বাংলানিউজ: ৬-৭ বছর ধরে অভিনয় করছেন। অভিজ্ঞতা কেমন?
সাদিকা স্বর্ণা: হতে পারে মিডিয়ায় আমার কাজের বয়স ৬-৭ বছর, আমার কাছে মনে হয় না এটি দীর্ঘ কোনো সময়।
বাংলানিউজ: অভিনয় করছেন, লিখছেন আঁকছেন…তারপর?
স্বর্ণা: আমার পরিনত সময়ে (বয়স নয়!) আমি আসলে কি করবো সেটি এখনও সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি। আমি যেটা করি, সেটা ভেতর থেকে করি। সেটা লেখালেখি হোক, আঁকাআঁকি হোক বা সেটা অভিনয়-ই হোক।
বাংলানিউজ: মিডিয়ায় কাজের পরিবেশ কেমন?
স্বর্ণা: আমি দেখি অন্যভাবে। যেমন আমি অভিনয় করি, আমার কাজের অংশ অভিনয়টুকু সুন্দরভাবে করা। এখানে মূল করিগর, পরিচালক বা নাটকের রচয়িতা। একা একা আমার পক্ষে ভালো কিছু করা সম্ভব নয়, এটি সম্মিলিত প্রচেষ্টার জায়গা।
বাংলানিউজ: দেশ বা সমাজের কাছে শিল্পীর কিছু দায়-দায়িত্ব থাকে…
স্বর্ণা: শিল্পী নয়, মানুষ হিসেবে আমি কিভাবে দেখি সমাজকে, এটিই বিবেচ্য আমার কাছে। আর শিল্পী হিসেবে দায়বদ্ধতার কথা যদি বলেন, তাহলে বলবো, শিল্পের কাজই তো করছি। তথ্যের বাইরে গিয়ে অভিনয়, আঁকাআঁকি বা লেখালেখিতে মানুষের ভেতরের আবেগকে শিল্পকর্মে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করছি।
বাংলানিউজ: এখনকার গান-নাটক-সিনেমা কেমন?
স্বর্ণা: ঘাটতি থাকলেই এগিয়ে যাওয়ার তাড়া থাকে। আমাদের গান-নাটক-সিনেমায় তেমন কিছু ঘাটতি আছে। আবার ভালো কাজও হচ্ছে। আমি নিরাশ নই। আমি বেশ আশাবাদী।
বাংলানিউজ: টেলিভিশনে লোকজন নাটক দেখছেন না। ইউটিউবে দর্শক বেড়েছে। সব মিলিয়ে আপনার কি মনে হয়?
স্বর্ণা: মোট জনসংখ্যার কতো ভাগ ইন্টারনেটে নাটক দেখেন? এখনও ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর বাইরে একটি বিশাল দর্শকশ্রেণী আছে যারা টিভিতেই নাটক উপভোগ করেন। তাদেরকে অগ্রাহ্য বা অবহেলা করার উপায় নেই। আমার মনে হয়, তাদের সাইকোলজি নিয়েও কাজ করা উচিত। ফেসবুকের জনপ্রিয়তার কারণে মনে হতে পারে যে, ইন্টারনেটেই সবাই ব্যস্ত, সত্যি কি তাই?
বাংলানিউজ: অভিনেত্রী হিসেবে আপনি কেমন? নিজের মূল্যায়ণ করুন।
স্বর্ণা: ভালো অভিনয় করার মতো আরও সময় আছে। ব্যক্তিগতভাবে প্রায়ই মনে হয়, ভালো কাজ বাছাই করার আমি কেউ নেই, আমাকেও অনেকের বাছাই করতে হয়। আমি কতোটুকু যোগাযোগ রক্ষা করতে পারছি সেটার ওপরও অনেক কিছু নির্ভর করে। আমি আসলে ইন্ট্রোভার্ট মানুষ। আমি চাইলেই দারুণ দারুণ চরিত্র পাচ্ছি না। এ কারণে অভিনয়ের তৃষ্ণা রয়েই যায়।
বাংলানিউজ: কোন কোন সীমাবদ্ধতার মুখোমুখি হতে হয়?
স্বর্ণা: আমাদের নির্মাতারা অনেক ধরনের সীমাবদ্ধতার মধ্যে দিয়ে কাজ করেন। প্রযোজকের শর্ত, চ্যানেলের শর্ত, অল্প বাজেট, এসবের মধ্যে দিয়ে আমাদেরকেও কম সময়ে কাজ তুলে দিতে হয়। এসব বিষয়গুলোর কারণে ইচ্ছে থাকা সত্বেও মনের মতো করে কাজ শেষ করা যায় না।
বাংলানিউজ: কাজের অনুপ্রেরণা কোথায় পান?
স্বর্ণা: আমি প্রচণ্ড ক্রাইসিসে পড়লে অনুপ্রেরণা পাই। আমি খুব বেশি আত্ম-নিয়ন্ত্রিত মানুষ। ব্যথা-যন্ত্রনার চূড়ান্ত পর্যায়ে গেলে সেটাকে শক্তিতে রূপান্তর করি, এর ইতিবাচক প্রতিফলন ঘটাই কাজে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২২ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০১৭
এসও