হৃতিক রোশন ও কঙ্গনা রনৌতের প্রেমকে ঘিরে চারদিকে আলোচনার ঝড় বইছে। তাদের একে অপরকে নিয়ে কটুকথা আর মামলার কারণে বেরিয়ে আসছে নানান অজানা তথ্য।
ডুগ্গুর (হৃতিকের ডাকনাম) দাবি, কঙ্গনা তাকে ১ হাজার ৪৩৯টি ই-মেইল পাঠিয়েছেন! এসব মেইলের বেশিরভাগই অর্থহীন ও অযৌক্তিক। কিন্তু কোনো পাত্তা দেননি বলিউডের এই সুপারস্টার।
২০১৪ সালে করণ জোহরের পার্টিতে ‘কুইন’ ছবিতে অভিনয়ের প্রশংসা করায় হৃতিককে ধন্যবাদ জানান কঙ্গনা। যদিও হৃতিক জানান, তখনও ছবিটি তিনি দেখেননি। এরপর নিজের প্রকৃত ই-মেইল আইডি দেখান কঙ্গনা। যদিও হৃতিকের দাবি, তিনিই তার আসল ই-মেইল আইডি দিয়েছিলেন তাকে। এরপর থেকে প্রতিদিন কঙ্গনা তাকে মেইল করতেন। এসব হয়েছে সুজান খানের সঙ্গে হৃতিকের বিয়ে বিচ্ছেদের কার্যধারা চলাকালীন।
কঙ্গনার দাবি, তার সঙ্গে যোগাযোগের জন্য আলাদা একটি ই-মেইল আইডি খুলেছিলেন হৃতিক। ২০১৪ সাল পর্যন্ত এই ই-মেইল আইডিতেই যোগাযোগ করতেন তিনি। সুজান যেন কিছু জানতে না পারেন সেজন্য আলাদা ই-মেইল ব্যবহার করতেন হৃতিক। অবাক করা ব্যাপার হলো, নগ্ন ছবি আর যৌন উত্তেজক মেসেজ আদান-প্রদান হতো তাদের মধ্যে।
এদিকে হৃতিকের দাবি, মানসিক অবসাদে ভুগছেন কঙ্গনা। এ কারণে রোজ অর্ধশত মেইল পাঠাতেন তিনি। এগুলো পড়েই তিনি বুঝেছেন ‘তনু ওয়েডস মনু রিটার্নস’ তারকার মানসিক অবস্থা কোন পর্যায়ে আছে। এমনকি হৃতিকের বাবা রাকেশ রোশনকে ফোন করে কঙ্গনা নাকি তার ছেলেকে সামাল দিতে বলেছেন! হৃতিকের আইনি নোটিশে লেখা হয়েছে, ‘আপনি (কঙ্গনা) আমার মক্কেলের নিরবতা ও মর্যাদাকে তার দুর্বলতা ভেবে নিচ্ছেন। আমার মক্কেলের (হৃতিক) বাবাকে ফোন করে তার পুত্রকে সামলানোর ব্যাপারে উপদেশ দেওয়ার সাহস হয় কি করে আপনার? আমার মক্কেলের বাবার মতে, আপনি কোনো ভুল বুঝেছেন এবং আপনার প্রতি তাদের কোনো আগ্রহ নেই। ’
অন্যদিকে কঙ্গনার নোটিশে বলা হয়েছে, বেশকিছু পার্টিতে ‘কৃষ’ তারকা হৃতিকের সঙ্গে অংশ নিয়েছেন তিনি। এতে উল্লেখ করা হয়, ‘আমার মক্কেলকে ২০১১ সালের জানুয়ারিতে ব্যক্তিগত পার্টিতে আমন্ত্রণ জানিয়ে হৃতিক প্রমাণ করেছেন উভয়ের মধ্যে পেশার বাইরে আলাদা সম্পর্ক রয়েছে। ‘কৃষ থ্রি’তে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার আগের ঘটনা এটি। ২০১২ সালে আপনার মক্কেলের বোনের জন্মদিনের অনুষ্ঠানেও ছিলেন কঙ্গনা। এর পরের বছর আমার মক্কেলের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে হাজির হন আপনার মক্কেল। এরপর আপনার মক্কেলের বাবার ঘরোয়া পার্টিতেও কঙ্গনা আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন। এসবই প্রমাণ করে রোশন পরিবারে ও আপনার মক্কেলের কাছে তিনি আগন্তুক কেউ নন। তাই সুবিধা পেতে তিনি এসব অস্বীকার করতে পারেন না। ’
হৃতিক ও কঙ্গনার এই প্রেম অবশ্য বলিউডে খুব একটা লুকোচুরির ব্যাপার নয়। তাদের মন দেওয়া-নেওয়ার ব্যাপারে সবাই কিছু না কিছু জানতো। কঙ্গনার কথাতেই তা প্রথমে স্পষ্ট হয়। সম্প্রতি ‘আশিকি থ্রি’ থেকে ২৮ বছর বয়সী এই অভিনেত্রীর বাদ পড়ার পেছনে ডুগ্গুর (হৃতিকের ডাকনাম) হাত আছে বলে গুঞ্জন ওঠে। যদিও নির্মাতাদের ইচ্ছে ছিলো তাদেরকে নেবেন।
এরপর এক সংবাদ সম্মেলনে হৃতিককে ‘হীনমন্য প্রাক্তন প্রেমিক’ বলে তিরস্কার করেন কঙ্গনা। তিনি বলেন, ‘জানি অনেক আজেবাজে গুজব ছড়াচ্ছে। এমনকি যে কোনো গর্ধবই বলতে পারবে এসব কোত্থেকে আসছে। কেনো যে হীনমন্য প্রাক্তন প্রেমিকরা দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য এসব করে। আমার কাছে ওই অধ্যায় শেষ। সেসব আর ঘাঁটতে চাই না। ’
কঙ্গনার কথায় যে হৃতিক ক্ষুব্ধ হয়েছেন তা বুঝতে বাকি রইলো। টুইটারে ৪২ বছর বয়সী এই অভিনেতা দাঁতভাঙা জবাব দিয়ে বলেন, ‘পোপের সঙ্গে প্রেম করার কথা ভাবা যায়, তবু বিনোদন অঙ্গনের কোনো নারীর সঙ্গে নয়। ’
তখন থেকেই হৃতিক-কঙ্গনা দু’জনই তেলে-বেগুনে জ্বলছেন। এ আগুন নেভেনি, বরং আরও তেজ বাড়ছে দিনে দিনে। হীনমন্য প্রাক্তন প্রেমিক বলায় নিন্দা জানিয়ে ক্ষমা চাইতে বলে কঙ্গনার বিরুদ্ধে মামলা করেন হৃতিক। তার আইনজীবী দীপেশ মেহতা এ তথ্য জানান।
দিন যতো যাচ্ছে, হৃতিক-কঙ্গনা দ্বৈরথ রূপ নিচ্ছে তুমুল ঝগড়ায়। এর শেষ কোথায় তা সময়ই বলবে।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৮, ২০১৬
বিএসকে/জেএইচ