অভিযোগ উঠেছে, এ গানের সুর হুবহু নকল করে বলিউডের মুক্তি প্রতীক্ষিত ‘ওকে জানু’ ছবির জন্য ‘তু জো নাহি’ শিরোনামের একটি গান তৈরি করেছেন অস্কারজয়ী সুরস্রষ্টা এ আর রাহমান। গান চুরির খবরটি বাংলাদেশের বেশকিছু সংবাদমাধ্যম ঢালাওভাবে প্রচার করছে।
২০০৩ সালে প্রকাশিত ‘তুমি নেই বলে’ গানের গীতিকার ও সুরকার প্রীতম আহমেদ সোমবার (২ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ফেসবুকে জানালেন, তার এক সাংবাদিক বন্ধু ইনবক্সে ‘তু জো নাহি’ গানের লিংক দিয়েছেন। স্বাভাবিকভাবেই নিজের সৃষ্টিকর্ম অন্যের নামে দেখে তিনি মর্মাহত। নিজের বাজানো বেহালার সুরও তিনি অবিকল শুনলেন হিন্দি গানটিতে!
প্রীতম আহমেদের রেশ ধরে আসিফ আকবরও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার একটি স্ট্যাটাসে বিষয়টি উল্লেখ করেছেন। তার এক বন্ধুর পছন্দের গান ‘তু জো নাহি’। তার মাধ্যমেই তিনি জানতে পেরেছেন ‘তুমি নেই বলে’ গানের সুর নকল করা হয়েছে।
কিন্তু আমার অভিজ্ঞতা বলে, কিছু অচেনা শিল্পী যে কোনো ভাষার জনপ্রিয় গানের সুরে হিন্দি কথা বসিয়ে গেয়ে ইউটিউবে ছেড়ে দেন। ‘ওকে জানু’র বেলায়ও এমনই হয়েছে।
একই গান গত নভেম্বরে শাহরুখ খান ও আলিয়া ভাট অভিনীত ‘ডিয়ার জিন্দেগি’ ছবির কথা বলে ইউটিউবে ছাড়া হয়। এ ক্ষেত্রে গীতিকারের নাম কাওসার মুনির আর সুরকারের নাম উল্লেখ করা হয়েছে অমিত ত্রিবেদি। আসল কথা হলো, এগুলো যদি অফিসিয়াল গান হতো তাহলে সংশ্লিষ্ট নির্মাতা তা সরিয়ে নেওয়ার জন্য ইউটিউব কর্তৃপক্ষকে বলতেন।
গান ফাঁস হওয়ার ঘটনা যে নেই তা নয়। যেমন ‘অ্যায় দিল হ্যায় মুশকিল’ ছবির পুরো গান বের করার আগেই তা ফাঁস হয়ে যাওয়ায় নির্মাতা করণ জোহর ইউটিউবকে রিপোর্ট দিয়ে তা সরিয়ে ফেলার ব্যবস্থা করে সফল হয়েছেন।
‘ওকে জানু’ ছবির উইকিপিডিয়া পেজে গেলে লক্ষ্য করবেন মাত্র তিনটি গানের কথা উল্লেখ আছে সাউন্ডট্র্যাক বিভাগে। এগুলো হলো ‘ওকে জানু’, ‘দ্য হাম্মা সং’ ও ‘এনা সোনা’। এর মধ্যে ‘দ্য হাম্মা সং’ রিমিক্স গান। বাকি দুটির গীতিকার গুলজার।
কাউকে হেয় করা বা সমালোচনা নয়, এ লেখার উদ্দেশ্য আসিফ আকবর ও প্রীতম আহমেদের মধ্যে যারা বিভ্রান্তি ছড়িয়েছেন তাদের কাছ থেকে সাবধানতা অবলম্বন জরুরি। ‘তুমি নেই বলে’ গান ও এর সুর-সংগীত আসিফ আকবর ও প্রীতম আহমেদের কথাই বলবে, যতোই তা হিন্দি কিংবা অন্য ভাষায় গাওয়া হোক।
সবচেয়ে বড় কথা, স্রষ্টা ও সৃষ্টির মৃত্যু হয় না। গীতিকার, সুরকার ও কণ্ঠশিল্পীরা নিজেদের সৃষ্টিকর্ম বাংলাদেশ সরকারের কপিরাইটে রেজিস্টার সার্টিফাইড করে থাকেন। কিন্তু সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় তথা সরকারের উচিত তাদের শিল্পীদের মেধা সুরক্ষায় কার্যকর ভূমিকা রাখা।
বাংলাদেশ সময়: ০২১৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৩, ২০১৭
জেএইচ