চার সন্তান নিয়ে কানাডায় থাকেন দিলারা আলো। দেশের জন্য মন কাঁদে তার।
গীতিকার মাসুদ করিম স্মরণে শনিবার (১২ মার্চ) বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালায় অনুষ্ঠিত সম্মাননা প্রদান সফল করার পেছনে সাবিনার অবদানের কথা তুলে ধরা হলো। অনুষ্ঠানে সম্মাননা হাতে পেয়ে স্মৃতিচারণমূলক বক্তব্য রাখেন তিনি।
সাবিনার কালজয়ী গান ‘আমি রজনীগন্ধা ফুলের মতো গন্ধ বিলিয়ে যাই’ লিখেছিলেন মাসুদ করিম। তিনি বলেন, ‘আমার কোনো ভাই ছিলেন না। মাসুদ ভাইকে আমার মা নিজের ছেলে মনে করতেন। আমিও তাকে বড়ভাই জ্ঞান করতাম। আমাদের বাসায় তার নিয়মিত আসা-যাওয়া ছিলো। মাসুদ ভাই আমাকে কখনও সাবিনা বলে ডাকতেন না। ডাকতেন আমার ডাকনাম রোজী বলে…’।
বক্তৃতায় সাবিনা আরও বলেন, ‘মাসুদ করিম মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন তাকে স্মরণ করার উদ্যোগ নিয়েছে। এটা খুব ভালো ব্যাপার। আমাদের সবার উচিত এই উদ্যোগের সঙ্গে থাকা। আমি ব্যক্তিগতভাবে এই ফাউন্ডেশনকে সব ধরনের সহযোগিতা করতে চাই। ’
অনুষ্ঠানে মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, “মাসুদ করিম সম্পর্কে এটুকুই বলবো, তিনি পোশাকে-আশাকে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন মানুষ ছিলেন। গীতিকার হিসেবে তিনি কতো বড় ছিলেন সেটা আমি বলছি না। মানুষ হিসেবে তিনি বড় মনের অধিকারী ছিলেন। আমার সৌভাগ্য হয়েছে একটি ছবিতে তার লেখা গান গাওয়ার। ‘লালু ভুলু’ ছবির সব গান লিখেছিলেন মাসুদ করিম। ”
সৈয়দ আবদুল হাদী বলেন, ‘মাসুদ করিম আমার বন্ধু-ভাই ছিলেন। এখন সময় এসেছে তার কাজ নিয়ে মূল্যায়ন করার। কবিদের বাইরে রোমান্টিক ধারার গান রচনায় তিনি ছিলেন সফল। ব্যক্তিজীবনে তাকে কখনও পরচর্চা করতে দেখিনি। এমন মানুষ সত্যিই বিরল। ’
সংগীতশিল্পী শাহনাজ রহমতউল্লাহ বলেন, ‘যখনই আমি উনার গান গাইতাম, লক্ষ্য করতাম- খুব চুপচাপ একজন মানুষ। কিন্তু মুখে একটা হাসি লেগেই থাকতো। আমার মনে হয় না তিনি কোনোদিন কারও সঙ্গে ঝগড়া করেছেন। ’
প্রখ্যাত গজল সম্রাট মেহেদি হাসান, শ্যামল মিত্র, ভূপেন হাজারিকাসহ অনেক শিল্পীই মাসুদ করিমের লেখা গান গেয়েছেন। মাসুদ করিম মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন এখন থেকে প্রতি বছর তাকে অানুষ্ঠানিকভাবে স্মরণ করবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন ডাক ও টেলি যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম, বিশেষ অতিথি ছিলেন মোবারক হোসেন খান। অংশ নিয়েছেন দেশের বিশিষ্ট গীতিকার, সুরকার ও শিল্পীরা। এবারে মাসুদ করিম সম্মাননা পেয়েছেন ২৫ জন গুণী শিল্পী।
গীতিকার মাসুদ করিম কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলার দুর্গাপুর কাজীপাড়ায় ১৯৩৬ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারিতে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬০ সাল থেকে তিনি রেডিও ও টেলিভিশনের জন্য গান রচনা করেন। তার লেখা কালজয়ী গানের মধ্যে রয়েছে ‘তন্দ্রাহারা নয়ন আমার’, ‘যখন থামবে কোলাহল’, ‘শিল্পী আমি তোমাদের গান শোনাব’, ‘আমি সুজন দেখে ভাব করেছি’, ‘এ কি বাঁধনে বলো জড়ালে আমায়’, ‘সন্ধ্যারও ছায়া নামে’, ‘মন তো নয় আর আয়না’, ‘ওগো চাঁদ তুমি কি জানো না’, ‘তুমি যে আমার ভালোবাসা’ প্রভৃতি।
বাংলাদেশ সময়: ১২১৩ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০১৬
এসও/জেএইচ