এফডিসি : কবিরপুরে বঙ্গবন্ধু ফিল্ম সিটির কার্যক্রম অচিরেই শুরু হতে যাচ্ছে। রোববার (৩ এপ্রিল) এফডিসিতে জাতীয় চলচ্চিত্র দিবসের দিনব্যাপী আয়োজনের অংশ হিসেবে সকালে অনুষ্ঠিত সেমিনারে তিনি এ ঘোষণা দেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘চলচ্চিত্রে এখন অনেক সংকট ও সীমাবদ্ধতা। এর থেকে উত্তরণের উপায় বের করে সংকট কাটিয়ে চলচ্চিত্রকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। এজন্য সরকার নানাভাবে উদ্যোগ নিচ্ছে। কবিরপুরে বঙ্গবন্ধু ফিল্ম সিটির কার্যক্রম অচিরেই শুরু হবে। এফডিসির পাশের জায়গায় বহুতল ভবন নির্মাণের প্রক্রিয়াও এগিয়ে চলেছে। ’
তথ্য সচিব মুরতজা আহমেদও দিয়েছেন সুখবর। তিনি জানান, চলতি বছরের জুলাই মাসে বঙ্গবন্ধু ফিল্ম সিটি উদ্বোধন করা হতে পারে। এরপর থেকেই সেখানে শুটিং করতে পারবেন নির্মাতারা।
তথ্যসচিব জানান, ফিল্ম সিটিটি দুই পর্যায়ে উদ্বোধন করা হবে। প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষের দিকে। তাদের পরিকল্পনা রয়েছে জুন-জুলাইয়ের মধ্যে এর উদ্বোধন করা। নির্মাতারা উদ্বোধনের পর থেকেই সেখানে শুটিং করতে পারবেন। পরবর্তী সময়ে সেখানে অবকাঠামোগত অনেক কিছুই নির্মাণ করা হবে। সেগুলোর কাজ শেষ হতে বেশ কয়েক মাস লাগবে।
সেমিনারে ইনু বলেন, ‘এই মুহূর্তে চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদেরকে তিনটি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে। প্রথমত, ডিজিটাল ছবি প্রদর্শনে ডিজিটাল ব্যবস্থা নিতে হবে। দ্বিতীয়ত, পাইরেসি বন্ধ করতে হবে এবং তৃতীয়ত, বোধসম্পন্ন ভালো মানের ছবি তৈরি করতে হবে। ’
তথ্যমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, এই ধাপগুলো পেরোতে পারলে চলচ্চিত্রে আবার সুদিন ফিরে আসবে। অনুষ্ঠানে অন্য বক্তারা বেশকিছু প্রস্তাব রেখেছেন। মন্ত্রী সেগুলোকে বিবেচনা করবেন বলেও জানান। তথ্যসচিবের মতে, চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদেরকে ভেদাভেদ ভুলে এগিয়ে আসতে হবে। সরকার তাদের পাশে আছে।
সাড়ে তিন ঘণ্টার এ সেমিনারে আলোচক ছিলেন পরিবেশক ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ, পরিচালক কাজী হায়াৎ, মুশফিকুর রহমান গুলজার, মোহাম্মদ হোসেন জেমী, প্রযোজক আব্দুল আজিজ, খোরশেদ আলম খসরু, মহিউদ্দিন ফারুক এবং এ জে এম শফিউল আলম ভূঁইয়া। সভাপতিত্ব করেন এফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক তপন কুমার ঘোষ।
এফডিসির ৮ নম্বর শুটিং ফ্লোরে বেলা ১১টায় শুরু হওয়া সেমিনারের বিষয় ছিলো, ‘দর্শক সংকট ও বিলুপ্তির পথে প্রেক্ষাগৃহ: বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের সমস্য ও উত্তরণের উপায়’। এতে প্রবন্ধ পাঠ করেন বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের মহাপরিচালক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন। মূলত তার দীর্ঘ প্রবন্ধের সূত্র ধরেই আলোচনায় অংশ নেন অন্যরা।
চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিত্ব ও রাজনৈতিক নেতারা সেমিনারে নানান অভিমত দিয়েছেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ও শোভাযাত্রার পর আলোচনায় অংশ নেন তারা। এতে উঠে এসেছে গুরুত্বপূর্ণ অনেক মন্তব্য ও পরামর্শ।
প্রতি বছরের মতো এবারও উদযাপন করা হচ্ছে জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস। তথ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ও বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন সংস্থার (এফডিসি) তত্ত্বাবধানে দিনটিকে ঘিরে চলছে বর্ণিল আয়োজন ও কর্মসূচি। এবারের আয়োজনের ট্যাগলাইন ‘ডিজিটাল চলচ্চিত্র সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত’।
সকালে চলচ্চিত্র দিবস উদ্বোধন করেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। এখানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। এ ছাড়া ছিলেন নায়করাজ রাজ্জাক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সৈয়দ হাসান ইমাম, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির মহাসচিব মুশফিকুর রহমান গুলজার, তথ্যসচিব মরতুজা আহমদ, অভিনেতা জাভেদ, অভিনেত্রী অঞ্জনা প্রমুখ।
এদিকে বিশেষ দিনটিকে ঘিরে এফডিসি এখন উৎসব মুখর। সকাল থেকে উৎসুক জনতা ভিড় করছেন এখানে। তারা ঘুরে ঘুরে দেখছেন পুরনো দিনের ছবির পোস্টার। পাশাপাশি উপভোগ করছেন সাদাকালো চলচ্চিত্র। মূলত তাদের কাছে প্রধান আকর্ষণ সন্ধ্যার পরের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে অংশ নেবেন রূপালি পর্দার জনপ্রিয় শিল্পীরা।
বাংলাদেশ সময় : ১৬৩৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ০২, ২০১৬
এসও/জেএইচ