চলে গেলেন বিশিষ্ট অভিনেতা, নাট্যকার ও মুক্তিযোদ্ধা ফরিদ আলী। সোমবার (২২ আগস্ট) বিকেল ৪টায় ঢাকার মিরপুরে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি (ইন্নালিল্লাহি...রাজিউন)।
দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিস, হৃদরোগ ও বার্ধক্যজনিত নানান রোগে ভুগছিলেন ফরিদ আলী। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় গত ১৯ আগস্ট তাকে হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। কিন্তু হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে চিরবিদায় নিলেন তিনি। তিনি স্ত্রী, চার ছেলে ও এক মেয়েমহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
পুরান ঢাকার ঠাটারি বাজারের বিসিসি রোডে ফরিদ আলীর বাড়ি আছে। তিনি ছিলেন বাংলাদেশ টেলিভিশনের প্রথম হাসির নাটক ‘ত্রি-রত্ন’র অভিনয়শিল্পী এবং তৃতীয় নাটকের নাট্যকার। শহীদুল আমীনের লেখা ‘কনে দেখা’র মাধ্যমে ১৯৬২ সালে মঞ্চ অভিনয়ে যাত্রা শুরু হয় তার। এরপর অসংখ্য মঞ্চনাটকে অভিনয় করেছেন তিনি। অধ্যাপক মুনীর চৌধুরীর লেখা ‘একতলা দোতলা’ নাটকের মাধ্যমে ১৯৬৪ সালে টিভিতে প্রথম দেখা যায় তাকে। ফরিদ আলীর লেখা প্রথম টিভি নাটক হলো ‘নবজন্ম’।
চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন ফরিদ আলী। ১৯৬৬ সালে আমজাদ হোসেনের ‘ধারাপাত’ ছবির মাধ্যমে রূপালি পর্দায় অভিষেক হয় তার। ‘সংগ্রাম’, ‘গুন্ডা’, ‘রংবাজ’, ‘ঘুড্ডি’, ‘তিতাস একটি নদীর নাম’, ‘সমাধান’, ‘জীবন তৃষ্ণা’, ‘শ্লোগান’, ‘চান্দা’, ‘দাগ’, অধিকার’সহ বিভিন্ন ছবিতে তার অভিনয়ে সবশ্রেণীর দর্শকই হেসেছে। তার মুখে ‘টাকা দেন দুবাই যাবো, বাংলাদেশে থাকবো না’ সংলাপটি তুমুল জনপ্রিয় হয়েছিলো।
ফরিদ আলীর পুত্র ইমরান আলী বাংলানিউজকে জানান, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ফরিদ আলীর চিকিৎসার ভার নিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। তার বাবার জানাজা আগামীকাল মঙ্গলবার হবে বলেও জানান তিনি।
ফরিদ আলীর মৃত্যুতে টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রাঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি শ্রদ্ধা জানাতে তার মরদেহ বিএফডিসিতে নিয়ে আসার জন্য পরিবারের কাছে অনুরোধ জানিয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০১৬
জেএইচ/এসও