বিদায় চলচ্চিত্র পরিচালক শহীদুল ইসলাম খোকন। চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন তিনি।
সোমবার সকাল সোয়া আটটায় উত্তরা আধুনিক হাসপাতালে মারা যান শহীদুল ইসলাম খোকন। এরপর বাদ জোহর তার প্রথম নামাজে জানাজা হয় উত্তরার চার নম্বর সেক্টরের মাটির ঘর মসজিদে। বাদ আছর দীর্ঘদিনের কর্মস্থল এফডিসিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে দ্বিতীয় জানাজা।
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারজয়ী এই পরিচালক দীর্ঘদিন মুখগহ্বরে নার্ভের বিরল অসুখ মোটর নিউরন ডিজিজে আক্রান্ত ছিলেন। এই রোগের বস্তুত কোনো চিকিৎসা নেই।
খোকনকে বেশ লম্বা সময় ধরে রাজধানীর উত্তরা আধুনিক হাসপাতালে কৃত্রিম উপায়ে শ্বাস-প্রশ্বাস দিয়ে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছিলো। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ৬৯ বছর বয়সে মৃত্যুর কাছে হার মানলেন তিনি।
জানা গেছে, আগামী ৭ এপ্রিল বাদ আছর খোকনের কুলখানি অনুষ্ঠিত হবে পারিবারিকভাবে। এর পরদিন তেজগাঁওস্থ চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে আয়োজন করা হচ্ছে দোয়া মাহফিল।
এদিকে শহীদুল ইসলাম খোকনের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শোক জানিয়েছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক ও পরিবেশক এবং শিল্পী সমিতি, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতিসহ শিল্পীরা-কুশলীরা।
১৯৫৭ সালের ১৫ মে বরিশালের ইমামকাঠিতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন শহীদুল ইসলাম খোকন। মাসুদ পারভেজ সোহেল রানার দীর্ঘদিনের সহকারী হিসেবে কাজ করেন তিনি। তার পরিচালিত প্রথম ছবি ‘রক্তের বন্দি’। শুরু থেকে মার্শাল আর্ট নির্ভর অ্যাকশন ছবি নির্মাণে নৈপুণ্য দেখিয়েছেন তিনি।
সমাজের সমস্যার পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির অপচেষ্টা উঠে এসেছে খোকনের ছবিতে। এ তালিকায় আছে ‘বজ্রমুষ্ঠি’, ‘সন্ত্রাস’, ‘লড়াকু’, ‘বীরপুরুষ’, ‘ঘাতক’, ‘বিশ্বপ্রেমিক’, ‘বিপ্লব’, ‘উত্থান পতন’, ‘টপ রংবাজ’, ‘শত্রু ভয়ংকর’, ‘অপহরণ’, ‘সতর্ক শয়তান’, ‘দুঃসাহস’, ‘লম্পট’, ‘রাক্ষস’, ‘নরপিশাচ’, ‘পাগলা ঘণ্টা’, ‘ভন্ড’, ‘লাল সবুজ’, ‘টাকা’, ‘ম্যাডাম ফুলি’ প্রভৃতি।
ভাষা আন্দোলন নিয়ে নির্মিত ছবির তালিকায় জহির রায়হানের ‘জীবন থেকে নেয়া’র পর একমাত্র সংযোজন শহীদুল ইসলাম খোকনের ‘বাঙলা’। আহমদ ছফার ‘ওঙ্কার’ অবলম্বনে এটি নির্মাণ করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৪, ২০১৬
জেএইচ