‘কিছু চাওয়া আর কিছু পাওয়া এতোটুকুই তো জীবন/বেঁচে থাকা আর মরে যাওয়া খেলাঘরের এই নিয়ম/কেঁদে আসা পৃথিবীতে/কাঁদিয়ে যে যেতে হবে/কতো গান কতো নাম সবই যে হবে বদনাম/কভু চিন্তা করেছো কি এই আছি এই নেই...’
এই গানের স্রষ্টা পপগুরু আজম খান আমাদের কাছে স্মৃতি হয়ে আছেন। রণাঙ্গনে সামনে থেকে লড়ে যাওয়া কিংবদন্তি এই শিল্পী দেশের প্রতি ভালোবাসার টানেই গান গেয়েছেন বেশি।
১৯৫০ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন আজম খান। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ঢাকায় অংশ নেন বেশ কয়েকটি গেরিলা অভিযানে। স্বাধীনতা অর্জনের পর গঠন করেন উচ্চারণ ব্যান্ড। এটাই এদেশে নতুন ঘরানার সংগীতচর্চায় পরবর্তী প্রজন্মের অনুপ্রেরণা।
১৯৭২ সালে বিটিভিতে ‘এতো সুন্দর দুনিয়ায় কিছুই রবে না’ গানটি প্রচারের পর তুমুল জনপ্রিয়তা ও প্রশংসা পান পপগুরু আজম খান। এরপর থেকেই তার গান ছড়িয়ে পড়ে দেশের প্রতিটি প্রান্তে। গানের ভাষা সহজ ও বাস্তবভিত্তিক হওয়ায় গানগুলো মানুষকে সহজেই স্পর্শ করে ফেলে।
১৯৭৪-৭৫ সালে ‘হায়রে আমার বাংলাদেশ’ গানটি তরুণ প্রজন্মের হৃদয় জয় করে নেয়। রেললাইনের পাশে বস্তিতে কোনো এক ছেলের মৃত্যুতে তার মায়ের কান্নার আলোকেই এই গানটির উৎপত্তি। সালেকা-মালেকা এবং আলাল-দুলালের মতো অনেক জনপ্রিয় গান আর সাধারণ জীবনযাপন তাকে ঠাঁই দিয়েছে সর্বস্তরের মানুষের বুকের গভীরে। তাই আমাদের কাছে তার উপাধি ‘পপগুরু’।
দীর্ঘদিন দুরারোগ্য ব্যধি ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করে ২০১১ সালের ৫ জুন ঢাকাস্থ সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আজম খান। আজ তার পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী। পপগুরুর প্রতি রইলো বাংলানিউজ পরিবারের শ্রদ্ধা।
বাংলাদেশ সময় : ১১১৫ ঘণ্টা, জুন ০৫, ২০১৬
জেএম/জেএইচ