বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মূল ফটক দিয়ে ঢুকতেই চোখে পড়লো সাজ সাজ রব। হাঁটতে হাঁটতে জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনের লবিতে যেতেই শুনতে পেলাম ‘ও হো রজনী...বলো আরও কত দেরি হবে আসতে সজনী’।
চিত্রটি ছিলো শুক্রবার (২২ এপ্রিল) বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর মূল প্রাঙ্গণ ও নাট্যশালার মূল মিলনায়তনের। শিল্পকলা এদিন উদযাপন করেছে জগতশ্রেষ্ঠ নাট্যকার উইলিয়াম শেক্সপিয়রের ৪৫০তম জন্মবার্ষিকী ও ৪০০তম মৃত্যুবার্ষিকী।
বৈশাখের পড়ন্ত বিকেল, মাথার উপরের সুর্যটা একটু নেমে আসছে। শিল্পকলার মূল ফটকের সামনে দর্শকের ভিড়, কেউ দাঁড়িয়ে কেউবা বসে, কার্নিভালের শুরুটাই ছিলো কিছু বাঁশি ও বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে। নাটকের নাম ‘মুখরা রমণী বশীকরণ’ নাটকটি শুরু হতেই শোনা গেলো দর্শকের হইহই। পেছনে তাকাতেই দেখলাম দর্শক নাটকের অভিনেতা অভিনেত্রীর অভিনয়ের চেয়ে নাচ, গান ও মেকআপ নিয়েই বেশি উৎফুল্ল। নাটকটি পরিবেশন করেছেন কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরমেন্স বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
এটি শেষ হতেই মঞ্চের পেছন থেকে শোনা গেলো পরের নাটকটি কোথায় মঞ্চায়ন করা হবে। একে একে বটতলা পরিবেশন করলো ‘শেক্সপিয়র ও অন্যরা’, প্রাচ্যনাট্য পরিবেশন করলো ‘হ্যামলেট’, মহাকাল নাট্য সম্প্রদায় পরিবেশন করলো ‘শেক্সপিয়র বন্দনা’, পদাতিক নাট্য সংসদ পরিবেশন করলো ‘ম্যাকবেথ’। একটি করে মোট ১০টি নাটক প্রদর্শিত হয় শিল্পকলার ১০টি স্থানে।
কার্নিভাল শেষ করে সবাই গেলেন নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে। সেদিকে শুরু হলো উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধান অতিথি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত, নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার, আতাউর রহমান, আলী যাকের, নাসিরউদ্দীন ইউসুফ। সবাই শেক্সপিয়রের সৃষ্টিকে নিয়ে নানাভাবে বিশ্লেষণ করেছেন। সেই সঙ্গে বক্তব্য রেখেছেন শিল্পকলা একাডেমীর মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী।
সবকিছুর মধ্যে শেক্সপিয়রের সৃষ্টিকে আরও মধুর করে তুলতে শুরু হয় তারই সৃষ্ট সনেট কবিতার মধ্য থেকে দুটি সনেট। চারপাশের পরিবেশ বিকেল থেকে উৎসুক প্রাণচঞ্চল দর্শক নিমিষেই যেন মগ্ন হলো শেক্সপিয়রের সৃষ্টিতে।
বাংলাদেশ সময়ঃ ০১০৫ ঘন্টা, ২৩ এপ্রিল, ২০১৬
টিএস/বিএসকে