রোজার ঈদে মুক্তি পেয়েছে চারটি ছবি। এগুলো হলো ‘শিকারী’, ‘সম্রাট’, ‘রানা পাগলা-দি মেন্টাল’ ও ‘বাদশা-দ্য ডন’।
নতুন শাকিব, স্মার্ট শাকিব- এ দুটি বিশেষণ ছড়িয়ে পড়েছে সারাদেশে। ‘শিকারী’ ছবিকে কেন্দ্র করে চলছে এই ম্যানিয়া। অভিনয়, লুক, গেটআপ, ড্রেসআপ- সব মিলিয়ে তার নতুন রূপ। তাই উচ্ছ্বসিত ভক্তরা। ‘শিকারী’তে শাকিবের নতুন লুক নিয়ে মানুষের আগ্রহ ছিলো ব্যাপক। দারুণ অভিনয়ে পুরোটা সময় মন্ত্রমুগ্ধ করে রেখেছেন তিনি। অভিব্যক্তি পরিবর্তনের সময় দেখিয়েছেন মুন্সিয়ানা।
হলজুড়ে শাকিবের এন্ট্রি দৃশ্য থেকে সংলাপ, অ্যাকশন দেখে দর্শকরা শিষ বাজিয়েছেন, হাততালি তো ছিলোই। সবকিছুতেই দর্শক হইহই করেছে। তার আওড়ানো সংলাপ ‘সব খেল খতম’ এখন ভক্তদের মুখে মুখে। জয়ন্ত মিত্র বড়সড় পর্যালোচনা দিয়েছেন শাকিবের ফ্যানপেজে। ‘শিকারী’র সূচনা দৃশ্যের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন তিনি।
ভক্তদের কাছে এবারের ঈদের এক নম্বর ছবি ‘শিকারী’। হলভর্তি দর্শক, করতালি-শিস, ‘হাউসফুল’ লেখা নোটিশ বোর্ড- এসবই এখন ‘শিকারী’র প্রদর্শনীতে নিয়মিত চিত্র। আহমাদ সাজিদ সিনেমাখোরদের আড্ডায় লিখেছেন, ‘শিকারী দেখতে গিয়ে অবাক হয়ে গেলাম। চারপাশে খালি মানুষ আর মানুষ!’ বাগআঁচড়ায় ময়ূরী সিনেমা হলে ছবি দেখে সাদ্দাম হোসেন জানান, দুপুর ১২টার শোতে তিনি দেখেছেন হাউসফুল আর প্রচুর ভিড়।
সিলেটের নন্দিতায় রাতের শো দেখে ওয়ালি হোসেন বলেন, ‘ঈদে সবাই ছবি দেখে, কিন্তু এভাবে কোনো সময় দেখিনি। ’ এসকে রায়হানের মতে, ‘শিকারী সারাদেশ কাঁপিয়ে দিলো!’ আপন আহামেদের মন্তব্য, “সারাদেশে ‘শিকারী’ দাপটে চলছে!” গল্প সাধারণ হলেও উপস্থাপনটা অসাধারণ লেগেছে দরামপুর সিনেমা হলের দর্শক তারিকের।
জাজ মাল্টিমিডিয়া ও কলকাতার এসকে মুভিজের যৌথ প্রযোজনার ছবিটির প্রেক্ষাপট কলকাতার। গল্পটা এমন- হাইপ্রোফাইল আইনজীবী রুদ্র চৌধুরীকে খুন করতে বাংলাদেশ থেকে ভাড়া করা হয় সুলতানকে। তারপর তার চেষ্টা চলতে থাকে। রুদ্র চৌধুরীর বাসার কাজের লোক তিনকড়ি বাবুকে জিম্মি করে সে ঢুকে পড়ে।
অ্যাকশন, গান নিয়েও প্রশংসা ঝরেছে দর্শকের কণ্ঠে। ঝকঝকে, কালারফুল, চিত্রনাট্য, নির্মাণশৈলী, অভিনয় মনে রাখার মতো বলে মন্তব্য তাদের। ভক্তদের কাছে সবশ্রেণীর জন্য বিনোদনমূলক ছবি এটি। আসিফ উর রহমানও ‘শিকারী’ দেখে মুগ্ধ। হাসান মির্জার মন্তব্য, অসাধারণ একটা ছবি।
এ ছবিতে শাকিবের সঙ্গে প্রথমবার জুটি বেঁধেছেন কলকাতার শ্রাবন্তী। তাদের রসায়ন দর্শকদের ভালো লেগেছে। রবীন্দ্রসংগীতের (মম চিত্তে গানমাধ্যমে ছবিতে শ্রাবন্তীর এন্ট্রি। ‘শিকারী’তে ব্যবহার করা হয়েছে আরও একটি রবীন্দ্রসংগীত। শ্রাবন্তীকে যদিও শুধু শোপিস বলে মন্তব্য করেছেন কেউ কেউ। পুরো ছবিতে কয়েকটা সংলাপ ছাড়া শ্রাবন্তীর তেমন কোনো ভূমিকা নেই।
ছবিটিতে আরও অভিনয় করেছেন অমিত হাসান, রেবেকা, শিবা সানু, সুব্রত এবং কলকাতার সব্যসাচী চক্রবর্তী, রুদ্র প্রতাপ, সুপ্রিয় দত্ত, লিলি চক্রবর্তী, খরাজ মুখার্জি, রাহুল প্রমুখ।
কুষ্টিয়ায় এক দর্শক ৮ জুলাই জানান, টানা চারটি শো হাউসফুল হওয়ায় টিকিট পাননি তিনি। একই দিন নেত্রকোনা হিরামন সিনেমা হলে ছবিটি দেখে তপু জানান, ছবিটি সবদিক থেকেই প্রশংসার দাবিদার। নয়ন খান জানান, সারা বাংলাদেশে শিকারীর জোয়ার উঠেছে। তিনি নিজে দু’বার দেখেছেন। তার মতে, এটা বারবার দেখার মতো ছবি। লিখন অভি টানা দু’বার ছবিটি দেখেছেন। তিনিও দর্শকের উপচেপড়া ভিড় দেখেছেন।
নেতিবাচক মন্তব্যও দেখা গেছে। আশিক বলেছেন, ‘শিকারী ছবিটা তেমন ভালো লাগেনি প্রথম ও শেষ ভালো লেগেছে, কিন্তু মাঝখানে তেমন ভালো লাগেনি। ’ হলের পরিবেশ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। অস্পষ্ট, সাউন্ড সিস্টেম ভালো না। প্রিন্টগুলো এইচডি নয়। এইচএম মামুনের অভিযোগ, পরিচালনায় রাজেশ কুমার যাদব (ভারত) ও আব্দুল আজিজ (বাংলাদেশ) লেখা। অথচ এ ছবির পরিচালক ছিলো জাকির হোসেন সীমান্ত ও কলকাতার জয়দেব মুখার্জি। কিন্তু তাদের নাম ছবিতে নেই। ’ সালমান আহমেদও অভিযোগ তুলেছেন, ‘এতোদিন জেনে এলাম ‘শিকারী’র পরিচালক জাকির হোসেন সীমান্ত। কিন্তু পর্দায় পরিচালক হিসেবে আব্দুল আজিজের নাম ব্যবহার হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০১৪৫ ঘণ্টা, জুলাই ১৪, ২০১৬
জেএইচ