নূরজাহান বেগম নামাজ পড়ছেন। একটু পর বিছানায় বসে চুল বাঁধলেন।
নূরজাহান বেগমের ৯১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার (৪ জুন) সকাল ১১টায় রাজধানীর পান্থপথে বসুন্ধরা সিটির স্টার সিনেপ্লেক্সে তথ্যচিত্রটির প্রদর্শনী হলো। এটি নির্মাণ করেছেন তার নাতনি প্রিয়তা ইফতেখার। প্রদর্শনীর আগে তিনি বলেন, ‘নানি ৯১তম জন্মদিন পালন করতে চেয়েছিলেন জাতীয় প্রেসক্লাবে। ভেবেছিলাম এই তথ্যচিত্রটির মাধ্যমে তাকে চমকে দেবো। কিন্তু তিনি হঠাৎ চলে গেলেন না ফেরার দেশে। আমি বিশ্বাস করি, নূরজাহান বেগম আমাদের ছেড়ে চলে যাননি। সব নারীর ছায়া হয়ে বটবৃক্ষের মতো তিনি সবার মাঝেই আছেন। ’
তথ্যচিত্রটি বিনামূল্যে প্রদর্শনে সহযোগিতা করায় স্টার সিনেপ্লেক্স কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান প্রিয়তা। এর আগে নূরজাহান বেগমকে নিয়ে সারা যাকেরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত হয়েছে সংক্ষিপ্ত স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠান। তিনি বলেন, ‘সেকালে নারী জাগরণের পথিকৃৎ ছিলেন নূরজাহান বেগম। তখনকার রক্ষণশীল সমাজেও সাংবাদিকতার জন্য কিংবদন্তি হয়ে আছেন। একালের মিডিয়ায় তার নাতনী প্রিয়তাও নিজের কর্মকান্ডের মাধ্যমে নানীর মতোই এগিয়ে যাবে আশা করি। ’
উন্নয়নকর্মী রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, ‘নূরজাহান আপার ৯১তম জন্মবার্ষিকীতে আজ তার সঙ্গে দেখা করতে পারলাম না। তার সম্পর্কে বলে শেষ করা যাবে না। বাংলাদেশে নারী লেখক গড়ে ওঠার মূল কারিগর তিনি। অসম্প্রদায়িক ও অগ্রদূত কিংবদন্তি এক নারীর নাম নূরজাহান বেগম। তার দেখানো পথে আমরা আজও চলছি। ’ নূরজাহান বেগমকে নিয়ে কবির নাসির আহমেদ ও নির্মাতা চয়নিকা চৌধুরীও বক্তব্য রাখেন।
১৫ মিনিটের তথ্যচিত্রটিতে নূরজাহান বেগমের নিজ মুখে বলা কথা, তার জীবনের জানা-অজানা অধ্যায় ও পারিবারিক জীবনযাপনসহ নানামাত্রিক বিষয় রয়েছে। বেগম পত্রিকার শুরুর দিকের কথা জানিয়ে তিনি এতে বলেছেন, ‘আমার বাবা মোহাম্মদ নাসিরুদ্দীন ১৯১৮ সালে সওগাত পত্রিকা প্রকাশ করেন। তিনি কখনও রাজনীতি করেননি। সবসময় দেশকে ভালোবেসেছেন। আমার বাবার উদ্যোগে ১৯৪৭ সালে সাপ্তাহিক পত্রিকা ‘বেগম’ প্রকাশ শুরু হয় এবং তিনি মারা যাওয়ার সময় আমার হাতে এই পত্রিকার দায়িত্ব তুলে দেন। দেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা নারীদের সহযোগিতায় পত্রিকাটি চালিয়েছি। নারী সাংবাদিক ও সাহিত্যিক হয়ে সবসময় চেয়েছি দেশের সব মেয়েরা যেন নিজেকে তুলে ধরতে পারে। ’
রুপিত্রা প্রডাকশনের ব্যানারে নির্মিত ‘নূরজাহান বেগম-ইতিহাসের কিংবদন্তী নারী’র গ্রন্থনা ও নির্বাহী প্রযোজনা করেছেন রাজু আলীম। তিনি বলেন, ‘প্রিয়তির এই উদ্যোগের কথা শোনার পর ফরিদুর রেজা সাগর ভাই খুবই খুশি হয়েছিলেন। তিনি প্রিয়তিকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার দায়িত্ব দেন আমাকে। তাই প্রযোজনার কাজটি করেছি। তবে প্রিয়তা নিজে যেভাবে খেটেছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তথ্যচিত্রটি শনিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটায় চ্যানেল আইতে প্রচার হবে। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৪ ঘণ্টা, জুন ০৪, ২০১৬
জেএম/জেএইচ