কক্সবাজারের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তুষার আহমেদের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ তুললেন নাট্য পরিচালক মাহমুদ দিদার। গত ১৩ জুলাই সাগরপাড়ে শুটিংকে ঘিরে এ অপ্রীতিকর ঘটনার সম্মুখীন হন তিনি।
দিদার বাংলানিউজকে জানান, গত ১২ জুলাই সব নিয়ম মেনে অনুমতি নিয়ে কক্সবাজারে সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে ‘স্বপ্নের গাঙচিল’ নামের একটি নাটকের কাজ করেন তিনি। পরদিন সাগরপাড়ে দৃশ্যধারণের পরিকল্পনা করা হয়। এজন্য তার ভাই দীপ্ত টিভির প্রতিনিধি হারুনুর রশীদ সকালেই জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে যান। কিন্তু সেখানে তখন ভিডিও কনফারেন্স চলছিলো।
এদিকে নিলয় ও শখসহ কলাকুশলীদের নিয়ে মাহমুদ দিদার ততোক্ষণে সাগরপাড়ে পৌঁছে গেছেন। ‘আমরা সমুদ্র সৈকতে এলেও অনুমতি পাইনি বলে ক্যামেরা চালু করিনি’- দাবী দিদারের।
অন্যদিকে দীপ্ত টিভির প্রতিনিধি তার একটি অ্যাসাইনমেন্ট সম্পন্ন করে ফের জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে পৌঁছানোর আগে খবর আসে দিদারকে গাড়িতে তুলে নিয়ে গেছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তুষার আহমেদ। তারপর থেকে দুই ঘণ্টা দাঁড় করিয়ে রাখা হয় তাকে। সঙ্গে অনুমতি ছাড়া শুটিংয়ের কারণে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
দিদারের ভাষ্য, ‘আমরা সাগরপাড়ে গিয়ে কাজের প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। ক্যামেরা কিন্তু চালু করিনি। কারণ আমার ভাই জানিয়েছিলো, জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের কর্মকর্তারা ব্যস্ত। তাই অপেক্ষা করছিলাম। অথচ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ দেখিয়ে ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে জরিমানা করলেন। তিনি আমাকে বসতে পর্যন্ত বলেননি। আমি তো ভাই আসামী না! আগামীতে কক্সবাজার এসে অন্য কোনো চলচ্চিত্রকর্মীকে যেন হেনস্থা করা না হয় সেজন্য অভিযোগ করলাম। ’
এদিকে অভিযোগ প্রসঙ্গে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তুষার আহমেদ কক্সবাজারে বাংলানিউজের স্টাফ করেসপন্ডেন্ট তুষার তুহিনকে বলেন, ‘অনুমতি ছাড়া শুটিং করতে সমুদ্র সৈকতে এসেছিলেন তারা। তাই তাদেরকে জরিমানা করা হয়েছে। আপনারা জানেন দেশের অবস্থা ভালো না। জেলা প্রশাসকের অনুমতি ছাড়া কাজ চলাকালে যদি কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে তাহলে দায়ভার কে নেবে? তারা আগের দিন শুটিংয়ের অনুমতি নেননি কেনো?’
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের বক্তব্য নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। কারণ সাগরপাড়ে পর্যটকরা ঘোরাফেরা করছেন। আর খুব কম পর্যটকই একা বেড়াতে যান সেখানে। সবাই দলবেঁধে ঘোরেন। সেক্ষেত্রে একটি ইউনিটের সদস্যদের নিয়ে নির্মাতা মাহমুদ দিদারের সাগরপাড়ে যাওয়াকে কেনো নেতিবাচকভাবে দেখা হলো তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।
অনেকে অভিযোগ করেছেন, সাগরপাড়ে অবৈধ দোকানপাট, অনুমোদনহীন হকার ও অনৈতিক কার্যকলাপের দিকে জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের কোনো নজরদারি নেই। উল্টো শিল্পী-নির্মাতাদের হেনস্থা করছেন তারা।
নির্মাতা মাহমুদ দিদারের গ্রামের বাড়ি কক্সবাজারে। ঈদের ছুটিতে তিনি সেখানে বেড়াতে গেলে বন্ধু নাট্যকার তাবারক হোসেন ভূঁইয়া তার দুটি নাটক পরিচালনার অনুরোধ করেন তাকে। ‘স্বপ্নের গাঙচিল’ এরই একটি, অন্যটির নাম ‘নির্জন উপকূলে’। এতে নিলয়ের সঙ্গে আছেন জাকিয়া বারী মম।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৫ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০১৬
জেএইচ/এসও