‘আমার দাদু ও বাবার বাড়ি বরিশালে। আমি বরিশালের মেয়ে।
সোমবার (৭ মার্চ) সকালে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান শ্রাবন্তী। তিনি উঠেছেন রাজধানীর গুলশানে হোটেল ওয়েস্টিনে। এখানে দুপুরের খাবার খেতে গিয়ে কাঁচা মরিচ দাঁত দিয়ে কামড়ে গিলেছেন। এটা দেখে তো ‘শিকারী’র অন্যতম প্রযোজক জাজ মাল্টিমিডিয়ার স্বত্ত্বাধিকারী আব্দুল আজিজ তো থ বনে গেলেন। কৌতূহল জাগায় তিনি প্রশ্ন না করে পারলেন না, ‘আপু, তুমি এভাবে কাঁচা মরিচ খেতে পারো?’ উত্তরে শ্রাবন্তী গর্ব নিয়ে বলেন ‘আমি বরিশাইল্যা। ’
এদিন রাতে একই পাঁচতারা হোটেলে ছবিটির মহরতে অংশ নেন শ্রাবন্তী। এখানে তিনি জানান, বাংলাদেশে বেশ কয়েকবার আসি আসি করেও তার আসা হয়নি। গত ২৭ ফেব্রুয়ারিও আসার কথা ছিলো, কিন্তু ভিসা সংক্রান্ত কারণে তা পিছিয়ে যায়। অবশেষে পূর্বপুরুষদের দেশে আসতে পেরে তিনি ভীষণ খুশি।
শ্রাবন্তী কথায় কথায় বললেন, ‘বাংলাদেশে খুব ভালো লাগছে। এখানকার মানুষজন খুব ভালো। আমাকে ভীষণ ভালোবাসে সবাই, এটা বুঝতে পারছি। এ দেশের মানুষ দারুণ অতিথিপরায়ণ। বাংলাদেশেই বাঙালিয়ানাকে পরিপূর্ণভাবে পাওয়া যায়। বাংলাদেশের ইলিশের স্বাদ নেওয়ার খুব ইচ্ছা আমার। ’
যৌথ প্রযোজনার ছবিতে কাজ করার সম্মতি জানানোর পেছনে বাংলাদেশে পিতৃভিটা অন্যতম কারণ বলে জানালেন শ্রাবন্তী। দ্বিতীয়ত জাজ মাল্টিমিডিয়ার পাশাপাশি ‘শিকারী’র আরেক প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান এসকে মুভিজের সঙ্গে সুসম্পর্কও মুখ্য হিসেবে উল্লেখ করেছেন তিনি। তার কথায়, ‘তারা আমার খুব কাছের। অনেকদিন ধরে বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার ইচ্ছে ছিলো। এ সুযোগটা তাই হাতছাড়া করতে চাইনি। দুই বাংলার জয় হোক। ’
‘শিকারী’তে শ্রাবন্তী প্রথমবার জুটি বাঁধছেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক শাকিব খানের সঙ্গে। এ ছাড়াও আছেন অমিত হাসান, রেবেকা, শিবা শানু, সুব্রত, মনজুরুল আলম, কলকাতার সব্যসাচী চক্রবর্তী, রুদ্র প্রতাপলিলি চক্রবর্তী, সুপ্রিয় দত্ত, খরাজ মুখার্জি ও রাহুল দেব রয়।
ছবিটির কাহিনী লিখেছেন আবদুল্লাহ জহির বাবু ও কলকাতার পেলে চ্যাটার্জি। এর দৃশ্যধারণ শুরু হবে আগামী ১৫ মার্চ। ‘শিকারী’র অনলাইন ও ডিজিটাল কন্টেন্ট পার্টনার লাইভ টেকনোলজি।
১৯৯৭ সালে স্বপন সাহার পরিচালনায় ‘মায়ার বাঁধন’ ছবির মাধ্যমে রূপালি পর্দায় অভিষেক হয় শ্রাবন্তীর। তখন তার বয়স মাত্র ১০ বছর। এরপর ছয় বছরের বিরতি। ২০০৩ সালে জিতের সঙ্গে ‘চ্যাম্পিয়ন’-এ অভিনয় করেন তিনি। এরপর আবার পাঁচ বছরের বিরতি।
২০০৮ সাল থেকে নিয়মিত চলচ্চিত্রে কাজ করছেন শ্রাবন্তী। তার অভিনীত ছবির তালিকায় উল্লেখযোগ্য- ‘ভালোবাসা ভালোবাসা’ (২০০৮), ‘দুজনে’ (২০০৯), ‘অমানুষ’ (২০১০), ‘জোশ’ (২০১০), ‘সেদিন দেখা হয়েছিলো’ (২০১০), ‘ফাইটার’ (২০১১), ‘ফান্দে পড়িয়া বগা কান্দে রে’ (২০১১), ‘ইডিয়ট’ (২০১২), ‘দিওয়ানা’ (২০১৩), ‘কানামাছি’ (২০১৩), ‘মজনু’ (২০১৩), ‘বিন্দাস’ (২০১৪)।
২০১৩ সালে অপর্ণা সেনের আলোচিত ছবি ‘গয়নার বাক্স’তে দেখা গেছে শ্রাবন্তীকে। পরের বছর অনিরুদ্ধ রায় চৌধুরীর ‘বুনো হাঁস’ ছবিতে তার অভিনয় প্রশংসিত হয়। গত বছর মুক্তি পায় রাজ চক্রবর্তীর ‘কাটমান্ডু’ ও বিরসা দাশগুপ্তর ‘শুধু তোমারই জন্য’।
শাকিবের আগে বাংলাদেশি নায়কদের মধ্যে ফেরদৌসের সঙ্গে অভিনয় করেছেন শ্রাবন্তী। রবি কিনাগি পরিচালিত ‘ফাইটার’-এ দেখা গেছে তাদেরকে।
বাংলাদেশ সময় : ০১১৬ ঘণ্টা, মার্চ ০৮, ২০১৬
জেএইচ