার মুগ্ধতা আরও বেড়েছে। এককথায় অসাধারণ!’
‘আন্ডার কনস্ট্রাকশন’-এর গল্প ও চরিত্র পরিচিত উল্লেখ করে নির্মাতা অমিতাভ রেজার মন্তব্য, ‘মনে হচ্ছে এমন কারও কথা শুনছি যাদের আমি চিনি, আমার আশেপাশের মানুষ, আমার শহরের কিন্তু মানুষগুলো রঙ্গ লাগানো না, মিথ্যা না। পরিচালক একটি মানবিক গল্প বলেছেন দক্ষ কারিগরের মতোই। রঙ্গ লাগানো সিনেমা তো অনেক হলো। ’
অমিতাভের সঙ্গে সুর মিলিয়ে আকরাম খান লিখেছেন, ‘আমাদের (পুরুষদের) অবজ্ঞা, অবহেলা ও অজ্ঞতার জন্য সবসময়ই নারীদের এই জগৎ অন্তরালে থাকে। সততা ও আন্তরিকতার সঙ্গে নারীর দৃষ্টিভঙ্গি থেকে নান্দনিকভাবে নারীর এই জগতকে উন্মোচনের জন্য পরিচালককে ধন্যবাদ। ’
ছবিটি দর্শককে ভাবায় মন্তব্য করে নির্মাতা অনিমেষ আইচ লিখেছেন, ‘এটা দেখে মনে আর মগজে অদ্ভুত এক প্রতিক্রিয়া নিয়ে ফিরলাম। আমার কাছে সেটাই ভালো সিনেমা যেটা দীর্ঘ ভাবনার জন্ম দেয়। ‘আন্ডার কনস্ট্রাকশন’ আমাকে ভাবিত করেছে। নন্দিনী, রয়া কিংবা বাসার কাজের মেয়েটা একেবারেই আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের চরিত্রগুলোকে মনস্তাত্ত্বিক টানাপোড়েনের ভেতর দিয়ে অন্য চোখে দেখাতে সক্ষম হয়েছেন পরিচালক। যারা নতুন গল্প এবং ভিন্নতর উপস্থাপনা দেখতে ভালোবাসেন, তাদের এই সিনেমাটি ভালো লাগবে। ’
চিত্রশিল্পী সৈয়দ ইকবালের মতে, এটাকে টোটাল সিনেমা বলা যায়। বোদ্ধা দর্শক থেকে সাধারণ গার্মেন্টস কর্মী- সবার বোধগম্য হওয়ার মতো শুদ্ধ ছবি ‘আন্ডার কনস্ট্রাকশন’। তিনি লিখেছেন, ‘এতে সাধারণ মানুষও নিজেকে খুঁজে পায়, খুঁজে পায় নিজের জীবনযাপনের যন্ত্রণাকে। দারুণ মুন্সীয়ানা দেখিয়েছেন পরিচালক রুবাইয়াত হোসেন। প্রতিটি শট-টু-শট যেন পরিকল্পিত, চিন্তার ফসল। ’
সংগীতশিল্পী অরূপ রাহির ভাষ্য, এই ছবি দর্শকের দেখা দাবি করে। কলাকুশলীদের অভিনন্দন জানিয়ে তিনি লিখেছেন, “শব্দ আর কংক্রিটের জঙ্গল এই ঢাকার নাগরিক মধ্যবিত্ত ও উচ্চমধ্যবিত্ত নারী, বিশ্ব পুঁজিবাদের বাংলাদেশ প্রান্তে গার্মেন্টস শ্রমিক নারীরা পুরুষতান্ত্রিক সমাজের বাসনার জালে আটকে থাকে। সেখান থেকে বের হওয়ার দ্বন্দ্বে জর্জরিত নারী জীবনের মধ্য দিয়ে রবীন্দ্রনাথের ‘রক্তকরবী’র নন্দিনীর নানান নন্দিনী হয়ে ওঠার ছবি এটি। ”
গত ২২ জানুয়ারি রাজধানীর চারটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে ছবিটি। এগুলো হলো রাজধানীর বসুন্ধরা সিটির স্টার সিনেপ্লেক্স, যমুনা ফিউচার পার্কের ব্লকবাস্টার সিনেমাস, বলাকা সিনেওয়ার্ল্ড ও শ্যামলী।
ছবিটিতে অভিনয় করেছেন বলিউড অভিনেত্রী শাহানা গোস্বামি, ভারতীয় অভিনেতা রাহুল বোস, বাংলাদেশের মিতা চৌধুরী, রিকিতা নন্দিনী শিমু, তৌফিকুল ইসলাম ইমন, সোহেল মন্ডল সবুজ প্রমুখ। প্রযোজনায় খনা টকিজ।
বাংলাদেশ সময় : ০১১৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০১৬
জেএইচ