ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিনোদন

শর্টফিল্ম ফোরাম একটি চেতনার নাম: তানভীর মোকাম্মেল

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২১ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০১৬
শর্টফিল্ম ফোরাম একটি চেতনার নাম: তানভীর মোকাম্মেল বাংলাদেশ শর্টফিল্ম ফোরামের সদস্যদের স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠান

'আশির দশকের প্রথম দিকে শুরু হয় বিকল্প ধারার চলচ্চিত্র তৈরির আন্দোলন। শুরুর দিকে অনেক কিছুই গ্রহণযোগ্যতা পেতো না।

এফডিসিতে এই দৈর্ঘ্যে চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য অনুমতি ছিলোনা। যারা বিকল্প ধারার চলচ্চিত্র নির্মাতাদের আর্থিক অবস্থাও তেমন ভালো ছিলো না। অনেক সময় সন্দেহ হতো সংগঠনটি টিকে থাকবে কি-না। এতো কিছুর মধ্যেও ৩ দশকে এসেছি, এটা আমাদের কাছে এক ধরনের প্রাপ্তি। ’ কথাগুলো বলেছেন চলচ্চিত্র নির্মাতা তানভীর মোকাম্মেল।  

স্বাধীন ধারার চলচ্চিত্র নির্মাতাদের সংগঠন 'বাংলাদেশ শর্ট ফিল্ম ফোরাম' ৩০ বছর পদার্পন করেছে। এ উপলক্ষে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালায় আয়োজন করা হয়েছে দুই দিনের অনুষ্ঠান। প্রথম দিন (২৬ আগস্ট) দুপুরে স্মৃতিচারণ পর্বে বক্তব্য রাখেন তানভীর মোকাম্মেল। স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘এখনও অনেক ধরনের প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। অনেকে বিকল্প ধারার চলচ্চিত্র নির্মাণ করছে। তবে অধিকাংশই ফোরামে যুক্ত হয়নি। আমার মতে, শর্টফিল্ম ফোরাম হলো একটি চেতনার নাম। '

সকালে অনুষ্ঠান উদ্বোধনের পর শুরু হয় বাংলাদেশ শর্টফিল্ম ফোরামের সদস্যদের নিয়ে স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠান। বাংলাদেশ শর্টফিল্ম ফোরামের প্রাক্তন সভাপতি ও চলচ্চিত্র নির্মাতা মোরশেদুল ইসলামের পাশাপাশি এতে বক্তব্য রাখেন তানভীর মোকাম্মেল, মানজারে হাসিন মুরাদ, জাহিদুর রহিম অঞ্জন,  বর্তমান সভাপতি অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন রাজু, জাহিরুল ইসলাম কচি ও বাংলাদেশ শর্টফিল্ম ফোরামের প্রবীণ সদস্যরা।  

অনুষ্ঠানে মানজারে হাসিন মুরাদ বলেন, ‘আমি আর মোরশেদ একটি অফিস থেকে দিনের শুরুতে ক্যামেরা চুরি করে কাজ করে আবার দিয়ে আসতাম। এভাবে আমরা শর্টফিল্ম তৈরি করার চেষ্টা করেছি। সে সময় শর্টফিল্ম তৈরির যোদ্ধারা মিলে মিছিল করে স্লোগান দিয়ে সেই কাজগুলো করার অনুমতি আদায় করি। তরুণ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাতারা কোনো না কোনো ভাবে আমাদের কাছে দায়বদ্ধ। কিন্তু তারা আমাদের সঙ্গে কোনোভাবে যুক্ত থাকতে চায় না। ’

মোরশেদুল ইসলাম বলেন, “বিচ্ছিন্নভাবে চলচ্চিত্র আন্দোলন হয়েছে বিভিন্ন সময়ে। শুরুতে আমরা আশ্রয় নিলাম আলমগীর কবির ভাইয়ের কাছে। তিনি আমাদেরকে অনেক সাহস যোগাতেন। আমি তৈরি করি 'আগামী'। প্রথমে পাবলিক লাইব্রেরিতে চলচ্চিত্রটির প্রদর্শনী করি। এরপর সেই ছবিটি যায় দিল্লির একটি চলচ্চিত্র উৎসবে। সাব টাইটেল ছিলোনা বলে দেখানো সম্ভব হলো না। সে সময় স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে সাবটাইটেল রাখতে হলে ২০ হাজার টাকা লাগতো। খুব কষ্ট করে আজকের জায়গাটা প্রতিষ্ঠা করেছি আমরা। ”

এ কে এম জাকারিয়া বলেন, ‘ভালো প্রযুক্তি ছিলো না বলে তখন চলচ্চিত্র তৈরি করে দেশের বাইরের কোনো উৎসবে পাঠানো কষ্টসাধ্য ছিলো। এখন এসব প্রতিবন্ধকতা নেই। অনেক সুবিধা থাকার পরও স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নিয়ে চিন্তা করা হচ্ছে না। ’

জহিরুল ইসলাম কচি বলেন, ‘এখন দেখছি আমাদের বৃত্ত ছোট হয়ে আসছে। ১৯৯৬ সালের দিকে প্রথম যুক্ত হই এ আন্দোলনের সঙ্গে। সেই থেকে শর্টফিল্ম ফোরামের জন্য শুধু সংগ্রাম করে আসছি। শর্টফিল্ম ফোরামের মাধ্যমে মানুষ ও সমাজের জন্য সংগ্রাম করে যাচ্ছি আমরা। ’

আমিনুল ইসলাম বাচ্চু বলেন, 'আমার শর্টফিল্ম ফোরামে আসা হলো পুলক গুপ্তের হাত ধরে। এরপর পুলক গুপ্তের একটি সিনেমায় ছোট একটি চরিত্রে অভিনয় করি। ’ 

বাংলাদেশ ফিল্ম সোসাইটির সাধারন সম্পাদন বেলায়েত হোসেন মামুন বলেন, '৩০ বছর একসঙ্গে থাকাটা খুব গৌরবের কথা। আমাদের ফিল্ম একটি সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। আগের মানুষেরাই রয়েছে। তরুণেরা যুক্ত হচ্ছে না। তবে এটা ভাবা ঠিক নয় যে, তরুণরা কাজ করছে না। দেশে পাঁচ শতাধিক তরুন চলচ্চিত্র কর্মী রয়েছেন। তবে এই ফোরামের কার্যক্রম সবার কাছে পৌঁছাতে হবে। '

এছাড়া বক্তব্য রাখেন কাওসার চৌধুরী, অস্ট্রেলিয়া থেকে শাহেনশাহ টুটুল ও  ইউরোপ থেকে মকবুল চৌধুরী ভাইবারের মাধ্যমে আলোচনায় যোগ দেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৮ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০১৬
টিএস/এসও 
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।