দুঃস্থ ও অসুস্থ শিল্পীদের সহায়তার লক্ষ্যে ফাউন্ডেশন গড়লেন কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন। তার নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে রেশ ফাউন্ডেশন।
বছর দুয়েক হলো ডিসট্রেসড চিলড্রেন অ্যান্ড ইনফ্যান্টস ইন্টারন্যাশনালে (ডিসিআই) যোগ দিয়েছেন সাবিনা ইয়াসমিন। এখানে দুঃস্থ শিশুদের জন্য কাজ করেন তিনি। যুক্ত আছেন মাদকবিরোধী সংগঠন ‘মানুষ’-এর সঙ্গে।
সাবিনা বাংলানিউজকে বললেন, ‘সামাজিক কাজকর্ম করার ইচ্ছা আমার অনেকদিন থেকেই। আমি সবসময়ই দুঃস্থ ও অসুস্থ শিল্পীদের পাশে থাকার চেষ্টা করি। যতোটুকু পারি ব্যক্তিগতভাবেই তাদেরকে সহযোগিতা করি। রেশ ফাউন্ডেশনের কথা যখন আমাকে ফরিদ বললো, তাকে জানালাম তোমাদের সঙ্গে আছি। এভাবে শুরু হলো। আমাদের মূল উদ্দেশ্য হলো অসুস্থ শিল্পীদের পাশে দাঁড়ানো। এজন্যই আমি সাগ্রহে রাজি হয়েছি। আমাকে ডাকায় খুশি হয়েছি, খুব ভালো লেগেছে। ’
সম্প্রতি বরেণ্য সংগীত পরিচালক আলাউদ্দিন আলী, সংগীতশিল্পী লাকী আখান্দ, কণ্ঠশিল্পী শাহনাজ রহমান স্বীকৃতি ও খেয়া এবং প্রখ্যাত যন্ত্রসংগীত শিল্পী আলমাস আলী অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তাদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে সাহায্য চেয়ে পাওয়ার আগেই আলমাস আলী মারা যান। এরপরই সংগীত পেশাজীবীদের জন্য একটি চিকিৎসা তহবিল গড়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন সংগীত পরিচালক ফরিদ আহমেদ ও গীতিকবি হাসান মতিউর রহমান।
দেশীয় সংগীতের প্রচার ও প্রসার, বিশুদ্ধ সংগীত পরিচর্যা, সংগীতের সঙ্গে যুক্ত পেশাজীবী মানুষগুলোর জীবনতথ্য, যোগাযোগ ও কীর্তির কথা, স্বীকৃতি ও স্বাতন্ত্রের কথা, আনন্দ-বেদনা, সুখে-দুঃখে তাদের পাশে থাকা, পাশে গিয়ে দাঁড়াতে ঐক্যবদ্ধ উদ্যোগ গ্রহণের মতো ব্যতিক্রম লক্ষ্য সামনে রেখে সংগীত পরিচালক ফরিদ আহমেদ গত বছরের ১৩ এপ্রিল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে রেশ নামে একটি গ্রুপ গড়ে তোলেন। এতে দেশের কণ্ঠশিল্পী, গীতিকবি, সুরকার-সংগীত পরিচালক ও যন্ত্রসংগীত শিল্পীদের ফটো আর্কাইভ করা হয়েছে। এতে রয়েছে তাদের ছবি ও সংক্ষিপ্ত পরিচিতি। ওই গ্রুপেরই প্রাতিষ্ঠানিক রূপ হলো রেশ ফাউন্ডেশন।
শনিবার (১১ জুন) সন্ধ্যায় ঢাকার ইস্কাটনে একটি রেস্তোরাঁয় রেশ ফাউন্ডেশনের পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা সমবেত হয়েছিলেন। রেশ ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আছেন সংগীত পরিচালক ফরিদ আহমেদ। তিনি বলেছেন, ‘এ ফাউন্ডেশন হলো অরাজনৈতিক, অলাভজনক ও কল্যাণমুখী সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন। তবে আর দশটা স্বেচ্ছাসেবী বা কল্যাণমুখী সামাজিক উদ্যোগ থেকে রেশ একটু আলাদা। সেই স্বাতন্ত্রের রেখা হলো দেশীয় সংগীত। সংগীত শিল্পীসমাজই থাকবে এর ভাবনার কেন্দ্রে। সৃজনশীল কাজের মাধ্যমে শিল্পীদের চিকিৎসাকালীন সহায়তায় তহবিল গঠন করাই হবে মূল লক্ষ্য। পাশাপাশি দেশীয় সংগীতাঙ্গনের সব শিল্পীর পরিপূর্ণ ডাটাবেজ সংবলিত ইন্টারেক্টিভ ওয়েব পোর্টাল তৈরির কাজও চলছে। ’
পরিচালনা পর্ষদে আরও আছেন যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হাসান মতিউর রহমান (গীতিকবি), সহ-সভাপতি ফরিদা ফারহানা (গীতিকবি), নির্বাহী সদস্য মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান (যন্ত্রসংগীত শিল্পী), শাহনাজ বাবু (কণ্ঠশিল্পী), রবিউল ইসলাম জীবন (গীতিকবি ও সাংবাদিক) ও রিয়াজ আহমেদ (আইটি বিশেষজ্ঞ) এবং কোষাধ্যক্ষ জামালউদ্দীন চৌধুরী (সংগঠক)।
বাংলাদেশ সময় : ০০৫১ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০১৬
জেএইচ