এ সময়ের জনপ্রিয় অভিনেত্রী অপর্ণা ঘোষ ছোট পর্দার পাশাপাশি বড় পর্দায়ও কাজ করছেন। নাটক-টেলিছবির মতো চলচ্চিত্রেও অভিনয় নৈপুণ্য দেখিয়ে চলেছেন।
বাংলানিউজ: ঈদের কয়টি নাটকে কাজ করেছেন?
অপর্ণা ঘোষ: এ ঈদে আমাকে বেশকিছু নাটকে দেখা যাচ্ছে। এর মধ্যে জাহিদ হাসান সঙ্গে অঞ্জন আইচের ‘আব্দুল মজিদ ও দুই চাইনিজ চিকিৎসক’ (বাংলাভিশন) ও তারেক মিয়াজীর ‘চান্দু মিয়ার ঢাকা সফর’ (আরটিভি), মাহফুজ আহমেদের সঙ্গে মাহমুদ দিদারের ‘অলৌকিক প্রেমের ঘ্রাণ’, ইমনের সঙ্গে সাখাওয়াত মানিকের টেলিছবি ‘অনুভবে অনুভূতি’, আনিসুর রহমান মিলনের সঙ্গে সকাল আহমেদের ‘চাই শিক্ষিত চোর পাত্র’ (বৈশাখী টিভি), জোভানের সঙ্গে নাজনীন হাসান চুমকির ‘টমবয়’ (দীপ্ত টিভি), জন কবিরের সঙ্গে শাফায়েত মনসুর রানার ‘ইউ মি অ্যান্ড বেবি’ (জিটিভি), ‘এক্স ওয়াই জেড’ (আরটিভি) ও ‘লাইক অ্যান্ড শেয়ার রিলোডেড’ (জিটিভি) অন্যতম।
বাংলানিউজ: কোন কোন চরিত্র একটু ভিন্ন মনে হয়েছে?
অপর্ণা: প্রতিটি চরিত্রই আমার কাছে ভিন্ন। সবসময় বৈচিত্রময় চরিত্রে অভিনয় করতে ভালো লাগে। আলাদাভাবে কোনো চরিত্রই বিচার করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তবে নতুন অভিজ্ঞতা হলো দুটি কাজে। মাহমুদ দিদারের ‘অলৌকিক প্রেমের ঘ্রাণ’-এ বার ড্যান্সারের চরিত্রে অভিনয় করেছি এই প্রথম।
এ ছাড়া ‘অনুভবে অনুভূতি’ টেলিছবিতে নিঃসঙ্গ তরুণীর চরিত্রে দর্শকরা আমাকে দেখবেন। নিঃসঙ্গতা কাটাতে ইন্দোনেশিয়ার বালিতে পাড়ি জমায় সে। এর চিত্রায়ন হয়েছে ইন্দোনেশিয়ায়। এই চরিত্রে কাজ করেও ভালো লেগেছে।
বাংলানিউজ: কোনো চরিত্রের জন্য বাড়তি প্রস্তুতি নিতে হয়েছে?
অপর্ণা: প্রতিটি চরিত্রের জন্যই প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন। টুকটাক হলেও নিতে হয়। কিন্তু আমরা অভিনয়শিল্পীদের হাতে সেই সময়টা আসলে থাকে না। তাছাড়া কেউ আমাদেরকে বলছেও না যে, প্রস্তুতিটা দরকার আছে। সবাই এতো ব্যস্ত যে, কাজ শেষ করলেই বাঁচে! তবে প্রস্তুতি ছাড়া কোনো চরিত্রেই সেরাটা দেওয়া সম্ভব নয়।
বাংলানিউজ: ঈদে আপনার অভিনীত ‘দর্পণ বিসর্জন’ ছবিটির ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার হলো।
অপর্ণা: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একাধিক গল্পের নাটকে অভিনয় করেছি। কাজী নজরুল ইসলামের নাটকেও অংশ নিয়েছি। এবার পল্লীকবি জসীমউদ্দীনের গল্পের নায়িকা হলাম। গত বছর মুন্সিগঞ্জের সরিষাবন চর এলাকায় এর দৃশ্যধারণ হয়েছে। কাজটি করতে বেশ পরিশ্রম হয়েছে।
তবে ছবিটিতে কাজ করে সন্তুষ্ট হতে পারিনি। কেননা চিত্রায়ন চলার সময় পরিচালক সুমন ধর জানান, এটি একটি টেলিফিল্ম। পরে জানতে পারি এটি নাকি ছবি! আমার মনে হয় বাজেটের ঘাটতি ছিলো। এটাই যদি হবে তাহলে পরিচালকের উচিত ছিলো আমাদেরকে আগে থেকে জানানো। টেলিফিল্মের কথা বলে ছবি বানিয়ে ফেলা ঠিক হয়নি।
পল্লীকবির ‘আয়না’ গল্প অবলম্বনে তৈরি হয়েছে ‘দর্পণ বিসর্জন’। ছবিটিতে জেলের নববিবাহিতা বউয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছি। স্বামীর সঙ্গে রাখা একটি আয়না দেখে সে ভাবে এর মধ্যে বোধহয় তার আরেকটা বউ আছে!
বাংলানিউজ: ‘ভুবন মাঝি’ ছবির কাজ কতোদূর এগিয়েছে?
অপর্ণা: দৃশ্যধারণ শেষ হয়েছে। এখন চলছে সম্পাদনা। এ বছরের ডিসেম্বরে ছবিটি মুক্তি দেওয়ার কথা রয়েছে। তবে এটি নির্ভর করছে পুরো কাজ সম্পন্ন হওয়ার ওপর।
বাংলানিউজ: ছবিটির জন্য আলাদাভাবে প্রস্তুতি নিতে হয়েছে?
অপর্ণা: অবশ্যই, চরিত্রটির জন্য প্রস্তুতি নিতে হয়েছে। তা-ও আবার দেড় মাসের প্রস্তুতি। ১৯৭০ সালের পূর্ব পাকিস্তানের সম্ভ্রান্ত ঘরের একজন স্বাধীনচেতা মেয়ের চরিত্রটি নিজের মধ্যে ধারণ করা সহজ বিষয় ছিলো না।
নিজেকে প্রস্তুত করতে সেই সময়ের বেশকিছু চলচ্চিত্র দেখেছি, বই পড়েছি, মুক্তিযুদ্ধের সময়কার অনেকের সঙ্গে কথা বলেছি। এভাবেই ওই সময়টাকে নিজের মধ্যে ধারণের চেষ্টা করেছি। যেহেতু আগে থিয়েটার করতাম এবং ফরিদা চরিত্রটিও থিয়েটারকর্মী, ফলে আমার কিছুটা সুবিধাই হয়েছে।
আর ‘ভুবনমাঝি’ ছবিতে ভারতীয় অভিনেতা পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাজ করে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করছি। তার কাছ থেকে অনেক কিছু শিখতে পেরেছি।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪২ ঘণ্টা, জুলাই ০৮, ২০১৬
জেএমএস/জেএইচ