গত ৪ জানুয়ারির কথা। মুম্বাই থেকে যোধপুর যাচ্ছিলেন ভারতীয় গায়ক সোনু নিগাম।
কে জানতো এটাই কাল হয়ে দাঁড়াবে পরে। সোনুকে গাইতে দেওয়ায় চাকরি খোয়ানোর খেসারত দিতে হলো জেট এয়ারওয়েজের পাঁচ সেবিকাকে। বেসামরিক বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রক সংস্থা (ডিজিসিএ) এক বিবৃতিতে প্রশ্ন তুলেছে, যাত্রী নিরাপত্তার জন্য নির্দিষ্ট পরিষেবা কীভাবে গান গাওয়ার জন্য ব্যবহার করতে দেওয়া হলো যাত্রীকে। এ কারণে কেবিন ক্রুদেরকে সংশোধনের জন্য বরখাস্ত করতে অনুরোধ জানান তারা। এর পরিপ্রেক্ষিতে এই পদক্ষেপ নিয়েছে জেট এয়ারওয়েজ।
যে যন্ত্র দিয়ে যাত্রীদের উদ্দেশে ঘোষণা দেওয়া হয়, তা শুধু বিমানবালারাই ব্যবহারের এখতিয়ার রাখেন। এটাকে বলে ইন ফ্লাইট পাবলিক অ্যাড্রেস সিস্টেম। বিমানের ভেতর গুরুত্বপূর্ণ খবর চালাচালির জন্য ব্যবহৃত সেই যন্ত্রই তখন সোনুর গলা পৌঁছে দিচ্ছিলো বাকি যাত্রীদের কাছে। প্রবল উৎসাহে গলা মিলিয়েছেন তারাও। বিমান ওড়া বা নামার আগে যাত্রীদের প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হয় এর সাহায্যে। কোনো বিপদ ঘটলে যাত্রী বা বিমান কর্মীদের পাইলট সতর্ক করেন একইভাবে। ডিজিসিএ’র যুক্তি, সোনুকে গাওয়ার অনুমতি দিয়ে যাত্রী সুরক্ষাকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন বিমানবালারা।
সেবিকাদের চাকরি যাওয়ার ঘটনায় হতাশ সোনু। এটাকেই সত্যিকারের অসহিঞ্চুতা বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। টাইমস অব ইন্ডিয়াকে ৪২ বছর বয়সী এই তারকা বলেছেন, ‘আকাশযানের ভেতর বড় পরিসরের ফ্যাশন শো হতে দেখেছি আমি। ছোট পরিসরের কনসার্ট হওয়ার কথাও শুনেছি। অন্যান্য দেশে বৈমানিক ও ক্রু সদস্যরা যাত্রীদের আনন্দ দিতে মজার কৌতুক করেন। জরুরি কথা বলার সিস্টেমে আমাকে গান গাইতে দেওয়ায় যাদের চাকরি গেলো, তাদের প্রতি আমি সমব্যথী। সিটবেল্ট খুলে রেখে দিতে বলার আনুষ্ঠানিকতা শেষে ওই সিস্টেমের আর প্রয়োজন ছিলো না আপাতত। কাউকে এজন্য শাস্তি দেওয়া চরম অসহিঞ্চুতাই মনে করছি আমি। ভারতীয়দের আরও মুক্তমনা হওয়া প্রয়োজন। এটা হলো সাধারণ জ্ঞানের অভাব। ’
এবারই প্রথম নয়, দুই বছর আগে হোলির সময় আকাশপথে ‘ইয়ে জাওয়ানি হ্যায় দিওয়ানি’ ছবির ‘বালাম পিচকারি’ গান বাজিয়ে নাচার কারণে আরেকটি ভারতীয় বিমান পরিবহন সংস্থার ক্রুরা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছিলো।
* উড়োজাহাজে সোনু নিগামের গান গাওয়ার ভিডিও :
বাংলাদেশ সময়: ১১২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৬, ২০১৬
বিএসকে/জেএইচ