চলচ্চিত্রে মনোনিবেশ করেছেন। নাটকে তাই বিরতি।
ঈদের কাজগুলো নিয়ে বেশ উচ্ছ্বসিত তিনি। নিজের অভিনীত নাটক দেখেছেন? খোলাখুলি জবাব দিলেন নওশাবা। বললেন, ‘বিজ্ঞাপনের চাপে মূলত টিভিতে নাটক কম দেখি। আসলে টানা ঈদের কাজ করে বেশ ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। আমার মেয়ে অসু্স্থ থাকায় টিভি দেখার সময় পাচ্ছিনা। তবে ব্যস্ততার মাঝেও ইউটিউবে নাটক দেখি। বিশেষ করে নিজের কাজগুলো দেখি। এবারও দেখবো। ’
নওশাবা আরও বলেন, ‘আমার মতো অনেকেই এখন ব্যস্ততার জন্য ঘরে বসে টিভি দেখতে পারেন না। এজন্য ইউটিউবে নাটক অথবা টেলিফিল্ম দেখার প্রবণতা বেশি লক্ষ্য করা যায়। ঢাকার বাইরে গিয়ে দেখেছি- টং দোকান, বাস কিংবা পার্কে বসে কানে হেডফোন লাগিয়ে ইউটিউবে নাটক দেখছে লোকজন। আমাদের নাটকের দর্শক আছে, এটা আমি বিশ্বাস করি। ঈদে কিছু নাটক, টেলিছবি বিরতিহীনভাবে দেখানো হচ্ছে। এই উদ্যোগটি বেশ ভালো। এতে দর্শকদের টিভিতে নাটক দেখার আগ্রহ বাড়বে। ’
ঈদের সাতদিনের অনুষ্ঠানমালায় নওশাবা অভিনীত নাটক-টেলিছবির মধ্যে রয়েছে এটিএন বাংলায় ‘শত্রু’, জিটিভিতে ‘রুপকথার প্রজাপতি’ প্রভৃতি। ঈদ কেমন কাটলো নওশাবার? উত্তরে বললেন, ‘আমার মেয়ে প্রকৃতির ডেঙ্গুজ্বর হয়েছে। সেজন্য এবার ঈদের আমেজ বুঝে উঠতে পারিনি। হাসপাতাল-বাসা দৌঁড়াদৌঁড়ির মধ্যেই থাকতে হচ্ছে। ঈদে ঢাকার বাইরে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিলো। প্রকৃতি সুস্থ হলে দু’ একদিনের মধ্যেই মা-মেয়ে মিলে প্রকৃতি দেখতে বের হবো। আমরা দুজনই প্রকৃতিপ্রেমী। ’
ঈদের কাজের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে নওশাবা বললেন, “আমার পছন্দের কয়েকজন গুণী শিল্পীর সঙ্গে কাজ করেছি। আমি ভাবতেও পারিনি, তারা সবাই আমাকে মিস করে। সকাল আহমেদের ‘শুধু তোমার জন্য’ নাটকে তৌকির আহমেদের সঙ্গে অভিনয় করেছি। দীর্ঘ পাঁচ বছর আগে ‘সুরঞ্জনা’য় আমার সহশিল্পী ছিলেন তিনি। এতোদিন পরেও তিনি আমাকে মনে রেখেছেন। তিনি আমাকে বললেন, ‘এতোদিন কোথায় লুকিয়ে ছিলে নওশাবা”।
‘শত্রু’ নামে একটি ধারাবাহিকে মোশাররফ করিমের সঙ্গে দুই বছর পর কাজ করলেন নওশাবা। সবশেষ ‘সিকান্দার বক্স’- অভিনয় করেছিলেন তারা। শুটিংয়ের প্রথম দিন মোশাররফ নওশাবাকে বললেন, ‘কোথায় পালিয়ে ছিলি নওশাবা? তোর মতো অভিনেত্রী যদি পালিয়ে থাকে তবে এই ইন্ডাষ্ট্রির কি হবে বল?’
নওশাবা সম্পর্কে সজলের সাম্প্রতিক মন্তব্য, ‘তুই তো ডুমুরের ফুল’। গুণী সহশিল্পীদের এমন প্রশংসায় উদ্যম খুঁজে পান নওশাবা। কাজের প্রতি দায়িত্ববোধও বাড়ে। তিনি বলেন, ‘প্রিয় মানুষগুলো যখন আমাকে এভাবে বলেছেন, তখন মনে হয়েছে আসলেই আমার নিয়মিত কাজ করা উচিত। ’
অন্যের অভিনয় কতটা উপভোগ করেন নওশাবা? জবাবটা এরকম- ‘সময় পেলে সবার অভিনয় দেখার চেষ্টা করি। আসলে আমরা অন্যের কাজ দেখে শুধু সমালোচনাই করতে জানি। প্রশংসা করার চর্চাও থাকতে হবে। ’
ঈদ নাটকগুলোর প্রস্তুতি সম্পর্কে নওশাবা বললেন, ‘অভিনয়শিল্পীদের উচিত যে কোনো চরিত্রে ঢোকার আগে প্রস্তুতি নেওয়া। আমিও তার ব্যতিক্রম নই। এবার অনেক গুছিয়ে কাজগুলো করেছি। ভালো কিছু গল্পে কাজ করেছি। তবে আমরা এখন সেভাবে প্রস্তুতি নেওয়ার সময় পাই না। কারণ চ্যানেলের চাঁপে পরিচালকেরা দুই একদিনের মধ্যে নাটকের কাজ শেষ করেন। এখন শুধু ‘মার মার কাট কাট’ভাবে ফুটেজ নামানোর প্রতিযোগীতা। এছাড়া শুটিংয়ের একদিন আগে স্ক্রিপ্ট হাতে পেলে কিভাবে সেই চরিত্রটি ফুটিয়ে তোলা সম্ভব! এই অল্প সময়ের মধ্যে নিজেকে ভালো অভিনেত্রী হিসেবে প্রমাণ করার পরীক্ষাটাও বেশ কষ্টসাধ্য।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৬
জেএমএস/এসও