অভিষেক চৌবে পরিচালিত ও অনুরাগ কাশ্যপ পরিচালিত ‘উড়তা পাঞ্জাব’ নিয়ে কয়েকদিন ধরেই চলছে বিতর্কের ঝড়। কেননা ছবির কিছু দৃশ্য ও সংলাপ আপত্তিকর বলে দাবি করছে সেন্সর বোর্ড।
ছবির নাম পরিবর্তন প্রসঙ্গে অনুরাগ কাশ্যপ বলেন, ‘পঞ্জাবের পরিবর্তে কোনও কাল্পনিক জায়গার উপর দৃশ্যায়াণের কথা বলেছে পর্যবেক্ষণ কমিটি। ’ এ বিষয়ে অনুরাগের একটি ঘনিষ্ঠসূত্র বলেন, খুব শিগগিরই কমিটির সঙ্গে সমঝোতায় আসতে না পরলে, নির্মাতাদের ছবিটির নাম পাল্টে শুধু ‘উড়তা’ দিতে হতে পারে।
শোনা যাচ্ছে ছবিটি নিয়ে এতো বিতর্কের কারণ হচ্ছে, ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যের আসন্ন নির্বাচন। ‘উড়তা পাঞ্জাব’ ছবিতে পাঞ্জাবের ভয়াবহ মাদক সমস্যা দেখানো হয়েছে। কংগ্রেস ও আম আদমি পার্টি উভয় দল এ সমস্যাকে রাজ্যের প্রধান হুমকি বলে চিহ্নিত করেছে। নির্বাচনের ঠিক আগে এমন একটি ছবির মুক্তি রাজ্যে ক্ষমতাশীল শিরোমণি আকালি দল ও বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারকে প্রশ্নের মুখে ফেলে দিতে পারে।
অন্যদিকে সেন্সর বোর্ডের প্রধান পাহলাজ নিহালানি অভিযোগ করেছেন, ছবিটির নির্মাতা অনুরাগ কাশ্যপ আম আদমি পার্টির প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়ালের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। এর তীব্র প্রতিবাদ করেছেন কাশ্যপ ও কেজরিওয়াল দু’জনে। কেজরিওয়াল পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, ক্ষমতাশালী বিজেপির নির্দেশেই পাহলানি ছবিটির প্রদর্শন বন্ধ করতে চাইছেন।
গত বুধবার (৮ জুন) মুম্বাইয়ের একটি সাংবাদ সম্মেলনে ‘উড়তা পঞ্জাব’-এর সমর্থনে হাজির হয়েছিলেন বলিউডের প্রথম সারির বহু তারকা। এখানে অনুরাগ দাবি করেছেন, তার পরিচালিত বহু ছবি এর আগে আটকে দিয়েছে সেন্সর। কিন্তু এইবারের অভিজ্ঞতা অসহনীয়! এ ছাড়া অনুরাগ আগেই বলেছিলেন, ‘দেশটাকে তার উত্তর কোরিয়া মনে হচ্ছে। ’ তবে এর উত্তরে কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী রাজ্যবর্ধন সিংহ রাঠোর বলেন, ‘আপনার মনে হচ্ছে উত্তর কোরিয়ায় আছেন? মনে রাখবেন, আমাদের দেশটা গণতান্ত্রিক দেশ। এখানে ভোট হয়। ’
প্রতিবাদ জানাতেই ওই সাংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ছবির অভিনয়শিল্পী শাহিদ কাপুর ও আলিয়া ভাট। এ ছাড়াও ছিলেন মহেশ ভাট, মুকেশ ভাট, জোয়া আখতার, ছবির পরিচালক অভিষেক চৌবেসহ অনেকেই। ছবিটি নিয়ে শাহিদের মন্তব্য, তরুণ সম্প্রদায়ের অবশ্যই দেখা উচিত। কারণ মাদক সম্পর্কে সচেতনতা বাড়লেই মাদক সেবন বন্ধ করা সম্ভব। ৩৫ বছর বয়সী এই অভিনেতা সকলকে আহ্বান জানিয়ে আরও বলেন, ‘আমাদের লড়াইয়ে যোগ দিন। ’
প্রযোজক ও পরিচালক মহেশ ভাট বলেন, ‘আমাদের তো সৌদি আরব হলে চলবে না। ওদেশের সমাজে প্রাচুর্য রয়েছে, কিন্তু মুক্তচিন্তার কোনও জায়গা নেই!’ মুকেশ ভাটের মন্তব্য, ‘মন্ত্রকের কাছে আমার আবেদন, তারা পাহলাজ নিহালানিকে পদ থেকে সরিয়ে দিন। তার সিবিএফসি’র কর্তা হওয়ার কোনও যোগ্যতা নেই। ’ আরেকটি চিন্তার বিষয়, ছবির বিরুদ্ধ এমন প্রচারের ফলে অথবা কোনওভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলে প্রায় ৬০ কোটি টাকার ক্ষতি হতে চলেছে প্রযোজকদের। সাংবাদিকদের দিকে প্রশ্ন ছুড়ে মুকেশের আরও বলেন, ‘সেই দায় কার?’ তাহলে ছবি কি নিষিদ্ধ হওয়ার দিকেই এগোচ্ছে? সংবাদমাধ্যমকে অনুরাগের জবাব, ‘সেটা যাতে না হয় সেই ভার আমি নিয়েছি। এর আগে ইউপিএ’র বিরুদ্ধে নিজের ফিল্ম নিয়ে লড়েছি। এখন এনডিএ’র বিরুদ্ধেও লড়ছি। তফাত একটাই। পহলাজ নিহালনি মানুষটির মতো ইগোয়িস্টিক কারও মুখোমুখি এর আগে হইনি আমি!’
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৮ ঘণ্টা, জুন ০৯, ২০১৬
বিএসকে