ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিনোদন

‘৩০ বছর পর পদাবলি কীর্তনের অ্যালবাম করেছি’

জান্নাতুল মাওয়া, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১৬
‘৩০ বছর পর পদাবলি কীর্তনের অ্যালবাম করেছি’ কিরণ চন্দ্র রায়

বাঙালি সংস্কৃতির প্রাচীন গানের ধারা পদাবলি কীর্তন নিয়ে একক অ্যালবাম সাজালেন লোকগানের জনপ্রিয় শিল্পী কিরণ চন্দ্র রায়। এর নাম রাখা হয়েছে ‘মেঘযামিনী’।

এটি প্রকাশ করছে বেঙ্গল ফাউন্ডেশন।

অ্যালবামটির মোড়ক উন্মোচন করা হবে শনিবার (২৯ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টায়। ঢাকার ফার্মগেট সংলগ্ন ডেইলি স্টার-বেঙ্গল আর্টস গ্যালারিতে এর মোড়ক খুলবেন সাংবাদিক ও কবি আবুল মোমেন। অনুষ্ঠানে গান গাইবেন কিরণ চন্দ্র রায়। ‘মেঘ যামিনী’ অ্যালবাম নিয়ে বাংলানিউজের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি।

বাংলানিউজ: ‘মেঘ যামিনী’তে কোন কোন গীতিকবির গান রয়েছে?
কিরণ চন্দ্র রায়:
প্রায় বছরখানেক ধরে গানগুলো নিয়ে গবেষণা করে রেকর্ডিংয়ে নেমেছি। এখানে বিভিন্ন পদাবলি গীতিকবির গান রয়েছে। যেমন- বিদ্যাপতি, গোবিন্দ দাস, দ্বিজচণ্ডী দাস, জ্ঞান দাস, বলরাম দাস ও যদুর লেখা গান রয়েছে এতে। অ্যালবামটির যন্ত্রানুষঙ্গ পরিচালনা করেছেন দূর্বাদল চট্টোপাধ্যায়।

বাংলানিউজ: এ অ্যালবাম তো গত জুনে বের হওয়ার কথা শুনেছিলাম...
কিরণ চন্দ্র:
জুন মাসের আগেই অবশ্য গানগুলোর রেকর্ডিং শেষ করেছিলাম। কিন্তু অ্যালবামের প্রচ্ছদ ও মুদ্রণসহ বিভিন্ন কাজে কয়েক মাস দেরি হয়ে গেলো।

বাংলানিউজ: কীর্তন নিয়ে আগে অ্যালবাম করেছেন?
কিরণ চন্দ্র:
প্রায় ৩০ বছর আগে কীর্তন নিয়ে একটি অ্যালবাম করেছিলাম। এতোদিন পর এসে আবারও প্রাচীন ভক্তিগীতি নিয়ে কাজ করতে পেরে খুবই আনন্দিত আমি। বাংলা গানের মূল শেকড় ও আদিমতম রুপ হলো পদাবলি কীর্তন। মনের তাগিদেই অ্যালবামটি নিয়ে এগিয়েছি। এ ছাড়া বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক লুভা নাহিদ চৌধুরীর উৎসাহ পেয়েছি। হারিয়ে যাওয়া পদাবলি কীর্তন শ্রোতাদেরকে উপহার দিতে যাচ্ছি। এ নিয়ে আমি আশাবাদী।

বাংলানিউজ: বর্তমান প্রজন্মের মধ্যে পদাবলি কীর্তন নিয়ে আগ্রহ দেখেন?
কিরণ চন্দ্র:
প্রকাশনার পর থেকেই সবার আগ্রহ টের পাওয়া যাবে। বর্তমান প্রজন্মকে যদি পদাবলি কীর্তন না টানে তাহলে বাংলা গানের উৎকর্ষতা বাড়বে না। তাই অবশ্যই এ ঘরানার গানগুলো চর্চা করা উচিত সবারই।

বাংলানিউজ: আপনি মূলত লোকজ আঙ্গিকের গান করেন। পহেলা বৈশাখ ছাড়া আপনাদের সারাবছর তেমন মূল্যায়ন হয় না বলে মন্তব্য অনেকের। এ ক্ষেত্রে কোনো আক্ষেপ আছে?
কিরণ চন্দ্র:
এই ধারণা সঠিক নয়। লোকজ গানের মূল্যায়ন রয়েছে সারাবছর। পহেলা বৈশাখ বাংলা বছরের প্রথম দিন, এজন্যই বাংলার মাটির গানগুলো তখন বেশি প্রাধান্য পায়। তবে পৃষ্ঠপোষকদের লোকজ গানের বিষয়ে আরও যত্নবান হওয়া উচিত।

বাংলানিউজ: দেশীয় লোকসংগীতের বর্তমান অবস্থাকে কীভাবে দেখেন?
কিরণ চন্দ্র:
বাংলা লোকসংগীতের প্রভাব ও প্রতাপ এ দেশে সবসময় থাকবে। মনের টান আর অজান্তেই হোক, এদেশের মানুষ বাংলা গানের প্রতি দূর্বল। তবে লোকসংগীতের উৎকর্ষে অন্য ঘরানার শিল্পীদেরও এগিয়ে আসা উচিত। যেমন আধুনিক গানের শিল্পীদের অ্যালবামে যদি দু’একটি লোকসংগীত না থাকে তাহলে তা বাজারমূল্য পায় না।

বাংলানিউজ: টিভিতে সরাসরি সংগীতানুষ্ঠান নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া শোনা যায়। অনেকের মন্তব্য- সুরে থাকে না শিল্পীদের পরিবেশনা। আপনার মন্তব্য কী?
কিরণ চন্দ্র:
অনেকটা বাণিজ্যিকীকরণের কাজেই বিভিন্ন টেলিভিশনে সরাসরি সংগীতানুষ্ঠান প্রচার হচ্ছে। এজন্য নতুন মুখের জৌলুস দেখে শিল্পীদের পর্দায় উপস্থাপন করা হয়। এতে গানের মূল্যায়ন কতোটুকু হয় তা আমার জানা নেই। এটা ঠিক অনেকের পরিবেশনায় বেশ ভুল-ত্রুটি চোখে পড়ে। কিন্তু গণহারে বলা উচিত নয়। এখনও অনেক প্রতিভাবান শিল্পী রয়েছেন। সবার সম্মিলিত প্রয়াসেই আমাদের বাংলা গান টিকে আছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১৬
জেএমএস/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।