বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহে বলিউডের হিন্দি ছবির প্রদর্শনের প্রতিবাদে কাফনের কাপড় পরে আন্দোলন করেছিলেন জনপ্রিয় চিত্রনায়ক শাকিব খান। এবার ভারতীয় বাংলা ছবি আমদানির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ালেন আলোচিত এই নায়ক।
বুধবার (২০ জুলাই) দুপুর সাড়ে ১২টায় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএফডিসি) মূল ফটকের বিপরীতে সড়কের ওপর বৃষ্টিতে ভিজে মানববন্ধনে অংশ নেন ঢালিউডের সুপারস্টার, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি ও অভিনেতা শাকিব খান।
সম্প্রতি সেন্সরে জমা পড়েছে কলকাতার ছবি ‘কেলোর কীর্তি’। এটি আগামী ঈদুল আজহায় মুক্তি দেওয়ার চেষ্টা চলছে। সাফটা চুক্তিতে আমদানি ও রপ্তানির যথার্থ নিয়মকানুন না মানার কারণে এরই মধ্যে ছবিটি প্রদর্শনে স্থগিতাদেশ দিয়েছেন আদালত। পরবর্তী সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত এটি বাংলাদেশে সেন্সর ছাড়পত্র বা মুক্তি পাবে না।
রাজা চন্দ পরিচালিত এই ছবি আমদানিকে ঘিরেই আন্দোলনে নেমেছেন চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোর নেতা-কর্মীরা। বুধবার দুপুরে ভারতীয় ছবি আমদানির প্রতিবাদে এফডিসির সামনে মানববন্ধন করেন তারা। এতে ছিলেন চলচ্চিত্রের শীর্ষ শিল্পী ও কলাকুশলীরা।
বৃষ্টি চলাকালীন মানববন্ধনে উপস্থিত শাকিব বলেন, ‘আমরা কখনও ছবি বিনিময়ের পক্ষে ছিলাম না, এখনও নেই, ভবিষ্যতেও থাকবো না। ঈদের আগে আমরা তথ্যমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছিলাম। হঠাৎ দেখলাম কলকাতায় মুক্তিপ্রাপ্ত একটি ছবি এখানে মুক্তির অনুমতি পেয়ে গেলো! এমন অসম বিনিময় আমরা মেনে নেবো না। ’
যোগ করে শাকিব আরও বলেন, ‘আমার বিশ্বাস আজকের কর্মসূচির পর সরকার নতুন করে বিষয়টি নিয়ে ভাববেন ও বিবেচনা করবেন। ’
শাকিব জানান, গত ঈদে দেশীয় চলচ্চিত্রে নতুন সম্ভাবনার চিত্র দেখা গেছে। ঢাকাসহ সারাদেশের সিনেমা হলে দর্শক সমাগমই প্রমাণ করে চলচ্চিত্রে সুদিন ফিরেছে। এ অবস্থায় কোনো ষড়যন্ত্র তারা কার্যকর হতে দেবেন না বলে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
মানববন্ধনে পরিচালক সমিতির সভাপতি দেলোয়ার জাহান ঝন্টু বলেন, ‘অসমভাবে ভারতীয় ছবি আমদানি বন্ধ না করলে আমাদের আন্দোলন চলতে থাকবে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের আবেদন— বঙ্গবন্ধুর গড়া এই চলচ্চিত্র শিল্পকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচান। ’
পরিচালক সমিতির সহ-সভাপতি সোহানুর রহমান সোহান বলেন, ‘এর আগে আমরা হিন্দি ছবি বন্ধের আন্দোলন করেছি। সফল হয়েছি। দেশের স্বার্থে আমাদের এই আন্দোলনও সফল হবে। ’
পরিচালক সমিতির মহাসচিব মুশফিকুর রহমান গুলজার বলেন, ‘আমরা আন্দোলনে নামলেই আশ্বাস দেওয়া হয়। আমরা থেমে গেলেই একটি কুচক্রী মহল ভারতীয় ছবি আমদানি করার পাঁয়তারা করে। আমরা বেঁচে থাকতে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রকে ধ্বংসের মুখে যেতে দেবো না। ’
মানববন্ধনে আরও ছিলেন চিত্রনায়ক ওমর সানি, অমিত হাসান, ড্যানি সিডাক, অভিনেত্রী অঞ্জনা, পরিচালক বদিউল আলম খোকন, শিল্পী চক্রবর্তী, সৈয়দ ওহিদুজ্জামান ডায়মন্ড, সাফিউদ্দিন সাফি, মঈন বিশ্বাস, বুলবুল বিশ্বাস প্রমুখ।
মানববন্ধনে অংশ নেয় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎপাদন ব্যবস্থাপনা সমিতি, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র গ্রাহক সংস্থা, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র নৃত্য পরিচালক সমিতি, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র অ্যাকশন গ্রুপ, সিডাব প্রভৃতি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৫ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০১৬
এসও/জেএইচ