সাবেক হেভিওয়েট বক্সিং চ্যাম্পিয়ন মুহাম্মদ আলির সঙ্গে একটি হিন্দি ছবিতে অমিতাভ বচ্চনের অভিনয়ের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিলো। এ পরিকল্পনা ছিলো নির্মাতা প্রকাশ মেহরার।
ছবিটির ব্যাপারে কথা বলতে ১৯৭৯ সালে লস অ্যাঞ্জেলসের বেভারলি হিলসে আলির বাড়িতে গিয়েছিলেন অমিতাভ। সেই স্মৃতি রোমন্থন করে তিনি বলেছেন, ‘তিনি ছিলেন ভদ্রলোক, সাদাসিধা আর হাসিখুশি। এতো অর্জনের পরও মাটির মানুষ মনে হয়েছিলো তাকে। ছবিটা শেষ পর্যন্ত হয়নি। কিন্তু তার সঙ্গে কাটানো মুহূর্তগুলো চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। ’
আলির বাড়িতে তার সঙ্গে তোলা সাদাকালো একটি স্থিরচিত্র টুইটারে পোস্ট করেছেন অমিতাভ। তিনি মনে করেন, আলি ছিলেন সর্বকালের সেরা বক্সার। তার কথায়, ‘শুধু বক্সিং রিংয়ে নয়, ব্যক্তিজীবনেও নানা প্রতিবন্ধকতার সঙ্গে লড়তে হয়েছে তাকে। সারাজীবন লড়াই করে গেছেন তিনি। সবখানেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। তার জীবন ছিলো অতুলনীয়। বর্ণবিদ্বেষের মুখে পড়ায় নিজের সোনার পদক নদীতে ছুঁড়ে ফেলেছিলেন তিনি। নিজের বইতে একথা লিখেছেন আলি। এটা প্রচুর অনুপ্রেরণাদায়ক। ’
অমিতাভ আরও বলেন, ‘তিনি শুধু ক্রীড়াবিদ ছিলেন না, নিজের চিন্তা-ভাবনার মাধ্যমে তিনি অন্যদের উদ্বুদ্ধ করতেন। আজও তার চিন্তার গভীরতা আমাদেরকে অনুপ্রাণিত করে। তার বয়স হয়েছিলো মাত্র ৭৪ বছর। তার মৃত্যুতে আমি গভীর শোকাহত। তার আত্মা শান্তি পাক। ’
পুত্র অভিষেক বচ্চনকে শৈশবেই আলির কাজ সম্পর্কে জানিয়েছিলেন অমিতাভ। সেকথা জানিয়ে জুনিয়র বচ্চন টুইটারে লিখেছেন, ‘যখন শিশু ছিলাম তখনই বাবা ক্রীড়াঙ্গনের এই শক্তিশালী ব্যক্তিত্বের কাজের সঙ্গে আমাকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন। তিনি সত্যিকারের অনুপ্রেরণা। বিশাল মুষ্টিযোদ্ধা ও ক্রীড়াবিদ ছিলেন বলেই শুধু নয়, দুনিয়াকে তিনি শিখিয়েছেন নিজের অবস্থানের ওপর কীভাবে আস্থা রাখা যায় এবং নিজের আস্থার ওপর কীভাবে দাঁড়ানো যায়। ’
আলির মৃত্যুতে শোকাহত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বলিউডের আরও অনেকেই শোক জানিয়েছেন। শাহরুখ বলেন, ‘বেড়ে ওঠার সময় মুহাম্মদ আলি ছিলেন আমার নায়ক। শান্তশিষ্ট, বক্সিংয়ের ওস্তাদ আর শিল্পমনা মনে হতো তাকে। তার জীবনটা ছিলো আকর্ষণীয় গল্পে ভরা। ’
শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ভুগে গত ৩ জুন মারা যান মুহাম্মদ আলি। বক্সিং থেকে অবসর নিয়েছিলেন ১৯৮১ সালে। ইসলাম ধর্ম গ্রহণের আগে ক্যাসিয়াস ক্লে নামে পরিচিত ছিলেন তিনি। বক্সিং প্রশিক্ষণ নেওয়া শুরু করেন ১২ বছর বয়সে। ১৯৬৪ সালে ২২ বছর বয়সে বিশ্ব হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়নশিপ জয় করেন আলি। ১৯৭৪ ও ১৯৭৮ সালে আরও দু’বার এই স্বীকৃত জিতেছেন তিনি।
বাংলাদেশ সময় : ০৯৪২ ঘণ্টা, জুন ০৫, ২০১৬
জেএইচ