গত বছর ব্যাংককে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় সংগীতকার লাকী আখান্দের পাশে দাঁড়ান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চিকিৎসার জন্য তখন এই সুরস্রষ্টাকে পাঁচ লাখ টাকা সহায়তা দেওয়া হয়।
মাম্মিন্তি বলেন, ‘সবাই আমার বাবার জন্য দোয়া করবেন এটা প্রত্যাশা করি। আর সাহায্য-সহযোগিতার ব্যাপারে সরকার আবারও এগিয়ে আসবেন বাবা এমন আশা বেঁধেছেন বুকে। ’
এদিকে লাকী আখান্দকে সহযোগিতা পাঠানোর জন্য তিনটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে বলে একাধিক গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে। এ নিয়ে মাম্মিন্তি বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমি বা আমরা কিছু জানি না। সবার কাছে আর্থিক সহযোগিতা চাইনি আমরা। ’
মাম্মিন্তি আরও জানান, তার কিংবা তার পরিবারের অজান্তে ‘নিজ দায়িত্বে’ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর দিয়ে সহযোগিতা চাওয়ার বিষয়টি অপ্রত্যাশিত ও দুঃখজনক। তার দাবি, ‘তেমন পরিস্থিতি হলে আমরা অবশ্যই জানাবো। ’
এদিকে মাম্মিন্তি কাঁদো কাঁদো স্বরে বলেন, ‘বাবার শারীরিক অবস্থা বেশ খারাপ। আমি সবসময় তার পাশে আছি। অনেক সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে ভালোভাবে কথা বলার সুযোগ হয় না। দয়া করে তাকে নিয়ে বিভ্রান্তিকর খবর প্রচার বন্ধ করুন। ’
সুরকার ও মুক্তিযোদ্ধা লাকী আখান্দ এখন রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বারডেম হাসপাতালে থেকে শুক্রবার (১৬ জুলাই) তাকে সেখানে স্থানান্তর করা হয়। ঈদের পর মেরুদণ্ডে প্রচন্ড ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন লাকী। ফুসফুসের ক্যানসারে ভুগছেন তিনি।
ছ’মাসের চিকিৎসা শেষে থাইল্যান্ডের ব্যাংকক থেকে ২৫ মার্চ দেশে ফেরেন লাকী। এরপর বাসায়ই সময় কাটছিলো তার। কেমোথেরাপি নেওয়ার পর শারীরিক অবস্থার বেশ উন্নতিও হয়েছিলো।
মাম্মিন্তি সে সময় জানিয়েছিলেন, এ বছরের জুনে তার বাবাকে নিয়ে আবার ব্যাংকক যেতে হবে। জুন পেরিয়ে গেলেও তাদের যাওয়া হয়নি। এখন জানালেন, আপাতত ব্যাংকক যাওয়ার পরিকল্পনা নেই। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ক্যানসারে আক্রান্ত লাকীকে সেখানকার হাসপাতালে গিয়ে আরও পাঁচটি কেমো নেওয়ার কথা ছিলো।
গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর অসুস্থ হয়ে পড়ায় লাকী আখান্দকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সপ্তাহখানেক পর তার ফুসফুসে ক্যানসার ধরা পড়ে। তখনই ব্যাংককের পায়থাই হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। প্রথম দফায় শরীরে অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়। এরপর অক্টোবরের প্রথম দিকে ঢাকায় নিজ বাসায় ফেরেন লাকী। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় নভেম্বরে তাকে ফের ব্যাংককে নেওয়া হয়। এ অবস্থায় তার চিকিৎসায় এগিয়ে আসে সরকার।
লাকী আখান্দ অসংখ্য কালজয়ী গান সুর করেছেন, গেয়েছেনও। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য— ‘আমায় ডেকো না, ‘এই নীল মনিহার, ‘কবিতা পড়ার প্রহর এসেছে’, ‘যেখানে সীমান্ত তোমার, ‘মামনিয়া, ‘লিখতে পারি না কোনো গান, ‘ভালোবেসে চলে যেও না’, ‘বিতৃঞ্চা জীবনে আমার’, ‘কি করে বললে তুমি’, ‘এতো দূরে যে চলে গেছো’ প্রভৃতি।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৮ ঘণ্টা, জুলাই ১৬, ২০১৬
এসও/জেএইচ